হাওর বার্তা ডেস্কঃ আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ছয় সিটিতে যাওয়ার কথা ভাবছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর। সড়কপথে এসব সিটিতে সফর করে সারা দেশের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করাই মূল লক্ষ্য।
এ সময় যাত্রাপথে যেসব জেলা পড়বে সেগুলোতে এক ধরনের জনসংযোগও সেরে ফেলবেন খালেদা জিয়া।
এদিকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৮ নভেম্বর অনুমতি সাপেক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। অনুমতি পেলে এ সমাবেশেও খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখতে পারেন।
এছাড়া ২০ নভেম্বর বগুড়া বিএনপি তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কর্মসূচি নিয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানাবে তারা। সে অনুষ্ঠানেও তিনি যেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদের নেত্রী আরও যাবেন। গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করবেন। পথে পথে যাবেন, এলাকায় এলাকায় যাবেন, বিভাগে বিভাগে যাবেন, শহরে শহরে যাবেন, কী রকমের জোয়ার ওঠে আপনারা তখন টের পাবেন।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে চার দিনের কর্মসূচিতে জনতার ঢল নেমেছিল। এতে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার নিজের মনোবলও বেশ চাঙ্গা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন করতে গিয়ে সরকারের প্রচারণার কারণে বিএনপি সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল- তা দূর হয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার যাত্রাপথে শান্তিপূর্ণ জনতার ঢল দেশীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছে। এতে করে বিএনপির ওপর তাদের আস্থার লেভেল এখন উঁচুতে।
দলটির নেতারা জানান, এ সফরের যাত্রাপথে ফেনীতে হামলা হলেও হাইকমান্ডের নির্দেশে শান্ত ছিল দলটির নেতাকর্মীরা।
তারা মনে করেন, একটি কর্মসূচি পালন করে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে সামনের কর্মসূচি পালন কঠিন হবে। নেতারা আশা করেন, খালেদা জিয়া ৬ সিটি সফরে বের হলেও জনতার ঢল নামবে। ফলে কর্মীদের চাঙ্গা হওয়ার পাশাপাশি আসন্ন সিটি নির্বাচন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আন্দোলন এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।
২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
২০১৩ সালের ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল এবং ৬ জুলাই গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে হিসাবে আগামী বছরের মার্চ মাসে চার সিটি এবং পরের মাসেই এক সিটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, যেহেতু রংপুর সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, সে কারণে রংপুর সিটি দিয়েই খালেদা জিয়া সফর শুরু করতে পারেন। তবে তার আগে রংপুর সিটির জন্য বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। অন্য ৫ সিটি খালেদা জিয়া জানুয়ারিতে সফর করতে পারেন।
রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া সংশ্লিষ্ট এলাকা সফর করেছিলেন। যার ফল বিএনপি সিটি নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে হাতেনাতে পেয়েছিল।
দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, ৫ সিটিতে সফরের আগে খালেদা জিয়া দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। গাজীপুর ও বরিশালে এবার বিএনপির মেয়র প্রার্থী পরিবর্তন হলেও রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে আইনি জটিলতা না থাকলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে রাজশাহী বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে খালেদা জিয়াকে আগাম পদক্ষেপ নিতে হবে বলে দলটির নেতারা জানান।
এদিকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছি। আমরা বড় সমাবেশ করব। ম্যাডাম থাকবেন কিনা এটা পরে জানানো হবে।