হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দুই পরিবারের কলহের জের ধরে সপ্তম শ্রেণির একজন ছাত্রী আত্মহনন করেছে। খুলনা নগরীর হরিণটানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিজ বাড়িতে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মেয়েটির নাম শামসুন নাহার চাঁদনী (১২)। সে খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় সে জিপিএ-ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
এলাকাবাসী জানায়, চাঁদনীর পিতা রবিউল ইসলাম হরিণটানা প্রাইমারি স্কুলের সামনে জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করে কয়েক বছর ধরে পরিবারসহ বাস করছেন। তাদের প্রতিবেশী পাইপ মিস্ত্রি শাহ আলমের ছেলে শুভ স্কুলে যাওয়া-আসার পথে চাঁদনীকে উত্ত্যক্ত করত। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করে।
প্রতিবেশি এমদাদুল হক ও ওমর আলী জানান, এক সপ্তাহ আগে বিষয়টি দুই পরিবারের সদস্যরাই জানতে পারেন। এরপর চাঁদনীর বাবা রবিউল ইসলাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শুভদের বাসায় যান। তিনি শুভ’র বাবা শাহ আলমের কাছে তার মেয়েকে ভিক্ষা চেয়ে বলেন, ‘আপনার ছেলেকে সামলান, আমি আমার মেয়েকে সামলাবো।’ কিন্তু তারপরও উভয়ের মধ্যে ফোনে কথা-বার্তা চলছিল। যার জের ধরে শুভর বাবা শাহ আলম শুক্রবার রাত ৮টার দিকে লোকজন নিয়ে চাঁদনীদের বাসায় গিয়ে তার বাবাকে শাসায় এবং মেয়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতিও হয়। বিষয়টি নিয়ে রবিউল অপমান বোধ করায় মেয়েকে বকাঝকা করেন। রাত ৯টার দিকে চাঁদনী ঘরের আড়ার সঙ্গে শাড়ী বেধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে পুলিশ চাঁদনীর লাশ উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
চাঁদনীদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সবাই শোকে মুহ্যমান। তার বাবা এবং মা বিলাপ করছেন আর শুভ ও তার বাবাকে ইঙ্গিত করে বলছেন, ‘ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেললো।’ হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
লবণচরা থানার এসআই আকরাম হোসেন ও মাহবুব ঘটনাস্থলে গেছেন।
চাঁদনীর চাচা ডা. পারভেজ বলেন, ‘শুভ ও তার বাবার আচরণের কারণেই চাঁদনী আত্মহত্যা করেছে।’ তবে সপ্তম শ্রেণিতে পড়–য়া একজন ছাত্রী কীভাবে প্রেম করে সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ ব্যাপারে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদনীর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।