পুলিশের অভিযোগপত্র না নিয়ে র‌্যাবকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের ঘটনায় পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে র‌্যাবকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. শাহেনূর এই আদেশ দেন।
চলতি বছরের ১৪ মে ৮ জনকে আসামি করে আদালতে চোরাচালান আইনে অভিযোগপত্রটি দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর পর ৯ আগস্ট এটিকে ত্রুটিপূর্ণ জানিয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি র‌্যাবের করা তদন্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে আদালতে নারাজি আবেদন করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে থাকা আসামি নূর মোহাম্মদকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। অথচ একই ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে র‌্যাবের দেয়া অভিযোগপত্রে নূর মোহাম্মদকে আসামি করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের দেয়া নারাজি আবেদনটি গ্রহণ করে আদালত র‌্যাবকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১৫ সালের ৬ জুন পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এর পর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ ৪টি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের (৯৬ ও ৫৯ নম্বর) নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়।
কোকেন জব্দের ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে চোরাচালানের অভিযোগে এই মামলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারাও সংযোজন করা হয়।
কোকেন জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে আটজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামানের দেয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ না করে র‌্যাবকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু দুজন আসামির নাম যুক্ত করা ছাড়া (নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহমেদ) র‌্যাবের তদন্তেও চালানটির গন্তব্য বের করা সম্ভব হয়নি। র‌্যাব চলতি বছরের ৩ এপ্রিল অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত এটি গ্রহণ করেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মাদক আইনে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে চোরাচালান আইনে চলতি বছরের ১৪ মে তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান আটজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর