ঢাকা ০৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উদ্যোগ নেই ছাত্রলীগের ভাড়াটে কর্মীদের শনাক্তে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৫৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা একটি ফোনালাপের রেকর্ড শুনিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন, বিএনপির দুই নেতাই এই হামলার জন্য দায়ী। ওই ফোনালাপে একজন বলেছেন, হামলায় অংশ নিতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ভাড়া করে আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এই ফোনালাপের সূত্র ধরে এই হামলার দায় বিএনপির ওপর দিচ্ছে। কিন্তু ফোনালাপ অনুযায়ী ছাত্রলীগের যেসব নেতা-কর্মীকে ‘ভাড়া’ করে আনা হয়েছিল, তাদেরকে শনাক্ত বা ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ।

গত শনিবার কক্সবাজার সফরে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা হয় ফেনীতে। হামলাকারীরা প্রধানত গণমাধ্যমকর্মীদেব বাহনকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। বেশ কিছু গাড়ির কাচ ভেঙে দেয় তারা।

এই ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে আসছে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন দলের দাবি, বিএনপি নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়েছে আলোড়ন তৈরির জন্য।

এর মধ্যে সোমবার দুই ব্যক্তির মধ্যে টেলিফোনালাপের একটি রেকর্ড প্রকাশ হয়। আওয়ামী লীগের যুগম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ রাজধানীতে দুটি আলাদা আলোচনায় এই রেকর্ড বাজিয়ে শোনান।

এই রেকর্ডে শোনা যায়, এক ব্যক্তি ফেনীর আঞ্চলির ভাষায় জনৈক মোবারকের সঙ্গে কথা বলছেন। আর ওই ব্যক্তির নির্দেশনা অনুযায়ী মোবারক হামলার পুরো ছক তৈরি করেন। খালেদা জিয়া বা বিএনপির কোনো নেতাকে বহনকারী গাড়ির বদলে হামলা হবে সাংবাদিকদের গাড়িতে-এই ছিল দুই জনের কথোপকথনের প্রধান উপজীব্য। আবার নির্দেশদাতার কথার পর ফেনীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা জনৈক মোবারক জানান, তার কথা মতো এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মীকেও ভাড়ায় আনা হয়েছে। আর হামলার পর তাদের ছবি তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হাছান মাহদুম এবং মাহবুব উল আলম হানিফ-দুই জনই দাবি করেছেন, ওই নির্দেশদাতা হলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন। যদিও শাহাদাৎ এমন নির্দেশ দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তার কণ্ঠ নকল করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে এই কথোপকথনকে ভুয়া দাবি করেছেন।

এর মধ্যে হামলায় অংশ নেয়াদের মধ্যে ফেনী ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ও কর্মীর ছবি এসেছে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগ এই কথোপকথনের সূত্র ধরেই ফেনী হামলাকে সাজানো দাবি করলেও ছাত্রলীগের কারা কারা ভাড়ায় দিয়েছিল সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেনি। ফলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগও নেই। মূল দলের কোনো উদ্যোগ না থাকায় গা ছাড়া ভাব সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগেরও। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বরং বলেছেন, তাদের কেউ ভাড়ায় যায়নি।

জাকির হাওর বার্তাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। তারা নিজেরা ওই হামলা করে ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন, এই সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী এই রকম হীন কাজে জড়িত থাকতে পারে না।’

জাকির বলেন, ‘তারা কতটুকু নীচু মানসিকতার, যে তাদের নেত্রী গাড়ি বহরে হামলার জন্য ছাত্রলীগের কর্মী ভাড়া করার কথা বলে। তারা এটাকে একটা কৌশলী অবস্থান হিসেব নিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

উদ্যোগ নেই ছাত্রলীগের ভাড়াটে কর্মীদের শনাক্তে

আপডেট টাইম : ১০:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা একটি ফোনালাপের রেকর্ড শুনিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন, বিএনপির দুই নেতাই এই হামলার জন্য দায়ী। ওই ফোনালাপে একজন বলেছেন, হামলায় অংশ নিতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ভাড়া করে আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এই ফোনালাপের সূত্র ধরে এই হামলার দায় বিএনপির ওপর দিচ্ছে। কিন্তু ফোনালাপ অনুযায়ী ছাত্রলীগের যেসব নেতা-কর্মীকে ‘ভাড়া’ করে আনা হয়েছিল, তাদেরকে শনাক্ত বা ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ।

গত শনিবার কক্সবাজার সফরে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা হয় ফেনীতে। হামলাকারীরা প্রধানত গণমাধ্যমকর্মীদেব বাহনকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। বেশ কিছু গাড়ির কাচ ভেঙে দেয় তারা।

এই ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে আসছে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন দলের দাবি, বিএনপি নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়েছে আলোড়ন তৈরির জন্য।

এর মধ্যে সোমবার দুই ব্যক্তির মধ্যে টেলিফোনালাপের একটি রেকর্ড প্রকাশ হয়। আওয়ামী লীগের যুগম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ রাজধানীতে দুটি আলাদা আলোচনায় এই রেকর্ড বাজিয়ে শোনান।

এই রেকর্ডে শোনা যায়, এক ব্যক্তি ফেনীর আঞ্চলির ভাষায় জনৈক মোবারকের সঙ্গে কথা বলছেন। আর ওই ব্যক্তির নির্দেশনা অনুযায়ী মোবারক হামলার পুরো ছক তৈরি করেন। খালেদা জিয়া বা বিএনপির কোনো নেতাকে বহনকারী গাড়ির বদলে হামলা হবে সাংবাদিকদের গাড়িতে-এই ছিল দুই জনের কথোপকথনের প্রধান উপজীব্য। আবার নির্দেশদাতার কথার পর ফেনীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা জনৈক মোবারক জানান, তার কথা মতো এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মীকেও ভাড়ায় আনা হয়েছে। আর হামলার পর তাদের ছবি তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হাছান মাহদুম এবং মাহবুব উল আলম হানিফ-দুই জনই দাবি করেছেন, ওই নির্দেশদাতা হলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন। যদিও শাহাদাৎ এমন নির্দেশ দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তার কণ্ঠ নকল করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে এই কথোপকথনকে ভুয়া দাবি করেছেন।

এর মধ্যে হামলায় অংশ নেয়াদের মধ্যে ফেনী ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ও কর্মীর ছবি এসেছে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগ এই কথোপকথনের সূত্র ধরেই ফেনী হামলাকে সাজানো দাবি করলেও ছাত্রলীগের কারা কারা ভাড়ায় দিয়েছিল সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেনি। ফলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগও নেই। মূল দলের কোনো উদ্যোগ না থাকায় গা ছাড়া ভাব সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগেরও। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বরং বলেছেন, তাদের কেউ ভাড়ায় যায়নি।

জাকির হাওর বার্তাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। তারা নিজেরা ওই হামলা করে ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন, এই সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী এই রকম হীন কাজে জড়িত থাকতে পারে না।’

জাকির বলেন, ‘তারা কতটুকু নীচু মানসিকতার, যে তাদের নেত্রী গাড়ি বহরে হামলার জন্য ছাত্রলীগের কর্মী ভাড়া করার কথা বলে। তারা এটাকে একটা কৌশলী অবস্থান হিসেব নিয়েছে।