হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে সর্বশেষ সংঘাতে পালিয়ে আসা ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হবে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার।
স্থানীয় সময় আজ মিয়ানমারের কার্যত নেতা অং সান সু চির কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত ক্ষমতা চর্চা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে রাজ্যটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এই বিবৃতির জবাবে সু চির কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ যে সংকট পার করছে, তা কেবল দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে নিরসন করা সম্ভব।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে মিয়ানমার সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১৬ থেকে ১৭ নভেম্বর তার মিয়ানমার থাকার কথা রয়েছে।
এদিকে মাহমুদ আলীর সম্ভাব্য মিয়ানমার সফরের একদিন আগে বাংলাদেশ সফরে আসবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তার সফরের অন্যতম এজেন্ডা রোহিঙ্গা সংকট।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের ওই রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর গত ২৫ আগস্ট থেকে সোয়া ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। গত ১০ সপ্তাহে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে ওই সহিংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে চিহ্নিত করে এর সমালোচনা করে আসছে জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গা সংকটের অবসানে সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে একটি বিবৃতি (প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট) দেয়া হয়, যেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে যাতে সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বন্ধ করা হয়, মিয়ানমার সরকারের প্রতি সেই আহ্বান জানাচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ।
সেই সঙ্গে রাখাইনে বেসামরিক প্রশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে এবং মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকার ও দায় পূরণে মিয়ানমার সরকারকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।