হাওর বার্তা ডেস্কঃ নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন হলে সেটাকে স্বাগত জানানোর কথা জানিয়েছে দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ছোট ছোট কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বৈঠকের পর উঠা গুঞ্জনের প্রেক্ষিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আলাদা দুটি আয়োজনে বক্তব্য রাখছিলেন কাদের ও ফখরুল। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ডেফোডিল ইউনিভার্সিটিতে মাদকবিরোধী সেমিনারে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা। আর দলের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা।
গত ১৩ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির আ স ম আবদুর রবের বাসায় চা চক্রে অংশ নেন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা। সেখানে ছিলেন বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী।
আবার ২ আগস্ট দিবাগত রাতে বি চৌধুরীর বাসায় বৈঠকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছাড়াও আগের বৈঠকে যোগ দেয়া মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ যোগ দেন।
দীর্ঘদিন ধরেই এসব দলের নেতারা দুই প্রধান দলের বাইরে তৃতীয় শক্তি গঠনের কথা বলে আসছেন। কিন্তু নানা সময় তৃতীয় শক্তির আশা নিয়ে নানা চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে। পোড়খাওয়া এসব রাজনীতিক সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায়ে সফল হননি।
এবারও তৃতীয় শক্তি হিসেবে উত্থানের চেষ্টায় নতুন কোনো জোট গঠনের ঘোষণা আসছে কি না-সেটি বলার সময় এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন নেতারা। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে কথাবার্তা চলছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্রের শত ফুল ফুটছে, ভালো তো। এটাই গণতন্ত্রের বিউটি। জোট হবে, গ্রুপ হবে। এটা হতে হতে থাক অসুবিধা কি?। নির্বাচনকে সামনে রেখে যা হচ্ছে তা ভালো দিক। তবে শেষ পর্যন্ত এ মেরুকরণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।’
কাদের বলেন, ‘তারাতো সেখানে ষড়যন্ত্র করছে না। তারা জোট করছে। অসুবিধা কি? তবে এ জোট শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় না দেখতে হবে, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
‘নির্বাচনে আদর্শগত বিষয়টা মূখ্য নয়। নির্বাচন হলো কৌশলগত ব্যাপার। এখানে আদর্শগতভাবে জোট না হয়ে কৌশলগত, সময়ের প্রয়োজনে নির্বাচনে জেতার জন্য জোট হয়।’
আ স ম রবের বাসায় চা চক্রে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। তবে বি চৌধুরীর বাসায় বৈঠক হয়েছে নির্বিঘ্নে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাধা দেয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে ছিল না। অতি উৎসাহী কেউ করেছে কিনা আমি জানি না। এ ধরণের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সরকারি বা দলীয়ভাবে বাধা দেয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই।’
আ স ম রব এবং বি চৌধুরীর বাসায় বৈঠকের বিষয়ে মির্জা ফখরুলের কাছেও প্রশ্ন ছিল সাংবাদিকদের। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোনো উদ্যোগ যা দেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে তাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। আমরা এখনও মনে করি যারাই অবৈধ, অনৈতিক সরকার, নির্যাতনকারী সরকার, জুলুমবাজ সরকার, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবে আমরা অবশ্যই তাদেরকে স্বাগত জানাব।