ঢাকা ০১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উখিয়ার সীমান্তে অপেক্ষায় আরও ৭০০ রোহিঙ্গা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৭৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কক্সবাজারের উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় গতকাল রাতে প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে সেখানে দেড় হাজারের মতো রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৮০০ জনকে গতকাল উখিয়ার বালুখালীর বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠায় বিজিবি।

উখিয়ার সীমান্তের দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান হাওর বার্তাকে বলেন, শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের কারও কাছে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকসহ অবৈধ মালামাল রয়েছে কি না, তা যাচাই শেষে ৮০০ জনকে ঢুকতে দিয়েছেন তাঁরা। ইউএনএইচসিআর, আইওএম, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থা ওই রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। পরে প্রত্যেককে তল্লাশি করে বিজিবি। যারা এখনো শূন্যরেখায় অবস্থান করছে, তাদের বিষয়ে সোমবার (আজ) সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ৬ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা।

এদিকে টেকনাফের নাফ নদীতে গতকালও রোহিঙ্গাদের ১১টি ভেলা ভাসতে দেখা যায়। উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ ও নয়াপাড়া এলাকায় নদীর তীরের বেশ কিছুটা দূরে এসব ভেলায় প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা ভাসছিল। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ভেলা তীরে ভেড়েনি।

এর আগে গত বুধবার থেকে রোববার পর্যন্ত পাঁচ দিনে মোট ১৬টি ভেলায় নাফ নদী পেরিয়ে ৮৩৬ রোহিঙ্গা টেকনাফে ঢুকেছে।

টেকনাফ ২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় দিনের বেলায় ভেলা ভাসিয়ে রোহিঙ্গারা টেকনাফে আসছে।

শাহপরীর দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিনে রোহিঙ্গা আসা প্রায় বন্ধ থাকলেও রাতে নৌকায় করে রোহিঙ্গারা আসছে। ওই ১১টি ভেলায় থাকা রোহিঙ্গারা রাতে সীমান্তের কোনো না কোনো এলাকা দিয়ে ঠিকই টেকনাফে ঢুকবে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় হাওর বার্তাকে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এখন রোহিঙ্গাদের ওপর তেমন কোনো হামলা হচ্ছে না। এর পরও সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার পেছনে কিছু বিদেশি সংস্থা এবং এনজিওর ইন্ধন থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া যেসব রোহিঙ্গা আগে বাংলাদেশে এসেছে, তারা ফোন করে স্বজনদের এখানে আসতে বলছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এলে ত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়েও সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের সভাপতি মো. হারুন বলেন, রাখাইনের রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে এখন তীব্র খাদ্যসংকট চলছে। এ ছাড়া ভয়ভীতি তো রয়েছেই। এ কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে রোহিঙ্গারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

উখিয়ার সীমান্তে অপেক্ষায় আরও ৭০০ রোহিঙ্গা

আপডেট টাইম : ০১:০৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কক্সবাজারের উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় গতকাল রাতে প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে সেখানে দেড় হাজারের মতো রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৮০০ জনকে গতকাল উখিয়ার বালুখালীর বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠায় বিজিবি।

উখিয়ার সীমান্তের দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান হাওর বার্তাকে বলেন, শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের কারও কাছে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকসহ অবৈধ মালামাল রয়েছে কি না, তা যাচাই শেষে ৮০০ জনকে ঢুকতে দিয়েছেন তাঁরা। ইউএনএইচসিআর, আইওএম, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থা ওই রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। পরে প্রত্যেককে তল্লাশি করে বিজিবি। যারা এখনো শূন্যরেখায় অবস্থান করছে, তাদের বিষয়ে সোমবার (আজ) সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ৬ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা।

এদিকে টেকনাফের নাফ নদীতে গতকালও রোহিঙ্গাদের ১১টি ভেলা ভাসতে দেখা যায়। উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ ও নয়াপাড়া এলাকায় নদীর তীরের বেশ কিছুটা দূরে এসব ভেলায় প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা ভাসছিল। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ভেলা তীরে ভেড়েনি।

এর আগে গত বুধবার থেকে রোববার পর্যন্ত পাঁচ দিনে মোট ১৬টি ভেলায় নাফ নদী পেরিয়ে ৮৩৬ রোহিঙ্গা টেকনাফে ঢুকেছে।

টেকনাফ ২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় দিনের বেলায় ভেলা ভাসিয়ে রোহিঙ্গারা টেকনাফে আসছে।

শাহপরীর দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিনে রোহিঙ্গা আসা প্রায় বন্ধ থাকলেও রাতে নৌকায় করে রোহিঙ্গারা আসছে। ওই ১১টি ভেলায় থাকা রোহিঙ্গারা রাতে সীমান্তের কোনো না কোনো এলাকা দিয়ে ঠিকই টেকনাফে ঢুকবে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় হাওর বার্তাকে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এখন রোহিঙ্গাদের ওপর তেমন কোনো হামলা হচ্ছে না। এর পরও সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার পেছনে কিছু বিদেশি সংস্থা এবং এনজিওর ইন্ধন থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া যেসব রোহিঙ্গা আগে বাংলাদেশে এসেছে, তারা ফোন করে স্বজনদের এখানে আসতে বলছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এলে ত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়েও সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের সভাপতি মো. হারুন বলেন, রাখাইনের রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে এখন তীব্র খাদ্যসংকট চলছে। এ ছাড়া ভয়ভীতি তো রয়েছেই। এ কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে রোহিঙ্গারা।