হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিকূল পরিবেশ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সবজি চাষিরা। এবার তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে ব্যাপকভাবে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। সোনালি স্বপ্ন নিয়ে রাত-দিন ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণিরা। এলাকার অধিকাংশ আবাদি-অনাবাদি জমিতে এটি চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।
আর এমনই ব্যাপক টমেটোর আবাদ করা হয়েছে বাগেরহাটের চিতলমারীতে। স্থানীয় কৃষি অফিস ও এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ আবাদি-অনাবাদি জমি ও চিংড়ি ঘেরের পাড়ে এ বছর ব্যাপকভাবে আগাম টমেটোর চাষ করা হয়েছে।
বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেতে বাম্পার ফলন লক্ষণীয় হওয়ায় চাষিরা লাভের আশা করছেন। আশানুরূপ ফলন ও বাজার দর ভালো থাকলে চাষিরা তাদের অতীতের লোকসান কাটিয়ে লাভের অংশ ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সুরশাইল ওয়াপদা রাস্তার পাশে শান্তি রঞ্জন মণ্ডলের চিংড়ি ঘেরের পাড় জুড়ে দৃষ্টিনন্দন টমেটো গাছে প্রচুর ফলন ধরেছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের এ টমেটোর থোকায় নুইয়ে পড়েছে ডালপালা। শান্তি রঞ্জনের পুত্র সজল মণ্ডল জানান, ইতিমধ্যে কিছু গাছে টমেটো পাকতে শুরু করেছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই টমেটো বাজারে পুরোপুরি সরবরাহ করা যাবে। তবে বাজার দর কী হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। বর্তমানে বাজারে কাঁচা টমেটোরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পাকা টমেটো এখনো বাজারে তেমন না আসায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এখানে টমেটো কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। দেশের নানা স্থানে ট্রাকযোগে চালান হচ্ছে এসব টমেটো। ঢাকার ব্যবসায়ী হারুণ শেখ জানান, এলাকার সবজি ও টমেটো ব্যাপক চাহিদা রয়েছে রাজধানীতে। বর্তমানে বাজার দর ভালো থাকায় চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। পুরো মৌসুমে এখান থেকে শত শত ট্রাক টমেটো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়ে থাকে। উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামের নির্মল মণ্ডল ১ বিঘা, অসিম মণ্ডল ২ বিঘা, গীতা বৈরাগী ১৫ কাঠা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। তাদের অনেকে আশা প্রকাশ করে জানান, এ বছর অতিবৃষ্টিতে করলা-শসাসহ অন্যান্য সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলেও টমেটোর বাম্পার ফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজার দর ভালো থাকলে এসব চাষিরা তাদের অতীতের লোকসান কাটিয়ে লাভের অংশ ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হাসান জানান, এ বছর উপজেলায় মোট ৬০০ হেক্টর জমিতে হাইটম, বিজলী, লাভলী ও বিউটিফুল জাতের উচ্চ ফলনশীল টমেটো আবাদ করা হয়েছে। এখানকার চাষিরা নানা প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে সংগ্রাম করে দারুণ টমেটো ফলিয়েছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও বাজার দর ভালো থাকলে চাষিরা আশানুরূপ লাভবান হবেন। সার্বিকভাবে কৃষি অফিস থেকে খেতের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।