ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রাগনে আসছে অর্থ-সম্মান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ড্রাগন ফলের চাষ। বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গুণ থাকায় জমি, বাড়ির আঙিনা ও ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক লাভের এ ফল চাষ করে সফল হয়েছেন উপজেলার নাঙ্গলমোরা ইউনিয়নের কৃষিবিদ ওয়াহিদুল আলম। এ ফল চাষে সফলতার জন্য তিনি বেশকিছু কৃষি পদকও অর্জন করেছেন। শুধু ড্রাগন নয়, তার বাগানে রয়েছে দেশি-বিদেশি আম, জাম, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু, পেঁপে, চেরি, রাম্বুটান ও চায়না কমলার গাছ।

ওয়াহিদুল আলম জানান, এ উপজেলায় মানুষের কাছে কয়েক বছর আগেও ড্রাগন ফল পরিচিত ছিল না। এখন এটি বেশ পরিচিত। অল্প খরচে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। শুধু একটু পরিচর্যা করলেই ড্রাগন গাছে ফল ধরে। তাই ড্রাগন ফল চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার লোকজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ড্রাগন, দেশি-বিদেশি আম, জাম, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু, পেঁপে, চেরি, রাম্বুটান ও চায়না কমলাসহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। ১০ থেকে ১৫টি গাছে কমলা ধরেছে। পরীক্ষামূলকভাবে চায়না কমলার চাষ করেছেন তিনি। ওয়াহিদুল জানান, অনেক ফলের মধ্যে ড্রাগন ফল চাষে তিনি সফল হয়েছেন। ড্রাগন ফলটির উৎপত্তিস্থল মধ্য আমেরিকা। ২০০৮ সালে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ আনা হয়। এখন বিভিন্ন স্থানে ড্রাগন ফলের চাষ করা হচ্ছে। ড্রাগন ক্যাক্টাস গোত্রের একটি ফল। এ ফলের গাছ হয় লতানো। কিন্তু এর কোনো পাতা নেই। ভিয়েতনামে এ ফল সর্বাধিক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এপ্রিল এ গাছে ফুল আসে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফল ধরে। ফলের বাইরের রঙ হয় লাল। তবে ভেতরের রঙ লাল, সাদা ও হলুদ হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সফলভাবে চাষ করার জন্য উপযোগী জাত হিসেবে বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা), বাউ ড্রাগন ফল-২ (লাল) অবমুক্ত করা হয়েছে। তিনি ২ একর ফসলি জমিতে শতাধিক ড্রাগন গাছ লাগিয়েছেন। প্রত্যেকটি গাছই এখন ফুলেফলে ভরা। এরই মধ্যে তিনি কয়েক মণ ফল বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ড্রাগন চাষ অধিক লাভজনক বলে তিনি জানান। বছরে একটি ড্রাগন গাছ থেকে গ্রায় ১৪০টি ফল পাওয়া যায়। এসব ফল আকারভেদে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়। এ ফল চাষে সফলতার জন্য তিনি বেশকিছু কৃষি পদক অর্জন করেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনেটিকস বিভাগের শিক্ষক এস এম মুর্শিদুল আলম বলেন, বাড়ির ছাদে টবে বা ড্রামের মধ্যে ড্রাগন চারা রোপণ করা যায়। ড্রাগন গাছ ৩ ফুট উঁচু হলেই একটি শক্ত চিকন খুঁটির সঙ্গে সাইকেলের পুরনো টায়ার ঝুলিয়ে দিলেই তাতে ডালপালা বিস্তার করে লতানো গাছটি। কয়েক মাস পর ফুল ফোটে এবং ফল আসে। ড্রাগন ফল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ ওয়াহেদ জানান, সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তবে জৈব পদার্থসমৃদ্ধ বেলে-দোআঁশ মাটিই ড্রাগন চাষের জন্য উত্তম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ড্রাগনে আসছে অর্থ-সম্মান

আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ড্রাগন ফলের চাষ। বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গুণ থাকায় জমি, বাড়ির আঙিনা ও ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক লাভের এ ফল চাষ করে সফল হয়েছেন উপজেলার নাঙ্গলমোরা ইউনিয়নের কৃষিবিদ ওয়াহিদুল আলম। এ ফল চাষে সফলতার জন্য তিনি বেশকিছু কৃষি পদকও অর্জন করেছেন। শুধু ড্রাগন নয়, তার বাগানে রয়েছে দেশি-বিদেশি আম, জাম, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু, পেঁপে, চেরি, রাম্বুটান ও চায়না কমলার গাছ।

ওয়াহিদুল আলম জানান, এ উপজেলায় মানুষের কাছে কয়েক বছর আগেও ড্রাগন ফল পরিচিত ছিল না। এখন এটি বেশ পরিচিত। অল্প খরচে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। শুধু একটু পরিচর্যা করলেই ড্রাগন গাছে ফল ধরে। তাই ড্রাগন ফল চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার লোকজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ড্রাগন, দেশি-বিদেশি আম, জাম, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু, পেঁপে, চেরি, রাম্বুটান ও চায়না কমলাসহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। ১০ থেকে ১৫টি গাছে কমলা ধরেছে। পরীক্ষামূলকভাবে চায়না কমলার চাষ করেছেন তিনি। ওয়াহিদুল জানান, অনেক ফলের মধ্যে ড্রাগন ফল চাষে তিনি সফল হয়েছেন। ড্রাগন ফলটির উৎপত্তিস্থল মধ্য আমেরিকা। ২০০৮ সালে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ আনা হয়। এখন বিভিন্ন স্থানে ড্রাগন ফলের চাষ করা হচ্ছে। ড্রাগন ক্যাক্টাস গোত্রের একটি ফল। এ ফলের গাছ হয় লতানো। কিন্তু এর কোনো পাতা নেই। ভিয়েতনামে এ ফল সর্বাধিক বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এপ্রিল এ গাছে ফুল আসে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফল ধরে। ফলের বাইরের রঙ হয় লাল। তবে ভেতরের রঙ লাল, সাদা ও হলুদ হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সফলভাবে চাষ করার জন্য উপযোগী জাত হিসেবে বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা), বাউ ড্রাগন ফল-২ (লাল) অবমুক্ত করা হয়েছে। তিনি ২ একর ফসলি জমিতে শতাধিক ড্রাগন গাছ লাগিয়েছেন। প্রত্যেকটি গাছই এখন ফুলেফলে ভরা। এরই মধ্যে তিনি কয়েক মণ ফল বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ড্রাগন চাষ অধিক লাভজনক বলে তিনি জানান। বছরে একটি ড্রাগন গাছ থেকে গ্রায় ১৪০টি ফল পাওয়া যায়। এসব ফল আকারভেদে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়। এ ফল চাষে সফলতার জন্য তিনি বেশকিছু কৃষি পদক অর্জন করেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনেটিকস বিভাগের শিক্ষক এস এম মুর্শিদুল আলম বলেন, বাড়ির ছাদে টবে বা ড্রামের মধ্যে ড্রাগন চারা রোপণ করা যায়। ড্রাগন গাছ ৩ ফুট উঁচু হলেই একটি শক্ত চিকন খুঁটির সঙ্গে সাইকেলের পুরনো টায়ার ঝুলিয়ে দিলেই তাতে ডালপালা বিস্তার করে লতানো গাছটি। কয়েক মাস পর ফুল ফোটে এবং ফল আসে। ড্রাগন ফল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ ওয়াহেদ জানান, সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তবে জৈব পদার্থসমৃদ্ধ বেলে-দোআঁশ মাটিই ড্রাগন চাষের জন্য উত্তম।