হাওর বার্তা ডেস্কঃ সামার ট্রান্সফার উইন্ডোতে বন্ধু লিওনেল মেসিকে ছেড়ে চলে যান নেইমার। যোগ দেন পিএসজিতে। খুব অল্প সময়ে গোটা প্যারিসে ছড়িয়ে পড়ে নেইমারের জনপ্রিয়তা। মাঠের পারফর্মেও আলোকিত ছাপ রাখতে শুরু করেন নেইমার। কিন্তু দেড় মাস যেতে না যেতেই শুরু হট্টগোল। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ফুটবল বিশ্ব দেখেছে তার এক ঝলক। ফরাসি লিগে লিঁও’র বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পায় পিএসজি। সে দিন জয়কে আড়াল করে আলোচনার টেবিলে নেইমার-কাভানির কথা কাটাকাটি।
পেনাল্টি শট কে নেবেন? এমন উত্তর মেলাতে মাঠেই দুই দফা তর্কাতর্কি হয় নেইমার-কাভানির মধ্যে। প্রথম দফায় ম্যাচের ৫৭ মিনিটে পিএসজির হয়ে ফ্রি-কিক নিতে এগিয়ে আসেন কাভানি। কিন্তু নেইমারের স্বদেশী বন্ধু দানি আলভেজ বল নিয়ে বাড়িয়ে দেন নেইমারকে। ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি কাভানির। বেশ রাগান্বিত হয়ে পড়েন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। এরপর ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে পিএসজি পেনাল্টি পেলে আলভেজ চেয়েছিলেন নেইমার কিক নিক। কাভানি সেটিও হতে দেননি। নিজেই কিক নেন। এ নিয়ে ত্রিমুখী তর্কে জড়ান কাভানি, আলভেজ ও নেইমার।
মাঠের ঝগড়ার পর ড্রেসিংরুমে দুজনের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, কাভানিকে বিক্রির দাবি নেইমারের, ইনস্টাগ্রামে কাভানিকে ‘আনফলো’ করা থেকে শুরু করে মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল পিএসজির দুই তারকার। কিন্তু এমন ঘটনা মিটমাট করতে উঠেপড়ে লাগে পিএসজি। নেইমার-কাভানির সঙ্গে একাধিক বৈঠক শেষে পিএসজি কোচ বলে দেন, ভাগ করে পেনাল্টি কিক নেবেন নেইমার-কাভনি। ‘আমি তাদের দুজনের সঙ্গেই কথা বলেছি এবং তারা জানা পরিস্থিতি কোন দিকে গেছে। পেনাল্টি কিক নেয়ার জন্য আমাদের অনেক খেলোয়াড় তৈরি রয়েছে এবং তারা এর জন্য প্রস্তুতও। আমরা বেশি বেশি পেনাল্টি জিততে চাইবো। যাতে করে তারা দুজন পেনাল্টি নেয়ার সুযোগ পায়।’
এরপর মিলে যায় নেইমার-কাভানি। কয়েকদিন আলোচনায়ও ছিলেন না তারা। সবাই ধরে নেন যাক, সমস্যার সমাধান হলো। কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিকই আগুণ জ্বলছে। তেমন খবরই দিল স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম ‘ডন ব্যালন’। এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, নেইমারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে পিএসজি ছাড়ছেন কাভানি। ঝামেলার পর কাভানি রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও এভারটনে যাওয়ার জন্য বেশ চেষ্টা চালায়। কিন্তু এসব ক্লাবের খেলোয়াড় কেনার কোটা আগেই পূরণ হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত পেপ গার্দিওলার ঘরে ঢুঁ মারেন কাভানি। ইতিহাদের দলটি কাভানিকে সবুজ সংকেত দেয়। প্রাথমিক কথাবার্তাও সেরে ফেলেছেন কাভানি-সিটি। এবার যাবার পালা। ডন ব্যালনের কথা-কাজে মিলে গেলে আসছে জানুয়ারিতেই নেইমারের পথ থেকে সরে যাবে ‘কাভানি কাঁটা’।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট ৫ বছরের চুক্তিতে নেইমারকে দলে ভেড়ায় পিএসজি। সেজন্য বার্সাকে ২২২ মিলিয়ন ইউরো বাই-আউট ক্লজ পরিশোধ করতে হয় ফরাসি ক্লাবকে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সান্তোস দিয়ে শুরু হয় নেইমারের ক্লাব ক্যারিয়ার। এরপর বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন নেইমার। বার্সার হয়ে একশর বেশি গোল করেন নেইমার। ক্যাম্প ন্যু’তে থাকাকালে দুটি লা লিগা, তিনটি কোপা দেল রে ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ মোট আটটি শিরোপা ছুঁয়ে দেখেন নেইমার।