হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলকায় লেবু চাষের পাশাপাশি নাগা মরিচ চাষে সাফল্য পাওয়া গেছে। আগে এ ধরনের চাষ হতো না। বর্তমানে লেবু বাগানে সাথী ফসল হিসেবে নাগা মরিচ চাষ করে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন। এতে তারা বাড়তি আয়ও করতে পারছেন।
সূত্র জানায়, জেলার মাধবপুর, নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাটের পাহাড়ি এলাকার পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে লেবু বাগান করা হয়েছে। এখন প্রায় লেবু বাগানেই অধিক আয়ের পথ হিসেবে নাগা মরিচ চাষ করছেন কৃষকরা। এতে তারা ভাল ফলনও পাচ্ছেন। সাথী ফসল বলে খরচ হয় না। একটি গাছে শত শত নাগা মরিচ ধরে। এখন এক বাগানের চাষাবাদ দেখে অন্যান্য বাগানেও নাগা মরিচ চাষ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লেবু গাছের নিচে নাগা মরিচ গাছ রোপণ করা হয়েছে। এসব গাছে ধরে আছে লাল-সবুজ মরিচ। লেবুর মত নাগা মরিচও এখানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ১২ মাস লেবু চাষের মত সারা বছর নাগা মরিচ চাষ হয়। বেচাবিক্রিও ভাল। এতে কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হয় না বিষমুক্ত এ মরিচের তরকারি সুস্বাদু। পরিমাণে লাগেও কম। স্থানীয়ভাবে এ মরিচ ঝালমুড়ি, চটপটি, ফুচকায় ব্যবহার করা হয়। এ মরিচের যেমন ঝাল, তেমনি ঘ্রাণ।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাটের পাহাড়ি এলাকাখ্যাত জা¤ু^রাছড়ার কৃষক আব্দুল সাত্তার মিয়া, আব্দুস শহীদ, আমদু মিয়া, স্বপন বাবু জানান, এখান শুধু ১২ মাস লেবুই চাষ হচ্ছে না, এর সঙ্গে চাষ হচ্ছে নাগা মরিচও। এতে আমরা অনেক লাভবান হচ্ছি। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ মরিচ চাষ করে আর্থিকভাবে আরও লাভবান হবেন বলে তারা জানান।
তারা আরও জানান, প্রতিটি নাগা মরিচ পাইকারি বাজারে কমপক্ষে এক টাকা করে বিক্রি হয়। আর পাইকাররা দুই টাকা করে বিক্রি করেন।
শায়েস্তাগঞ্জ পুরানবাজারের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, ক্রেতাদের কাছে নাগা মরিচের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এতে লাভও বেশি।
ক্রেতা সুজন চৌধুরী বলেন, নাগা মরিচের স্বাদ আলাদা। এতে কোন ভেজাল নেই। তাছাড়া খরচও কম।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহ-আলম জানান, জেলার পাহাড়ের মাটি নাগা মরিচ চাষের উপযোগী। লেবু গাছের নিচে এর চাষ শুরু হয়েছে। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। নাগা চাষে কৃষি বিভাগ থেকে চাষিরা নানা সহযোগিতা পাচ্ছেন। আরো ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করলে এটি রফতানিও করা যাবে। নাগার চাষাবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।