ঢাকা ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান বাড়ানো

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০১৫
  • ৫৬৬ বার

বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, দেশে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের অভিযানে নেমেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিশেষ করে জনস্বার্থে যে ধরনের উন্নয়ন বা প্রবৃদ্ধি দরকার সে দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এক আর্ন্তজাতিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের (আইএলও) যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, আইএলওর সাবেক পরিচালক ড. মুহাম্মদ মোক্তাদা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পালের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও ছিলেন আইএলও (জেনেভা) লেবার ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান এনায়েতুল ইসলাম, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রেড্ডি, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. স্বপন কুমার বালা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চেীধুরী, নাজনীন সুলতানাসহ অন্য নির্বাহী পরিচালকরা।
আতিউর রহমান বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের লক্ষ্যে শুরুতে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগ্রহী করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন নীতিগত সুবিধা দিচ্ছি। সরকারের কাছ থেকেও বিভিন্ন পলিসি সাপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গ্রীন ফাইন্যান্সিংয়ের বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
গত ৬ বছর ধরে দেশের অর্থনীতি একটি স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে। আবার এই প্রবৃদ্ধি গুণগত মানের। ফলে এর সুফল আমরা সবাই ভোগ করছি এবং মূল্যস্ফীতিও কমে আসছে।
গত ৬ বছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে- এমন মন্তব্য করে গবর্নর বলেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকা- অনেক বেশি বেড়েছে। এতে সামগ্রিক দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য অনেকাংশে কমেছে। তিনি বলেন, আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে পেরেছি।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সবুজ অর্থায়নের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে আতিউর রহমান বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার হতে পারি কিন্তু নৈতিকভাবে আমরা অনেক ওপরে আছি। সবুজ অর্থায়নের আওতায় দেশে একটি গ্রীন টেক্সটাইল মিল তৈরি হচ্ছে। এ কারখানা হবে বিশ্বের এক নম্বর সবুজ কারখানা।
ড. মুহাম্মদ মোক্তাদা বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ কর্মসংস্থান বাড়ানো। দেশের জনসংখ্যা বেশি থাকলেও দক্ষ জনশক্তির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই দক্ষ জনশক্তি গড়ার জন্য কার্যকরী নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে খাদ্য ও জ্বালানি খাতে মূল্যস্ফীতি সব সময় ঊর্ধ্বমুখী উল্লেখ করে প্রবন্ধে বলা হয়, সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে যথেষ্ট অসামঞ্জস্যতা রয়েছে যার নেতিবাচক প্রভাব ভোগ করতে হয় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মনিটরিং পলিসির মাধ্যমে এই অসামঞ্জস্যতা কমাতে নীতি প্রণয়ন করতে পারে।
শ্রীনিবাস রেড্ডি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অদক্ষ জনবল ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মপরিবেশ। এতে উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এ জন্য শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের কাজের পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান বাড়ানো

আপডেট টাইম : ০৬:৫১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০১৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, দেশে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের অভিযানে নেমেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিশেষ করে জনস্বার্থে যে ধরনের উন্নয়ন বা প্রবৃদ্ধি দরকার সে দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এক আর্ন্তজাতিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের (আইএলও) যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, আইএলওর সাবেক পরিচালক ড. মুহাম্মদ মোক্তাদা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পালের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও ছিলেন আইএলও (জেনেভা) লেবার ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান এনায়েতুল ইসলাম, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস রেড্ডি, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. স্বপন কুমার বালা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চেীধুরী, নাজনীন সুলতানাসহ অন্য নির্বাহী পরিচালকরা।
আতিউর রহমান বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের লক্ষ্যে শুরুতে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগ্রহী করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন নীতিগত সুবিধা দিচ্ছি। সরকারের কাছ থেকেও বিভিন্ন পলিসি সাপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গ্রীন ফাইন্যান্সিংয়ের বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
গত ৬ বছর ধরে দেশের অর্থনীতি একটি স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে। আবার এই প্রবৃদ্ধি গুণগত মানের। ফলে এর সুফল আমরা সবাই ভোগ করছি এবং মূল্যস্ফীতিও কমে আসছে।
গত ৬ বছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সুস্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে- এমন মন্তব্য করে গবর্নর বলেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকা- অনেক বেশি বেড়েছে। এতে সামগ্রিক দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য অনেকাংশে কমেছে। তিনি বলেন, আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে পেরেছি।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সবুজ অর্থায়নের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে আতিউর রহমান বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার হতে পারি কিন্তু নৈতিকভাবে আমরা অনেক ওপরে আছি। সবুজ অর্থায়নের আওতায় দেশে একটি গ্রীন টেক্সটাইল মিল তৈরি হচ্ছে। এ কারখানা হবে বিশ্বের এক নম্বর সবুজ কারখানা।
ড. মুহাম্মদ মোক্তাদা বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ কর্মসংস্থান বাড়ানো। দেশের জনসংখ্যা বেশি থাকলেও দক্ষ জনশক্তির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই দক্ষ জনশক্তি গড়ার জন্য কার্যকরী নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে খাদ্য ও জ্বালানি খাতে মূল্যস্ফীতি সব সময় ঊর্ধ্বমুখী উল্লেখ করে প্রবন্ধে বলা হয়, সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে যথেষ্ট অসামঞ্জস্যতা রয়েছে যার নেতিবাচক প্রভাব ভোগ করতে হয় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মনিটরিং পলিসির মাধ্যমে এই অসামঞ্জস্যতা কমাতে নীতি প্রণয়ন করতে পারে।
শ্রীনিবাস রেড্ডি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অদক্ষ জনবল ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মপরিবেশ। এতে উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এ জন্য শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের কাজের পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।