রাত ১২টার পর আবার ইলিশ ধরা শুরু

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ রোববার রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে ২২ দিনের (১-২২অক্টোবর) মা-ইলিশ সংরক্ষণ মৌসুম। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের এই অভিযান ৯০ ভাগ সফল হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১০ ভাগ সফল হয়নি বলে জানান তাঁরা। তবে জেলেরা অনেক সচেতন হয়েছেন।

আজ সকালে সরেজমিন দেখা যায়, জেলেরা নদীর তীরে তীরে জাল ও সরঞ্জাম গোছাচ্ছেন। ২২ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রাত ১২ টা থেকে নদীতে মাছ ধরতে নামবেন জেলেরা।

তবে জেলেরা অভিযোগ করেন, অভিযান চলাকালীন সময়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও চাল পাননি তারা। অন্তত ৫০ জন জেলে জানান তাঁরা চাল পাননি। অভাবে অনাহারে তাঁদের দিন কেটেছে। এ সময়ে ঋণ হয়েছে অনেক। অভিযান শেষ হওয়ার পর চাল দিয়ে কী করব- এমন আক্ষেপ করেন অনেক জেলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা জেলা প্রশাসক মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, আজকের মধ্যে জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা শেষ হবে।

অভিযানের বিষয়ে ভোলা সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তাঁর উপজেলায় তিনটি নদী। অভিযান চলাকালীন সময়ে আইন অমান্য করে মোট জেলের এক ভাগ মাছ ধরতে নেমেছিলেন। যারা নেমেছিলেন তাঁদের ৭৫ ভাগ জেলেকেই আটক করা হয়েছে। এ সফলতার কারণ জেলেদের মধ্যে সচেতনতা ও দ্রুতগামী স্পিডবোট। আরও লোকবল ও স্পিডবোটের প্রয়োজন ছিল বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোলা সদরে অভিযান ভালো হলেও অন্যান্য উপজেলায় অভিযান ভালো হয়নি। তবে চরফ্যাশন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ কুমার হালদার বলেন, সাগর মোহনাসহ তাঁর উপজেলায়ও তিনটি নদী আছে। এখানে আরও দ্রুতগামী স্পিডবোট ও মৎস্য বিভাগের নিজস্ব লোকবল প্রয়োজন ছিল। তবে জেলেরা সচেতন হওয়ার কারণে অভিযান সফল হয়েছে।

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, গতকাল রোববার পর্যন্ত মোট ৪৫২টি অভিযান চালিয়েছে মৎস্য কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, কোস্টগার্ড ও পুলিশ। এসব অভিযানে প্রায় ৪৫৫ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ১২৭টি, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসেছে ১৮৫টি, জেল হয়েছে ১৮০ জনের। জরিমানা করা হয়েছে মোট ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকার। ২২ দিনের অভিযানে ৩ হাজার ১১৪ কেজি ইলিশ, ৩৩টি ট্রলার ও ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ মিটার জাল জব্দ হয়েছে। জেলা কর্মকর্তা আরও বলেন, এ বছর জেলেরা সচেতন হওয়ার কারণে অভিযান ৯০-৯২ ভাগ সফল হয়েছে বলে বলা যায়।

এদিকে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান জানান, ইলিশ সম্পদ রক্ষায় গঠিত জেলা-উপজেলা টাস্কফোর্স এবার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ১০০টি অভিযান পরিচালনা করে ১১৮ জন জেলেকে আটক করে। এর মধ্যে ১৪৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৯০ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। বাকি ২৮ জন জেলের কাছ থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। জব্দ করা হয় ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ মিটার কারেন্ট জাল ও ২ হাজার ৪০০ কেজি ইলিশ। মামলা দায়ের করা হয়েছে ১০৭টি। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনের জন্য বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৩৬ হাজার ৫৭৫জন জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। এ ছাড়া বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ৯৬০জন জেলেকে পশু পালনের জন্য ছাগল ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর