হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের ম্যাচ
১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-উত্তর কোরিয়া
১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-জাপান
১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
গেল বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ইরান (৩-০), সিঙ্গাপুর (৫-০), কিরগিজস্তান (১০-০), চীনা তাইপে (৪-২) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (৪-০) হারিয়ে অপরাজিত ‘বি’ গ্রুপ সেরা হয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবলে চূড়ান্ত পর্বে উঠেছেন কৃষ্ণা-স্বপ্নারা, এখনও যেখানে যেতে পারেননি ৩০ বছর চর্চা করা ভারতীয় মেয়েরা। রোববার থাইল্যান্ডের চুনবুরিতে শুরু হতে যাওয়া চূড়ান্ত পর্ব অনেক বেশি কঠিন; জানেন-মানেন কৃষ্ণা, সানজিদা, সুলতানা, আঁখিরা। প্রতিপক্ষ চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। এশিয়ার পরাশক্তি দল হলেও বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ শামসুন, নাজমা, মাহমুদা, শিউলি, মাসুরা, মৌসুমী, তাসলিমারা; তহুরা, নীলা, মারিয়াদের চোয়ালে দৃঢ়তা ‘শেষ পর্যন্ত লড়ব’। সে লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল সকালে চুনবুরি যাচ্ছেন ২৩ কিশোরীর সঙ্গে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, দুই সহকারী মাহবুবুর রহমান লিটু ও সাবিনা খাতুন, ম্যানেজার জাকির হোসেন, দলনেতা আমিরুল ইসলাম বাবু এবং কর্মকর্তা গাজী সারোয়ার বাবু।
গেল বছর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাম্পে বাছাই পর্ব খেলা অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দল। ১ বছরের প্রস্তুতিতে শারীরিক-মানসিকভাবে আরও পরিণত মেয়েরা; কড়া নজরদারিতে শিক্ষায়, আচরণে পরিবর্তন এসেছে। জাপান, কোরিয়া ও চীনে ২১টি (১০ জয়, ৫ ড্র, ৬ হার) প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর বদলে গেছে বড় দলের বিপক্ষে খেলার মানসিকতা, আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে; হয়েছে ৯০ মিনিট এক ছন্দে খেলার সক্ষমতা। ছোটনের মেয়েরা বোঝেন ‘আরও ভালো খেলতে হবে’। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ব্যাংকক থেকে আনা হয়েছে ৫০ হাজার ডলারের জার্সি-বুট!
কিন্তু মাঠে নামার আগে প্রতিপক্ষ অচেনা কৃষ্ণাদের জন্য। বাছাই খেলায় শুধু অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন ইন্টারনেটের কল্যাণে। কোরিয়া ও জাপান খেলছে সরাসরি। তবে কার শক্তি-দুর্বলতা কোথায় ভাবছেন না ২০১০ সাল থেকে দেশের নারী ফুটবল কোচ, শিষ্যদের প্রতি নির্দেশ ‘শেষ পর্যন্ত ফাইট করো, নিজের খেলাটা খেলো।’
জানা গেছে, লাল-সবুজ কিশোরীদের নাকি লক্ষ্য কোরিয়া। প্রথম ম্যাচ ভালো কিছু করলে টুর্নামেন্টের চিত্র পাল্টে যাবে নিশ্চিত। কৃষ্ণাদের সেভাবে উজ্জীবিত করা হয়েছে।
আর্থিক ও শিক্ষার নিরাপত্তা দেয়ায় যথেষ্ট সপ্রতিভ অজপাড়াগাঁয়ের আসা মনিকা, মার্জিয়া, তহুরা, নীলা, মারিয়া, নার্গিস, আনুচিং, রত্না, রোকসানা, জ্যোৎস্না, আনাইরা। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এসএস স্টিল ও এসএস সলিউশন মাসে বাছাই পর্ব খেলা ২৩ কিশোরীকে ১০ হাজার ও অন্যদের ৩ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দিচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন চারজন; ১৪ জনকে ঢাকায় জেএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ চেয়ে শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করা হয়েছে।
বছরজুড়ে ক্যাম্প চালানো ও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে দলকে চারবার বিদেশে পাঠাতে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে দলের পেছনে। কেননা হালে দেশের ফুটবলের সবচে বড় অর্জন এটাই; বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও তৈরি হয়েছে দলটি নিয়ে। ‘টুর্নামেন্টে আমাদের ফল কী হবে, সহজে অনুমেয়। তবে এখানেই শেষ হয়ে যাবে না। এ দলকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য ধরে রাখা হবে’ জানান বাফুফে মহিলা উইং চেয়ারম্যান মাহফুজা আকতার কিরন। খেলোয়াড় বের করতে পাইপলাইনও তৈরি। অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাই পর্ব শেষ হয়েছে, যেখান থেকে ১১ কিশোরীকে থাইল্যান্ডগামী দলের সঙ্গে ক্যাম্পে তোলা হয়েছে।