ঢাকা ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

বর্ষায় বাঙ্গিতে বাজিমাত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৩৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন বরগুনার পাথরঘাটার ছোটট্যাংরা গ্রামের কৃষক মোঃ হানিফ হাওলাদার। ধান চাষে বারবার লোকসান হওয়ায় তার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আর এতেই তিনি বাজিমাত করেছেন।

এদিকে হানিফের দেখাদেখি প্রতিবেশীরাও বর্ষা মৌসুমে করছেন বাঙ্গির চাষ। বলছেন, এই সময়ে বাঙ্গি অনেক সুস্বাদু হওয়ায় এ ফসল চাষ করে তারাও হয়েছেন লাভবান।

কয়েক বছর আগেও অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটত হানিফ হাওলাদারের। ১ একর জমিতে ধান চাষ করতেন তিনি। তবে নিচু এলাকা হওয়ায় লবণ-পানিতে ধান চাষে বারবার লোকসান হতো তাকে। ২ বছর আগে কিছু জমি বিক্রি করে ধান চাষের ১ একর জমিতে মাছের ঘেড় তৈরি করেন তিনি।

ওই টাকায় কিছুটা লাভ হওয়ায় ঘেরের ৪ শতাংশ জমিতে বর্ষা মৌসুমে পরীক্ষামূলক বাঙ্গির চাষ করেন। বাঙ্গির ফলন ভালো হওয়ায় গেল বছর ১ একর জমিতে বাঙ্গি চাষ করেন হানিফ। আশানুরূপ ফলন পান তিনি। বাজারেও বাঙ্গির চাহিদা দেখা দেয় হানিফের আশার চেয়ে বেশি।

ফলে গেল বছরই লাভের টাকায় আরও ৪ একর জমি কিনে এবার বর্ষা মৌসুমে ৫ একর জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন হানিফ। শুধু বাঙ্গি নয়, একই জমিতে তিনি বরবটি, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, করলা, ঝিঙাসহ নানা ধরনের সবজির চাষ করছেন।

বাঙ্গি চাষ করে স্বাবলম্বী হানিফ বলেন, জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে। ৪০ বছরে বারবার পেশা বদল করেছেন। তবে বদলায়নি তার ভাগ্য। অবশেষে বাঙ্গি চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। কিন্তু এ কাজে তাকে কৃষি অফিস থেকে কোনো পরামর্শও দেয়া হয়নি। হানিফের দুই ছেলে সোহেল ও হেলাল লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবাকে সাহায্য করছেন কৃষি কাজে। তারা বলেন, ধান চাষের চেয়ে অধিক লাভ হওয়ায় তারাও নির্দ্বিধায় কৃষি কাজে বাবাকে সাহায্য করছেন। তারা একসময় দুই বেলা খাবার খেয়ে দিন কাটাতেন, লেখাপড়া করার খরচ তাদের বাবা বহন করতে পারতেন না। তবে এখন তারা স্বাবলম্বী।

এদিকে হানিফের দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এখন বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গির চাষ করছেন। তারাও বলছেন, এ মৌসুমে বাঙ্গির চাহিদা ব্যাপক এবং ফলনও ভালো হয়। প্রতিবেশী মমতাজ বেগম ও মঞ্জু রানী বলেন, গেল বছর হানিফের দেখাদেখি তারাও বাঙ্গি চাষ করেছেন। তাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন হানিফ নিজেই। তারা আগে বাড়িতে রান্না-বান্না করেই দিন কাটাতেন। তবে এখন বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গির চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সাইনুর আজম খান জানান, বর্ষা মৌসুমে উঁচু স্থানে বাঙ্গির ফলন ভালো হয়। যে কোনো কৃষক এ মৌসুমে বাঙ্গি চাষ করতে পারেন। সময়মতো প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দেয়া হবে হানিফসহ ওই এলাকার কৃষককে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

বর্ষায় বাঙ্গিতে বাজিমাত

আপডেট টাইম : ১২:৫৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন বরগুনার পাথরঘাটার ছোটট্যাংরা গ্রামের কৃষক মোঃ হানিফ হাওলাদার। ধান চাষে বারবার লোকসান হওয়ায় তার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আর এতেই তিনি বাজিমাত করেছেন।

এদিকে হানিফের দেখাদেখি প্রতিবেশীরাও বর্ষা মৌসুমে করছেন বাঙ্গির চাষ। বলছেন, এই সময়ে বাঙ্গি অনেক সুস্বাদু হওয়ায় এ ফসল চাষ করে তারাও হয়েছেন লাভবান।

কয়েক বছর আগেও অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটত হানিফ হাওলাদারের। ১ একর জমিতে ধান চাষ করতেন তিনি। তবে নিচু এলাকা হওয়ায় লবণ-পানিতে ধান চাষে বারবার লোকসান হতো তাকে। ২ বছর আগে কিছু জমি বিক্রি করে ধান চাষের ১ একর জমিতে মাছের ঘেড় তৈরি করেন তিনি।

ওই টাকায় কিছুটা লাভ হওয়ায় ঘেরের ৪ শতাংশ জমিতে বর্ষা মৌসুমে পরীক্ষামূলক বাঙ্গির চাষ করেন। বাঙ্গির ফলন ভালো হওয়ায় গেল বছর ১ একর জমিতে বাঙ্গি চাষ করেন হানিফ। আশানুরূপ ফলন পান তিনি। বাজারেও বাঙ্গির চাহিদা দেখা দেয় হানিফের আশার চেয়ে বেশি।

ফলে গেল বছরই লাভের টাকায় আরও ৪ একর জমি কিনে এবার বর্ষা মৌসুমে ৫ একর জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন হানিফ। শুধু বাঙ্গি নয়, একই জমিতে তিনি বরবটি, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, করলা, ঝিঙাসহ নানা ধরনের সবজির চাষ করছেন।

বাঙ্গি চাষ করে স্বাবলম্বী হানিফ বলেন, জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে। ৪০ বছরে বারবার পেশা বদল করেছেন। তবে বদলায়নি তার ভাগ্য। অবশেষে বাঙ্গি চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। কিন্তু এ কাজে তাকে কৃষি অফিস থেকে কোনো পরামর্শও দেয়া হয়নি। হানিফের দুই ছেলে সোহেল ও হেলাল লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবাকে সাহায্য করছেন কৃষি কাজে। তারা বলেন, ধান চাষের চেয়ে অধিক লাভ হওয়ায় তারাও নির্দ্বিধায় কৃষি কাজে বাবাকে সাহায্য করছেন। তারা একসময় দুই বেলা খাবার খেয়ে দিন কাটাতেন, লেখাপড়া করার খরচ তাদের বাবা বহন করতে পারতেন না। তবে এখন তারা স্বাবলম্বী।

এদিকে হানিফের দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এখন বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গির চাষ করছেন। তারাও বলছেন, এ মৌসুমে বাঙ্গির চাহিদা ব্যাপক এবং ফলনও ভালো হয়। প্রতিবেশী মমতাজ বেগম ও মঞ্জু রানী বলেন, গেল বছর হানিফের দেখাদেখি তারাও বাঙ্গি চাষ করেছেন। তাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন হানিফ নিজেই। তারা আগে বাড়িতে রান্না-বান্না করেই দিন কাটাতেন। তবে এখন বর্ষা মৌসুমে বাঙ্গির চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সাইনুর আজম খান জানান, বর্ষা মৌসুমে উঁচু স্থানে বাঙ্গির ফলন ভালো হয়। যে কোনো কৃষক এ মৌসুমে বাঙ্গি চাষ করতে পারেন। সময়মতো প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দেয়া হবে হানিফসহ ওই এলাকার কৃষককে।