হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারে কোন জাতিগত সংখ্যালঘু নিধনের ঘটনা ঘটেনি। তবে যে সব শরনার্থী বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে গিয়েছে তাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত মিয়ানমার, শেষ পর্যন্ত বিশ্বজাতির উদ্দেশ্যে এমনটাই বললেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্য ছেড়ে রোহিঙ্গারা কেন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাও খুঁজে বের করা হবে। সু চি বলেন, আমরা শান্তি চাই, ঐক্য চাই-কোন যুদ্ধ চাই না।
সু চি আরো বলেন, ‘আমরা শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সব মানুষের দুর্ভোগ গভীরভাবে অনুভব করি। রাখাইনে শান্তি, স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। রাখাইনে বাস্তুচ্যুতদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের ভয় করি না। কারো ঘাড়ে দায় চাপানো বা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া মিয়ানমার সরকারের ইচ্ছা নয়।
পরিস্থিতি দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইন পরিদর্শনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত চার লাখ ৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। প্রতিদিন গড়ে ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে।
সেনা অভিযান বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি দ্বিতীয় দফায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর আহবান জানায় জাতিসংঘ। সেনা অভিযান বন্ধে দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির হাতে শেষ সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, শিশু, বৃদ্ধ, যুবকদের এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যার ঘটনা সেখানে ঘটেছে। এর ফলে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম ওই নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
সু চি মঙ্গলবার তার বক্তব্যে বললেন, জাতিগত সংখ্যালঘু নিধনের মতো ঘটনা মিয়ানমারে ঘটেইনি। তবে যারা দেশ ছেড়েছেন তাদের ফিরিয়ে নিতে দেশটি প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিলেন এই নেত্রী। যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।