হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। এর আগে দলের সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকদের নিয়ে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। একইসঙ্গে নিরপক্ষে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করুন।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আদালতের এ কথায় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে।’
বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় বুধবার রাতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান অনৈতিক ও অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে যে বা যারা যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিএনপি তাতে সমর্থন জানাবে।’
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ার পর সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার মুহূর্তের মধ্যে পদত্যাগ করতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বর্তমান সরকার অবৈধ ও অনৈতিকভাবে এখনও ক্ষমতায় আছে। যে রায় আপিল বিভাগে দিয়েছেন সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার এতক্ষণে পদত্যাগ করতো। লিখিত রায়ের বলা হচ্ছে, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, সংসদ অকার্যকর এবং আইনের শাসনও নেই। বিচার বিভাগের ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে’ বলেন মির্জা ফখরুল।
সরকার বন্যা দুর্গতদের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণার দাবি জানানো হলেও সরকার কোনো রকম কর্ণপাত না করে শুধুমাত্র লুটতরাজের মধ্য দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
সম্প্রতি বগুড়ায় ধর্ষণের পর মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে একই চিত্র। কোথাও কারো নিরাপত্তা নেই। বিএনপি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। দোষীদের আইনে আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই এসব দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত।’
এ সময় তিনি বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানে কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, নূরে আরা সাফা, আবদুল আওয়াল, মো. মনির হোসেনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।