হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিদিনই হিমেল বাতাসের ঝাপ্টায় নামছে তাপমাত্রার পারদ। টান পড়ছে সোয়েটার-চাদরে। তবে মনমতো ঠাণ্ডা এখনও গায়ে লাগেনি। সকলেই শীতের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। বাংলাদেশে শীত এখন পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডারের পাতায় ভর করে আসে না। আসে আপন খেয়ালে। শীত বাংলাদেশে আসে শিশিরের শব্দের মতো। পৃথিবীর পূর্ব-গোলার্ধে বাংলাদেশের অবস্থান। এর উপর দিয়ে চলে গেছে কর্কটক্রান্তি রেখা। ফলে পুরোপুরি শীতের দেখা পাওয়া যায় না এখানে, যেমনটি পেয়ে থাকে উত্তর প্রান্তের তুষার ও বরফাবৃত মানুষ।
তারপরেও টের পাওয়া যাচ্ছে বাতাসে হিমেল টান, রোদের মিষ্টি পরশ। অনুভব করা যাচ্ছে, আমাদের আশেপাশে উত্তুরে হাওয়া ঢুকতে শুরু করেছে। বাতাসে জলীয় বাষ্প নেই। নতুন করে জলীয় বাষ্প তৈরি না হলে তাপমাত্রা নামবে অতি দ্রুত। তবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রকৃত শীত পড়বে বলে আবহাওয়ার নানা সূত্র জানিয়েছে।
শীতের স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য ফুটে উঠছে সরিষা ক্ষেতে। মাঠের পর মাঠ জুড়ে ফুটে থাকা হলুদ সরিষার ফুল যেন বিছিয়ে রাখে হলুদ ফুলেল চাদর। আর সেই ফুলকলিদের উপর উড়ে চলা রঙ্গিন প্রজাপতি আর মৌমাছিদের মেলা মন হরণ করে।
চোখ মেললেই দেখা যাচ্ছে, মটরশুঁটি আর সবুজ ঘাসের ডগায় টলমল করছে শিশির বিন্দু। সকালের রোদের আলোকচ্ছটার নানা রঙ ছড়াচ্ছে হীরক দ্যুতির মতো।
নস্টালজিয়ার কুয়াশা মাখিয়ে ফিরে আসছে শৈশবের শীতের এক আলাদা অনুভূতি। মনে পড়ছে, কুয়াশায় আচ্ছন্ন শীতের সকাল! মুখ খুললেই ধোঁয়া বের হওয়া দেখে অবাক হয়ে যাওয়া। ভাপা, চিতুই, পাটিসাপটা, পুলি, কুলি নানা ধরনের পিঠা। ঘুম ভাঙ্গলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে মন না চাওয়া। তুলে রাখা তোরঙ্গের লেপ কাঁথা কম্বলের সে এক দারুণ মজা। রোদে দেওয়া ওম। তুলোর ফাঁকে ঢুকে থাকা রোদের গন্ধ। সন্ধ্যাকাশে দিগন্ত জুড়ে সারি বেঁধে উড়ে চলা অতিথি পাখির দল। কিচির-মিচির শব্দ। শীতের অনন্য প্রকৃতি।