হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে থাকলেও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরোদমে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র নেতারা অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে যাবেন তারা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দলটি আন্দোলনের পরিকল্পনাও করে রেখেছে। আগামী মাসে নির্বাচন কমিশনের ডাকা সংলাপেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কোরবানির ঈদের পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন।
দশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি মাঠ পর্যায়ে তাদের কি অবস্থা তার প্রকৃত চিত্র জানতে চাচ্ছে। নির্বাচনে যদি অংশ নেয় তাহলে কি অবস্থা হবে তার একটি স্বচ্ছ পরিপূর্ণ দৃশ্যপট সামনে রাখতে চান দলের হাইকমান্ড। নির্বাচনী মাঠ জরিপ-তথ্য সংগ্রহ করছে দলটি। একাধিক সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং দলীয়ভাবে ভোটের মাঠের অবস্থা, যোগ্য প্রার্থী বাছাইসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরিপ চালাচ্ছে বিএনপি।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি কিছু প্রশ্ন রাখা হচ্ছে এই মতামত জরিপে। এই প্রশ্নসমূহের মধ্যে রয়েছে:কেমন সরকারের অধীনে নির্বাচন চান, কোনো দলকে ভোট দিবেন, কেন ভোট দিবেন, সরকারের সফলতার প্রধান দিক কি, প্রধান ব্যর্থতা কি, আপনি সরকার দ্বারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত কি না? হলে কিভাবে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন কি না, না দিয়ে থাকলে কেন দেন নি? শেখ হাসিনা না বেগম খালেদা জিয়া কাকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? না ভোটের বিধান রাখা যেতে পারে কি না? প্রভৃতি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনসাইড সার্ভে অফ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার, রিসার্চ এন্ড এ্যানালাইসিসসহ বিএনপি ঘরানার শিক্ষক ও পেশাজীবীরা এই জরিপ ও তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন। ইতিমধ্যে একটি পেশাদার জারিপ প্রতিষ্ঠান তিন মাস সারাদেশে তথ্য সংগ্রহ শেষে ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দিয়েছে বিএনপির কাছে। দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, এ পর্যন্ত একটি জরিপের বিশ্লেষণ পাওয়া গেছে। সেখানে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির পক্ষে অভাবনীয় ফলাফল অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার বা বিএনআরসি’র তত্ত্বাবধানে একাধিক সিনিয়র নেতা, দেশি ও বিদেশি কমপক্ষে সাতজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির অধীনে একটি টিম নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ তুলে আনার এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরার আগে তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও মতামত বিশ্লেষণ করে তারা বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে পেশ করবেন।
অপর একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীকে দিয়ে মাঠে জরিপ কাজ করছে। তাদের কাছে ১৯টি প্রশ্ন সম্বলিত ফরম দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিয়ন থেকে কমপক্ষে ৭ জন প্রভাবমুক্ত লোকের মতামত দিয়ে ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে