দুদক হটলাইনে কল ৯২ হাজার, অভিযোগ ৩১৫

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  দুর্নীতি রুখবে-১০৬ এমন স্লোগানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চালু হওয়া হটলাইনে কল আসার সংখ্যা ৯২ হাজার ছাড়িয়েছে। বস্তুনিষ্ঠ ও দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হিসেবে গ্রহণ করা অভিযোগের সংখ্যা ৩১৫।

যাত্রা শুরু করার ১০ দিন শেষে ৬ আগস্ট পর্য্ন্ত হটলাইনে অভিযোগকারী বা সেবাগ্রহীতার ফোন এসেছে ৯২ হাজার ৪১৫টি। তবে সরকারি ছুটির দিন ও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে অধিকাংশ ফোন কলে অভিযোগকারী বা সেবাগ্রহীতার বক্তব্য শোনা সম্ভব হয় না। এ ছাড়া রয়েছে উৎসুক জনতার ফোন।

কল রেকর্ডের পরিসংখ্যান নিশ্চিত করে সিস্টেম এনালাইসিস্ট রাজীব হাসান হাওর বার্তাকে বলেন, হটলাইন চালু হওয়ার পর মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভুক্তভোগী মানুষের অভিযোগ করার প্রবণতা বেড়েছে। আমি কেবল কল রেকর্ডের সংখ্যা জানিয়েছি। তবে ওই কলের মধ্যে অধিকাংশ কলে দুদক কথা বলতে পারেনি। তবে হটলাইনের কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে কল রিসিভ হয়েছে।

তিনি বলেন, হটলাইন উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্য্ন্ত তিনশ’র বেশি অভিযোগ আমরা হটলাইন থেকে কমিশনে জমা দিয়েছি। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ না হওয়ায় অধিকাংশ অভিযোগই গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা অভিযোগকারী বা সেবাগ্রহীতার সকল তথ্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।

হটলাইন-১০৬ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল হাওর বার্তাকে বলেন, হটলাইন চালু হওয়ার পর আমরা বেশ সাড়া পাচ্ছি। সবচেয়ে ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে আমাদের কাছে গ্রামীণ জনগণ ফোন করে অভিযোগ জানাচ্ছেন। গ্রমীণ পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। তবে দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অনেক অভিযোগই আমরা গ্রহণ করতে পারি না।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে আভিযোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসছে ভূমি ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের বিষয়ে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদে হয়রানি, জন্ম নিবন্ধন পেতে ঘুষ প্রদান ও পুলিশ সেবায় দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ আসছে। সকল অভিযোগ আমাদের কর্মকর্তারা গুরুত্ব দিয়ে শুনছে। প্রযু্ক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সকলের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অভিযোগকারী সুবিধার জন্য হটলাইনের কল রেকর্ডের সুবিধা রাখা হয়েছে। তিনি চাইলে কলরেকর্ডে তার অভিযোগ রেকর্ড করতে পারেন। যেখান থেকে পরে আমরা শুনে নেব। দুর্নীতির অভিযোগের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে দুদকের তিন পরিচালকের নেতৃত্বে তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা আপতত রাজধানীর মধ্যে অভিযোগের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দুদক পরিচালক জায়েদ হোসেন খান, মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে তিনটি টিম গঠন করে সংস্থাটি। তিনটি টিমের মোট সদস্য সংখ্যা ১২। যারা হটলাইনের অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন। কমিশন থেকে তাদের কাজের সুবিধায় পরিবহনসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আপতত রাজধানীর মধ্যে টিমগুলো কাজ করবে। তবে ভবিষ্যতে রাজধানীর বাইরেও এ ধরনের টিম গঠন করার চিন্তাভাবনা চলছে।

‘যখনই দুর্নীতির ঘটনা, তখনই অভিযোগ’ কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে ফ্রি কল করুন এমন বেশ কয়েকটি স্লোগানে গত ২৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে দুদক হটলাইন। হটলাইন উদ্বোধনের দিনই ফোন আসে ৪ হাজার ৯৫১টি। হটলাইন-১০৬ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সরকারি অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দুদকের হটলাইন-১০৬ নম্বরে ফ্রি কল করা যাবে। হটলাইনে অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা বা পরিচয় কোনো অবস্থাতেই প্রকাশ করা হবে না। কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের তিন তলায় হটলাইন স্থাপন করা হয়েছে। হটলাইন ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর