হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে দলটা কেমন খেলবে? মাহবুব হোসেন : যদিও সময় কম পেয়েছি, তার পরও ভালো করার প্রত্যাশা নিয়ে যাচ্ছি। কী রকম সময় আশা করেছিলেন?
মাহবুব হোসেন : ২৩ জনকে একসঙ্গে পেয়েছি শেষ তিন দিন। দলটাকে সমন্বিত করার সময় পাইনি। প্রস্তুতিতে আরো সময় পেলে আরেকটু ভালো করা যেত।
এই অঞ্চলের ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য ‘ভালো’র সংজ্ঞা কী? তার আগে বাংলাদেশ ফুটবলের সময়টাকে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। সাফ অঞ্চলে সর্বশেষ সাফল্য ২০১০ সালে সাফ গেমস জয়, সুতরাং এই জয়-পূর্ব সময়টাকে তুলনামূলক ভালো ধরা যায়। আর জয়-উত্তর ফুটবল ভীষণ অধোগামী। ওই জয় এবং তার আগের সময়ে সাফ অঞ্চলের লড়াইয়ে ফাইনালে না ওঠা এবং চ্যাম্পিয়ন না হওয়াটাকে ব্যর্থতা বলে মানা হতো। কিন্তু এই মানদণ্ড বদলে গেছে ২০১০ সালের পর থেকে। ক্ষয়রোগের প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশ এখন হরহামেশা মাথা নোয়ায় ভারতের কাছে। গৌরবের ঢেঁকুর তোলা হয় নেপাল-ভুটানের বিপক্ষে জয়ে।
সুতরাং অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের এ প্রতিযোগিতায়ও ভারতকে আলাদা করে রাখলে ভালো ফলের মানেটা দাঁড়াচ্ছে নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়। এই তিন ম্যাচের ভাগ্য নিয়েও যেন অন্ধকারে কোচ মাহবুব হোসেন। তাই সব সময় যেমন ভালো করার কথা বলা হয়, সেরকম বলেই আজ ভুটানের বিমানে উঠছে তাঁর অনূর্ধ্ব-১৮ দল।
কোচ কথা দিয়ে যেতে না পারলেও ২৩ জনের এই দলের ২১ জনই প্রিমিয়ারে খেলা ফুটবলার। বাকি দুজন চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের। প্রিমিয়ারের এত খেলোয়াড়ের মধ্যে নিয়মিত একাদশের মাত্র পাঁচজন। আল আমিন, রহমত, বাদশা, বিশ্বনাথ ও মনির। বাকিরা বদলি হয়ে কখনো-সখনো ক্লাব দলে সুযোগ পায়। এর পরও অনূর্ধ্ব-১৮ দলকে ভুটানে পাঠানোর জন্য দেশের সর্বোচ্চ লিগটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো দেশে হয়তো এমন নজির নেই। এ দেশের ফুটবলারের সংখ্যা কম বলে এই দুর্গতি মেনে নিতে হচ্ছে। জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান কাজী নাবিল আহমেদও স্বীকার করেছেন, ‘এটা হওয়া উচিত নয়, এটা আমিও বিশ্বাস করি। ক্লাবগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দেশের সর্বোচ্চ লিগ বাধাগ্রস্ত হয়। অবশ্য মাঠের অবস্থাও খারাপ। তাই মাঠকে বিশ্রাম দেওয়া এবং আমাদের ফুটবলের কঠিন বাস্তবতা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাদের কাছে আমরা ভালো পারফরম্যান্স আশা করি ভুটানে। ’ গতবার এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ভারতের কাছে হেরে।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে ভুটানে। উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আগে ছয় দলের দুই গ্রুপ হয়ে খেলার কথা থাকলেও শ্রীলঙ্কা শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এটি এখন পাঁচ দলের রাউন্ড রবিন লিগের খেলা। চ্যাম্পিয়ন হবে সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীরা। বাংলাদেশের কাছে অত বড় চাওয়া নেই কারো। ভালো খেলা এবং গোল করার সামর্থ্য দেখাতে পারলেও হয়। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে এ দেশের কিশোরদের পায়ে গোলের মহোৎসব হয়েছিল নেপালে। আন্তজার্তিক ম্যাচে দেশের ফুটবলারদের পায়ে গোল দেখাটাও কম ভাগ্যের কথা নয়। এবার অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলাররা ধারাটা বজায় রাখতে পারলে ভবিষ্যতের ছবিটা অন্তত ইতিবাচক হয়।