ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইন্দিরাকে চায় বিএনপি শেখ হাসিনার মধ্যে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭
  • ৪১৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে ভূমিকা নিয়েছিলেন- রোহিঙ্গা সঙ্কটে শেখ হাসিনাকে সেই ভূমিকায় দেখতে চায় বিএনপি। রোহিঙ্গাদের দেখতে শনিবার সকালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি যে, রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে আমরা যেটা মনে করি, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। যে দেশগুলোর শক্তিতে মিয়ানমার এখন পর্যন্ত গণহত্যা বন্ধ করছে না, সেই দেশগুলোতে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে; তাদের বুঝাতে হবে, কনভিন্স করতে হবে। আমরা দেখেছি, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ইন্দিরা গান্ধী (ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলো সফর করেছিলেন, তারপরেই কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে যে ব্যবস্থাটা হয়েছিল, যে চেষ্টাটা হয়েছিল, সেটা শুরু হয়েছিল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে পূর্ণ সমর্থন দেন। পাকিস্তানি বাহিনীর নিধনযজ্ঞের মুখে  পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা সীমান্তে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ বাংলাদেশি।

ইন্দিরা গান্ধী সে সময় বিভিন্ন দেশ সফর করে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশে নেয়; শহীদ হয় কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা।

মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে গত দুই মাসে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে আরও ছয় লাখের বেশি। মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার এ জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নিতে দেশটিতে আহ্বান জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া দেয়নি তারা।

এবার রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর ১২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে গিয়ে তাদের দুর্দশার কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে তাদের দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের সমালোচনায় মুখর হলেও চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের সেনা অভিযানে সমর্থন দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, মিয়ানমারকে যদি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হয়, অবশ্যই যারা তাদেরকে সহযোগিতা করছে, তাদেরকে আগে বুঝাতে হবে আমরা কী অবস্থায় আছি।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে আজকে কক্সবাজার যাচ্ছেন, সেখানে ত্রাণ দেবেন। রোহিঙ্গা সমস্যা যখন শুরু হয়, তখনই লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের নির্যাতনে, তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিতে হবে। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য সব ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা, দ্বি-পক্ষীয় আলোচনা ও জাতিসংঘের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তখন তিনি বলেছেন, এখনো তিনি সেটা বলছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইন্দিরাকে চায় বিএনপি শেখ হাসিনার মধ্যে

আপডেট টাইম : ০৭:০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে ভূমিকা নিয়েছিলেন- রোহিঙ্গা সঙ্কটে শেখ হাসিনাকে সেই ভূমিকায় দেখতে চায় বিএনপি। রোহিঙ্গাদের দেখতে শনিবার সকালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি যে, রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে আমরা যেটা মনে করি, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। যে দেশগুলোর শক্তিতে মিয়ানমার এখন পর্যন্ত গণহত্যা বন্ধ করছে না, সেই দেশগুলোতে যেতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে; তাদের বুঝাতে হবে, কনভিন্স করতে হবে। আমরা দেখেছি, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ইন্দিরা গান্ধী (ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলো সফর করেছিলেন, তারপরেই কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে যে ব্যবস্থাটা হয়েছিল, যে চেষ্টাটা হয়েছিল, সেটা শুরু হয়েছিল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে পূর্ণ সমর্থন দেন। পাকিস্তানি বাহিনীর নিধনযজ্ঞের মুখে  পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা সীমান্তে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ বাংলাদেশি।

ইন্দিরা গান্ধী সে সময় বিভিন্ন দেশ সফর করে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশে নেয়; শহীদ হয় কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা।

মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে গত দুই মাসে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে আরও ছয় লাখের বেশি। মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার এ জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নিতে দেশটিতে আহ্বান জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া দেয়নি তারা।

এবার রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর ১২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে গিয়ে তাদের দুর্দশার কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে তাদের দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের সমালোচনায় মুখর হলেও চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারের সেনা অভিযানে সমর্থন দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, মিয়ানমারকে যদি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হয়, অবশ্যই যারা তাদেরকে সহযোগিতা করছে, তাদেরকে আগে বুঝাতে হবে আমরা কী অবস্থায় আছি।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে আজকে কক্সবাজার যাচ্ছেন, সেখানে ত্রাণ দেবেন। রোহিঙ্গা সমস্যা যখন শুরু হয়, তখনই লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের নির্যাতনে, তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিতে হবে। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য সব ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা, দ্বি-পক্ষীয় আলোচনা ও জাতিসংঘের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তখন তিনি বলেছেন, এখনো তিনি সেটা বলছেন।