হাওর বার্তা ডেস্কঃ থাইল্যান্ডের চনবুরিতে চলতি মাসের ১০-২৩ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০১৭। গেল বছর বাছাইপর্বের ‘সি’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্টের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দল।
এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে আজ শুক্রবার সকালে থাইল্যান্ডে গিয়েছে বাংলাদেশ দল। যথারীতি বাংলাদেশ দলের এই সফরেও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।
থাইল্যান্ডে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন ও অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী সরকার ভালো খেলা উপহার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন ভয়কে জয় করার কথা।
অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী সরকার বলেন, ‘গত এক বছর আমরা অনেক হার্ডওয়ার্ক করেছি। অনেকগুলো প্রীতি ম্যাচ খেলেছি। টুকটাক যেসব ভুল হয়েছে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠতে কাজ করেছি। এই আসরে যেন দল ভাল খেলে, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ঠিকই। তাদের বিপক্ষে খেলতে নামলে একটু ভয় করবে। কিন্তু ভয়কে অবশ্যই জয় করতে হবে।’
বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘গত বছর ঘরের মাঠে কোয়ালিফাই করেই আমরা কঠিন পরীক্ষায় পড়েছিলাম। তার ওপর ডেথগ্রুপ। গত এক বছরে আমাদের দলের উন্নতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে ফিটনেসের ক্ষেত্রে। আগে মেয়েরা ১২ মিনিটে ২৭০০ মিটার দৌড়াতে পারতো। এখন তারা দৌড়াতে পারে ৩১০০-৩৫০০ মিটার। অথচ এর আন্তর্জজাতিক স্ট্যান্ডার্ড মানদ- হচ্ছে ৩০০০+ মিটার। গোলকিপিং পজিশন নিয়ে আগে কিছুটা দুর্বলতা থাকলেও এখন তার উত্তরণ হয়েছে অনেক। মূলপর্বে খেলতে যাওয়ার কারণে অন্য দেশগুলো আমাদের সম্পর্কে জেনেছে। খেলায় হার-জিত থাকবেই। তবে আমরা কম্পিটিটিভ ফুটবলই খেলবো। চেষ্টা করবো সমানতালে খেলার। মোটকথা, সবকিছু উজাড় করেই খেলবো। ম্যাচ বাই ম্যাচ প্রতিপক্ষ দলের শক্তিমত্তা বুঝেই ফমের্শন সাজাবো।’
বাংলাদেশ দলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের অপারেটিভ ডিরেক্টর ( হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। তারা যাতে সবাই ভালো থাকে ও ভালো ফল নিয়ে আসে। বাংলাদেশ দলের জন্য ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল। এই দলকে আমরা শুরু থেকেই নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে এসেছি। বিভিন্ন দেশে তাদের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে পাশে থেকেছি। মূলপর্বেও আছি। অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা দল এরকম বড় মাপের একটি টুর্নামেন্ট খেলতে যাবে, বিষয়টা সত্যিই গর্বের। এই আসরে মেয়েরা যদি কোয়ালিফাই করে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে, তাহলে ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে এই দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে একটি করে ওয়ালটন ফ্রিজ উপহার দেওয়া হবে। ’
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের গ্রুপে (বি) রয়েছে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া, রানার-আপ জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দল। কোরিয়া ও জাপান চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ হিসেবে এই টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো বাছাইপর্ব পেরিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ যেমন ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বে এসেছে। তেমনি অস্ট্রেলিয়া ‘ডি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে। বাছাইপর্বে ৫ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া গোল করেছিল ৬৫টি। আর গোল হজম করেছিল ১টি। অন্যদিকে বাছাইপর্বে ৫ ম্যাচে বাংলাদেশ গোল করেছিল ১৬টি। গোল হজম করেছিল ২টি। শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের চেয়ে বাকি তিন দলই বেশ এগিয়ে।
১০ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্টের পর্দা উঠলেও পরদিন মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া। ১৪ সেপ্টেম্বর রানার-আপ জাপানের মুখোমুখি হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা।
দুই গ্রুপের শীর্ষ চারটি দল সেমিফাইনালে উঠবে। সেখান থেকে সেরা দুটি দল ফাইনাল খেলবে। চ্যাম্পিয়ন, রানার-আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারী দল অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের টিকিট পাবে।