ঢাকা ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

রোহিঙ্গা এতিম শিশুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৮৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে জরীপ চালিয়ে এই পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন এতিম শিশু শনাক্ত করা হয়েছে।

এর মধ্যে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিনেই সনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮১৫ জন।

সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ধারণা করছেন এখনও যেভাবে এতিম শিশু সনাক্ত হচ্ছে- তাতে এ সংখ্যা কয়েকদিনের মধ্যে ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ কার্যক্রমের আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এদিকে এখনও রোহিঙ্গারা আসছে। গত ৮-১০ দিন ধরে গড়ে এক হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৬ লাখ ২৬ হাজার।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (কার্যক্রম) ও ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ প্রকল্পের সমন্বয়কারী সৈয়দা ফেরদাউস আখতার আজ বাসসকে বলেন, ‘আমরা ভাবছি এ মাসের মধ্যে এতিম রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করার কাজ শেষ করতে পারবো। ’

তবে রোহিঙ্গারা এখনও আসছে এই স্রোতে আরও বাড়লে প্রকল্পের কাজ কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। এতিমদের সংখ্যাও ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে- জানালেন ফেরদৌস আক্তার।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৮০ জন কর্মী ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে খুঁজে খুঁজে অনাথ শিশু সনাক্তকরণের দায়িত্ব পালন করছেন।

তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে শিশুর অভিভাবক ও মাঝিদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সনাক্তকরণের কাজটি করছেন। যারা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে, যারা শুধু বাবা হারিয়েছে, যারা প্রতিবন্ধী, আর যারা মা-বাবার খোঁজ পাচ্ছে না- এমন চারটি শ্রেণীতে এদের ভাগ করা হচ্ছে। শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু হিসেবে গণনা করে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

‘ইতোমধ্যে টেকনাফের ৫টি ক্যাম্পে সনাক্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে বড় দুইটি ক্যাম্প- কুতুপালং এবং বালুখালীতে। সনাক্ত হওয়া সকল এতিম শিশুকে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে পক্ষ থেকে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। ’ জানালেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রীতম কুমার চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্ত হওয়ার হার কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিদিন ৮-৯শ এতিম শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এ সংখ্যা ৪০ হাজার ক্রস করতে পারে। ’

এদিকে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদেরের সুরক্ষার জন্য আবাসস্থল ‘শিশুপল্লী’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে উখিয়ার নিবন্ধিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধুছড়া এলাকায় ২শ একর জমিও নির্ধারণ করা হয়েছে। অনাথ রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্ত করার কার্যক্রম শেষ হলে আগামী মাসে শিশুপল্লীর কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতায় খুন হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা দম্পতি। তাদের বেঁচে যাওয়া সন্তানরা আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এসব পিতৃ-মাতৃহীন শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ সুরক্ষা অঞ্চল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই বিশেষ অঞ্চলে বিশেষ যত্নে দেখভাল করা হবে এসব শিশুদের।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

রোহিঙ্গা এতিম শিশুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে

আপডেট টাইম : ০৫:৩১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে জরীপ চালিয়ে এই পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন এতিম শিশু শনাক্ত করা হয়েছে।

এর মধ্যে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিনেই সনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮১৫ জন।

সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ধারণা করছেন এখনও যেভাবে এতিম শিশু সনাক্ত হচ্ছে- তাতে এ সংখ্যা কয়েকদিনের মধ্যে ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ কার্যক্রমের আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এদিকে এখনও রোহিঙ্গারা আসছে। গত ৮-১০ দিন ধরে গড়ে এক হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৬ লাখ ২৬ হাজার।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (কার্যক্রম) ও ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল অরফান চাইল্ড’ প্রকল্পের সমন্বয়কারী সৈয়দা ফেরদাউস আখতার আজ বাসসকে বলেন, ‘আমরা ভাবছি এ মাসের মধ্যে এতিম রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করার কাজ শেষ করতে পারবো। ’

তবে রোহিঙ্গারা এখনও আসছে এই স্রোতে আরও বাড়লে প্রকল্পের কাজ কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। এতিমদের সংখ্যাও ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে- জানালেন ফেরদৌস আক্তার।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৮০ জন কর্মী ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে খুঁজে খুঁজে অনাথ শিশু সনাক্তকরণের দায়িত্ব পালন করছেন।

তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে শিশুর অভিভাবক ও মাঝিদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সনাক্তকরণের কাজটি করছেন। যারা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে, যারা শুধু বাবা হারিয়েছে, যারা প্রতিবন্ধী, আর যারা মা-বাবার খোঁজ পাচ্ছে না- এমন চারটি শ্রেণীতে এদের ভাগ করা হচ্ছে। শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু হিসেবে গণনা করে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

‘ইতোমধ্যে টেকনাফের ৫টি ক্যাম্পে সনাক্তকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে বড় দুইটি ক্যাম্প- কুতুপালং এবং বালুখালীতে। সনাক্ত হওয়া সকল এতিম শিশুকে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে পক্ষ থেকে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। ’ জানালেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রীতম কুমার চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্ত হওয়ার হার কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিদিন ৮-৯শ এতিম শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এ সংখ্যা ৪০ হাজার ক্রস করতে পারে। ’

এদিকে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদেরের সুরক্ষার জন্য আবাসস্থল ‘শিশুপল্লী’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে উখিয়ার নিবন্ধিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধুছড়া এলাকায় ২শ একর জমিও নির্ধারণ করা হয়েছে। অনাথ রোহিঙ্গা শিশুদের সনাক্ত করার কার্যক্রম শেষ হলে আগামী মাসে শিশুপল্লীর কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতায় খুন হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা দম্পতি। তাদের বেঁচে যাওয়া সন্তানরা আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এসব পিতৃ-মাতৃহীন শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ সুরক্ষা অঞ্চল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ওই বিশেষ অঞ্চলে বিশেষ যত্নে দেখভাল করা হবে এসব শিশুদের।