ছাতা মাথায় অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহম্মদপুর উপজেলার  সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের বেহাল দশা। জরাজীর্ণ এই ভবনটি বাইরে থেকে দেখে বুঝার কোন উপায় নেই  এই অফিসের ভেতরের আসল চিত্র কি?  অফিসের সকল কক্ষের ছাদ ও পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেয়ালগুলোতে বড় বড় ফাটল। সামান্য বৃষ্টিতেই সকল রুমেই ছাদ বেয়ে পড়ছে পানি। প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র ভিজে যাচ্ছে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে অফিসটিতে। কোন নজর নেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।  এর মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদের পানিপড়া ঠেকাতে অফিসকক্ষেই ছাতা মাথায় দিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের। সংস্কারের অভাবে ভবনটি এখন ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অথচ মহম্মদপুর উপজেলায় এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অফিস যেখান থেকে প্রতি বছর সরকারের রাজস্বখাতে আয় হয় লক্ষ-লক্ষ টাকা। এখানে সব শ্রেণীর মানুষের জায়গা সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করাসহ বিভিন্ন প্রকার ফাইল পত্রাদি, নকল বহি ও দলিল দস্তাবেজ সংরক্ষণ করা হয়। অথচ, কমপক্ষে ২ যুগেরও বেশ সময় ধরে মেরামতের কোন উদ্বেগ নেই এই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটির। সেখানে সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই পুরো অফিসটি বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে হয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা সবগুলো রুমেই উপরে দেয়া হয়েছে পলিথিন কাগজ এবং ফাইল পত্রাদি, নকল বই ও কাগজ পত্রাদি পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় সর্বক্ষণ রাখা হয়। তার মূল কারণ কখন বৃষ্টি আসে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। দেখার যেন কেউ নেই। সেখানে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব পায় সেখানে কোন ফাইল, কাগজ পত্রাদি, নকল বই সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা নেই। এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ভিতরেই দলিল লেখকদের বসার যায়গা সেখানেও তারা নিচে কাঠের পিঁড়ি বানিয়ে রেখেছে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করলেই তাদের চেয়ার টেবিল যেন কাঠের পিড়ার ওপর সহজেই উঠানো যায় তাই এই ব্যবস্থা। মাথার উপরেতো পলিথিন আছেই। তারপরও কেউ দলিল লেখার কাজ সারছেন ছাতা মাথায় দিয়ে। অফিসে বৃষ্টির সময়  ঢুকলেই মনে হবে এই যেন জসিমদ্দিনের দেখা আসমানিদের বাড়ীর একটি অংশ বিশেষ। দলিল লেখক  মিজানুর রহমান, শামসুর রহমান, সাগরসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এভাবেই ঝড় বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে আমরা দলিল লিখার কাজ করছি বছরের পর বছর। বৃষ্টির হলেই প্রতিটি রুমের ভেতরে ছাদ বেয়ে পানি পড়ে জমে থাকে। পানির কারণে অনেক গুরুত্ব পূর্ণ দলিল ও কাগজপত্রাদি নষ্ট হয়ে যায়। কেউ কেউ ছাতা-পলিথিন মাথায় দিয়েই কাজ করে থাকেন। অনেক সময় বৃষ্টির কারণে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  চৌধুরী রওশন ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান,  সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আসলেই বেহালদশা  ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে  সাবরেজিস্টার মো. মামুন বাবরের সাথে কথা বললে তিনি জানান,  আমাদের নিজস্ব জায়গায় রাজবাড়িতে নতুন একটি অফিসভবন তৈরি হয়েছিল।  কিন্তু ভবনটি হস্তান্তর না করার কারনে  নতুন ভবনটিও পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। উপায়ান্তর না পেয়ে  উপজেলার সাবেক আদালত ভবনেই দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।  তিনি আরো বলেন, একাধিকবার ভবনের এ দুর্দশার কথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কিন্তু কোন ফল মেলেনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর