রফিকুলের মনোনয়ন কঠিন করবে তিন নতুন মুখ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি অটল থাকলেও দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কিন্তু বসে নেই। তারা নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি আগের চেয়ে দলীয় কর্মসূচিতেও সক্রিয় থেকে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।

জাতীয় নির্বাচনের আরো প্রায় এক বছর বাকি। এত সময় বাকি থাকলেও দেশের সর্বত্র আগাম নির্বাচনী প্রচারণা দেখা যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকার আসনগুলোতেও নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা বেশি চলছে।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে একটি ঢাকা-১৬। পল্লবী ও রূপনগর থানা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর) ২, ৩, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত আসনটিতে এরই মধ্যে বিএনপির আগ্রহী প্রার্থীরা নিজেদের আগ্রহের কথা জানান দিয়ে ব্যানার, পোস্টারের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইলেও বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।

দলের শীর্ষ এই নেতার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশত মামলা রয়েছে। আগামী নির্বাচনেও তিনি এমপি প্রার্থী হচ্ছেন না কি নিজ জেলা কুমিল্লা থেকে নির্বাচন করবেন তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যদিও বেশ কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর সম্প্রতি দলের কর্মসূচিতে কিছুটা সক্রিয় হচ্ছেন এই সিনিয়র নেতা।

তবে মামলাসহ অন্য কোনো কারণে তিনি এই আসন থেকে নির্বাচন করতে না পারলে তার সহধর্মিণী  অধ্যাপক শাহিদা রফিক প্রার্থী হতে পারেন এমনটাও শোনা যাচ্ছে।

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে,  তিনি (রফিকুল) ঢাকা-১৬ থেকে নির্বাচন করতে চান। দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে এমনটাই আশা করছেন তিনি।

রফিকুল ইসলাম মিয়ার পাশাপাশি ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে আছেন তিন নতুন মুখ। কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম এবং মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান।

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন। নিজস্ব  অর্থায়নে ১৯৯৩ সালে পল্লবীতে সাড়ে ৩ বিঘা জমির ওপর শহীদ জিয়া মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও শহীদ জিয়া গার্লস ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। একই সঙ্গে একটি মেডিকেল সেন্টারও নির্মাণ করেন তিনি।

জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেমকে মহানগর বিএনপির কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশার অংশ হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করছেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচিতেও সক্রিয় থাকছেন বলে জানা গেছে।

দলের মনোনয়ন প্রসঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন হাওর বার্তাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পল্লবী থানা বিএনপির সঙ্গে জড়িত থাকায় দলের স্থানীয় সর্বস্তরের নেতাকর্মীর মধ্যে আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। দল আমাকে সুযোগ দিলে ধানের শীষের এ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।

অন্যদিকে ফুটবলার আমিনুল ইসতাক হাওর বার্তাকে বলেন, ‘আমার শৈশব-কৈশোর এমনকি যৌবন সবই কেটেছে পল্লবী এলাকায়।  আমি এখান থেকে জাতীয় দলের ফুটবলার হয়েছি। তাই এ আসন নিয়ে আমার স্বপ্ন আছে। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, আসনটি পুনরুদ্ধারে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যার হাতে দলীয় প্রতীক তুলে দেবেন তার পক্ষেই আমি কাজ করব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর