ঢাকা ০২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৭৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে অনতিবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে রেজুলেশন পাস হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সদস্য দেশগুলোর উপস্থিতিতে ১৬ নভেম্বর উন্মুক্ত ভোটে এ রেজুলেশন গৃহীত হয়। ১৩৫টি দেশ এই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় ১০টি দেশ এবং ভোট প্রদানে বিরত থাকে ২৬টি দেশ। ওআইসির পক্ষে সৌদি আরব এই রেজুলেশন উত্থাপন করে। খবর ইউএসএ নিউজের।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটি আহুত এই সভায় রেজুলেশন ভোটে যাওয়ার আগে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য দেয় সৌদি আরব। সৌদি আরবের বক্তব্যে সমর্থন করে রেজুলেশনের পক্ষে ভোটদানের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সোমালিয়া, মিসর ও বাংলাদেশ। ভোট গ্রহণের আগে ও পরে দেয়া বক্তব্যে সব সদস্য দেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা উল্লেখ করে।

তৃতীয় কমিটিতে গৃহীত এই রেজুলেশন আগামী ডিসেম্বর মাসে সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে উপস্থাপিত হবে। এই রেজুলেশনে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের একজন বিশেষ দূত নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়। রেজুলেশনটিতে রাখাইন প্রদেশে অনতিবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, সবার জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন প্রদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে জোর দেয়া হয়। সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর জাতিসংঘ মহাসচিব একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটি গৃহীত এই রেজুলেশন মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবাধিকারের পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থনেরই প্রতিফলন।

প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা পরিষদ গত ৬ নভেম্বর মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করে। এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ নিরাপত্তা পরিষদের একটি উন্মুক্ত সেশনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির ওপর বিবৃতি দেয়। এরপর ১৩ অক্টোবর মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতিতে ‘আরিয়া ফর্মুলা’ মিটিংয়ে বসে নিরাপত্তা পরিষদ। ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের ইকোসক চেম্বারে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে’ জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক্ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আয়োজনে এবং ‘গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংগঠন’ গ্লোবাল সেন্টার ফর রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট এর সহযোগিতায় ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা: শুধু নিন্দা জ্ঞাপনই নয় প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে অনতিবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে রেজুলেশন পাস হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সদস্য দেশগুলোর উপস্থিতিতে ১৬ নভেম্বর উন্মুক্ত ভোটে এ রেজুলেশন গৃহীত হয়। ১৩৫টি দেশ এই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় ১০টি দেশ এবং ভোট প্রদানে বিরত থাকে ২৬টি দেশ। ওআইসির পক্ষে সৌদি আরব এই রেজুলেশন উত্থাপন করে। খবর ইউএসএ নিউজের।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটি আহুত এই সভায় রেজুলেশন ভোটে যাওয়ার আগে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য দেয় সৌদি আরব। সৌদি আরবের বক্তব্যে সমর্থন করে রেজুলেশনের পক্ষে ভোটদানের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সোমালিয়া, মিসর ও বাংলাদেশ। ভোট গ্রহণের আগে ও পরে দেয়া বক্তব্যে সব সদস্য দেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা উল্লেখ করে।

তৃতীয় কমিটিতে গৃহীত এই রেজুলেশন আগামী ডিসেম্বর মাসে সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে উপস্থাপিত হবে। এই রেজুলেশনে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের একজন বিশেষ দূত নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়। রেজুলেশনটিতে রাখাইন প্রদেশে অনতিবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, সবার জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন প্রদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে জোর দেয়া হয়। সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর জাতিসংঘ মহাসচিব একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটি গৃহীত এই রেজুলেশন মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবাধিকারের পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থনেরই প্রতিফলন।

প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা পরিষদ গত ৬ নভেম্বর মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করে। এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ নিরাপত্তা পরিষদের একটি উন্মুক্ত সেশনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির ওপর বিবৃতি দেয়। এরপর ১৩ অক্টোবর মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতিতে ‘আরিয়া ফর্মুলা’ মিটিংয়ে বসে নিরাপত্তা পরিষদ। ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের ইকোসক চেম্বারে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে’ জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক্ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আয়োজনে এবং ‘গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংগঠন’ গ্লোবাল সেন্টার ফর রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট এর সহযোগিতায় ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা: শুধু নিন্দা জ্ঞাপনই নয় প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।