হাওর বার্তা ডেস্কঃ না, সম্ভবত আর আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। ডাবল সেঞ্চুরি এবার করেই ফেলবে বাংলাদেশ। ফুটবল র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ তাদের সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে অনন্য চূড়ায় উঠে গেছে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ এখন ১৯৬তম দল। দ্বিশতকের মতো ‘অর্জন’ থেকে আর মাত্র চার ধাপ দূরে মামুনুলরা। তবে ফুটবল দলকে ধন্যবাদ দিতেই হচ্ছে। তাদের সুবাদেই তো নতুন করে কিছু দেশের নাম জানা গেছে।
২০১৭ সালে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। এরই দায় নিয়ে এ বছর প্রথমবারের মতো ১৯০-এর কোঠায় নাম লিখিয়েছে ফুটবল দল। কখনো ১৯৩ হচ্ছে তো কখনো আবার ১৯০ এ ফিরছে। এর মাঝেই গত আগস্টে ‘আনন্দদায়ী’ এক বার্তা বয়ে এনেছিল ফিফা। কোনো ম্যাচ না খেলেই অবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে বাংলাদেশ। এক ধাপ এগিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে ১৮৯-এ উঠে এসেছিল ‘লাল-সবুজের’ দল।
এই সেপ্টেম্বরেই সে আনন্দ মুছে গেছে। বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে উঠে গেছে অন্য দলগুলো। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের আশপাশে থাকা নামগুলো পড়ে প্রথমে বিস্ময় জেগেছে। পরে আনন্দের এক নহর বয়ে গেছে মনের মাঝে। আহা, ভাগ্যিস এ অবস্থায় এসেছিল বাংলাদেশ। না হলে কী, এত এত সাধারণ জ্ঞান অর্জনের সৌভাগ্য হতো!
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের আশপাশের দলগুলো
অবস্থান | দেশ |
১৯০ | সেইসেল্জ |
১৯১ | মাল্টা |
১৯২ | পূর্ব তিমুর |
১৯৩ | সামোয়া |
১৯৩ | আমেরিকান সামোয়া |
১৯৩ | কুক আইল্যান্ড |
১৯৬ | বাংলাদেশ |
১৯৭ | মঙ্গোলিয়া |
১৯৮ | শ্রীলঙ্কা |
১৯৯ | ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ড |
২০০ | পাকিস্তান |
বাংলাদেশের ছেড়ে দেওয়া ১৮৯তম স্থানটি পেয়েছে গুয়াম। এ দেশের নাম তবু ফুটবলের কল্যাণেই বাংলাদেশের মানুষজন শুনেছে আগে। তবে ১৯০তম দেশটির নাম বাংলাদেশের কজন শুনেছেন কে জানে! ১১৫টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সব দ্বীপ নিয়ে গঠিত সেইসেল্জ দেশটির আয়তন ৪৫৯ বর্গকিলোমিটার। আর শখানেক দ্বীপ মিলে যে কজন মানুষ, সেই ৯২ হাজার জনসংখ্যা দিয়ে মতিঝিলের তিনটি স্টেডিয়াম ভরে ফেলা সম্ভব।
ইতালির উপকূলের আরেকটি দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টা। জনসংখ্যায় এরা এগিয়ে আছে সেইসেল্জের চেয়ে। তবে প্রায় সাড়ে চার লাখ লোকের মাল্টার আয়তন বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম জেলার অর্ধেকেরও কম (৩১৬ বর্গকিলোমিটার)।
এর পরেই পূর্ব তিমুর। দুই যুগ পর স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া এই দেশটি ২০০২ সালে সবার কাছেই নতুন করে পরিচয় পেয়েছিল। আয়তনে বাংলাদেশের দশ ভাগের সমান দেশটির কথা আবারও মনে করিয়ে দিল ফিফা র্যাঙ্কিং।
১৯৩তম স্থানে ভাই ভাই বলে জায়গা করে নিয়েছে সামোয়া ও আমেরিকান সামোয়া। প্রায় তিন হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সামোয়ার জনসংখ্যা তবু দুই লাখ ছুঁই ছুঁই। ১৯৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আমেরিকান সামোয়ার লোকবল কজন সে হিসাবে না যাওয়াই বোধ হয় ভালো। ১৯৩তম অবস্থানে দুই সামোয়ার সঙ্গী তাদেরই প্রতিবেশী কুক আইল্যান্ড। আয়তনে আমেরিকান সামোয়ার চেয়ে খানিকটা বড় (২৪০) এ দেশের জনসংখ্যা অবশ্য বাংলাদেশকে লজ্জা দিতে বাধ্য। কারণ, বাংলাদেশের ফুটবলের বিভিন্ন পর্যায়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ফুটবলারের সংখ্যাও যে ২১ হাজারের চেয়ে বেশি হওয়ার কথা!
তবে এত এত জ্ঞান অর্জন শুধু বাংলাদেশের মানুষ একা পাচ্ছে না। মঙ্গোলিয়ার নামটা এ অঞ্চলের সবারই হয়তো জানা। কিন্তু ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ড বলেও যে একটি দেশ (১৯৯) আছে, সেটা জানার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়নি শ্রীলঙ্কা (১৯৮) ও পাকিস্তান (২০০)!