ঢাকা ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওর দুর্নীতি মামলায় আটক কে এই চপল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৭
  • ২২৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির কারণে চলতি বছর আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক ফসলহানি ঘটনা ঘটে।

পরে এমন পরিস্থিতির জন্য বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে এনে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার অন্যতম আসামি ঠিকাদার খায়রুল হুদা চপল। সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়ার সময় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

সূত্র জানায়, এসময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলে ফোন করে ২০ ঘুষ লাখ টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেও রেহাই পাননি চপল। আলোচিত বাঁধ দুর্নীতি মামলার এই আসামি এতটাকা ঘুষ দেওয়ার কথা মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই মানুষের মনে কৌতূহল জেগেছে কে এই চপল?

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নূর ট্রেডিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী খায়রুল হুদা চপল। তিনি বর্তমানে সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক চপল জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। বছর দুই আগে তিনি যুবলীগের নেতৃত্বে আসেন। এছাড়া তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের ছোট ভাই।

হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে গত ৩ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ৪৬ ঠিকাদারসহ আসামি করা হয় ১৪০ জনকে। ঠিকাদার খায়রুল হুদা চপলও এই মামলার অন্যতম একজন আসামি।

বাঁধ দুর্নীতি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ, প্রতি বছর বন্যা আসার সময় ও আশঙ্কা সম্পর্কে অবহিত থাকার পরও তারা পরস্পর যোগসাজশে মৌলিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ওই চুক্তিতে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের অসমাপ্ত ৮৪টি প্যাকেজের বাঁধ নির্মাণ শেষ করতে ঠিকাদারদের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পরে আর দরপত্র আহ্বান না করে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে আগের ঠিকাদারদেরই ১৬০টি প্যাকেজে নতুন কাজ দেওয়া হয়। নতুন প্যাকেজের মধ্যে নয়টির কাজ শুরু না করে এবং ১৫১টি প্যাকেজের কাজ আংশিক সম্পন্ন করার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ভবিষ্যতে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন আসামিরা। এসব কারণে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দ-বিধির ৪০৯, ১৬৬, ৫১১ ও ১০৯ ধারায় এই মামলা করা হয়েছে বলে দুদক উপ পরিচালক প্রণব কুমার জানিয়েছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঠিকাদাররা ৮৪টি প্যাকেজের কাজ দরপত্রের শর্ত মোতাবেক সম্পন্ন করেননি। শুধু চলতি বছর নয়, আগের বছরেও তারা একই কাজ করেছেন। পাউবো কর্মকর্তারা এ কাজে সহযোগিতা করেছেন। এর মাধ্যমে তারা অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তদন্তকালে এদের অবৈধ সম্পদ জব্দ করার আবেদনও জানানো হয় এজাহারে। বিচারক মো. মুজিবুর রহমান তা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর আদেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাওর দুর্নীতি মামলায় আটক কে এই চপল

আপডেট টাইম : ০১:১৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির কারণে চলতি বছর আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক ফসলহানি ঘটনা ঘটে।

পরে এমন পরিস্থিতির জন্য বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে এনে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার অন্যতম আসামি ঠিকাদার খায়রুল হুদা চপল। সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়ার সময় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

সূত্র জানায়, এসময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলে ফোন করে ২০ ঘুষ লাখ টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেও রেহাই পাননি চপল। আলোচিত বাঁধ দুর্নীতি মামলার এই আসামি এতটাকা ঘুষ দেওয়ার কথা মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই মানুষের মনে কৌতূহল জেগেছে কে এই চপল?

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নূর ট্রেডিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী খায়রুল হুদা চপল। তিনি বর্তমানে সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক চপল জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। বছর দুই আগে তিনি যুবলীগের নেতৃত্বে আসেন। এছাড়া তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের ছোট ভাই।

হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে গত ৩ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ৪৬ ঠিকাদারসহ আসামি করা হয় ১৪০ জনকে। ঠিকাদার খায়রুল হুদা চপলও এই মামলার অন্যতম একজন আসামি।

বাঁধ দুর্নীতি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ, প্রতি বছর বন্যা আসার সময় ও আশঙ্কা সম্পর্কে অবহিত থাকার পরও তারা পরস্পর যোগসাজশে মৌলিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ওই চুক্তিতে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের অসমাপ্ত ৮৪টি প্যাকেজের বাঁধ নির্মাণ শেষ করতে ঠিকাদারদের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পরে আর দরপত্র আহ্বান না করে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে আগের ঠিকাদারদেরই ১৬০টি প্যাকেজে নতুন কাজ দেওয়া হয়। নতুন প্যাকেজের মধ্যে নয়টির কাজ শুরু না করে এবং ১৫১টি প্যাকেজের কাজ আংশিক সম্পন্ন করার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ভবিষ্যতে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন আসামিরা। এসব কারণে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দ-বিধির ৪০৯, ১৬৬, ৫১১ ও ১০৯ ধারায় এই মামলা করা হয়েছে বলে দুদক উপ পরিচালক প্রণব কুমার জানিয়েছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঠিকাদাররা ৮৪টি প্যাকেজের কাজ দরপত্রের শর্ত মোতাবেক সম্পন্ন করেননি। শুধু চলতি বছর নয়, আগের বছরেও তারা একই কাজ করেছেন। পাউবো কর্মকর্তারা এ কাজে সহযোগিতা করেছেন। এর মাধ্যমে তারা অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তদন্তকালে এদের অবৈধ সম্পদ জব্দ করার আবেদনও জানানো হয় এজাহারে। বিচারক মো. মুজিবুর রহমান তা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর আদেশ দেন।