হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাথার ওপর বিশাল নৌকা, জাতীয় পতাকার মতো করে বানানো পাঞ্জাবি, মাথায় বাঁধা পতাকা আর পিঠের ওপর বিশাল ব্যাগ ঝুলিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাগ্রাম থেকে এক কলেজছাত্র রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য গণভবনের উদ্দেশে। অবশ্য এটা কোনো শখের অ্যাডভেঞ্চার নয়। কোলা গ্রামের চড়া সুদ প্রথা ও দাদন ব্যবসা বাতিলের দাবিতেই সুজন বিশ্বাস নামের এই কলেজ ছাত্রের গণভবনের উদ্দেশে যাত্রা।
বুধবার সকাল ১১টায় কালীগঞ্জ এম ইউ কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুজন বিশ্বাস এ বাইসাইকেল যাত্রা শুরু করেন। এসময় ও গ্রামবাসীরা তাকে বিদায় জানান।
তার এই যাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে সুজন বিশ্বাস বলেন, ‘দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন ঝিনাইদহের নিম্ন আয়ের মানুষ। সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদের বেড়াজালে এরই মধ্যে ভিটেমাটি হারিয়েছেন অনেকে।
টাকা দিতে না পারায় কয়েকটি পরিবার পালিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দিনের পর দিন। আর অসাধু মহাজনদের অত্যাচারের প্রতিকারও মিলছে না কোথাও।
তিনি আরো বলেন, ঝিনাইদহের নিম্ন আয়ের মানুষ নিজেদের জীবন ও জীবিকার জন্য টাকা ধার নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। স্বর্ণালঙ্কার, জমি, স্বাক্ষর করা ব্যাংকের চেক বই ও নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে সুদখোর মহাজনরা অভাবী মানুষদের টাকা দেয়। অভাব-অনটনের কারণে গরিব মানুষেরা ধার-কর্য করে পরবর্তীতে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ টাকা পরিশোধ করেও অনেকেরই মেটেনি দেনার দায়।
কখনো কখনো পাওনা টাকার দোহাই দিয়ে জব্দ করা হচ্ছে ভিটেমাটি অথবা গোয়ালের গরু। এই অবস্থা থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করার জন্যই সুজন বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।