পানি পান করেই যেভাবে বিকল হচ্ছে কিডনি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  আমাদের শরীরে প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগই পানি। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে তাই পানি পানের বিকল্প নেই। পানি শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে এবং হজম ভালো রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পানি পানের যেমন সুফল আছে, তেমনি অপর্যাপ্ত পানি পানের কারণে পড়তে হয় নানা সমস্যায়।প্রাপ্তবয়স্ক ও কর্মক্ষম নারী-পুরুষের প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে দিনে কতটুকু পানি পান করতে হবে, তা নির্ভর করে মূলত আবহাওয়া ও শারীরিক শ্রমের ওপর। শীতকালের চেয়ে গরমকালে শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায় আবহাওয়ার কারণেই। আর যাঁরা কায়িক পরিশ্রম বেশি করেন, তাঁদের বেশি পানি পান করতে হবে। যারা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘামেন, তাঁদের জন্য একটু বেশি পানি পান করা জরুরি। অনেকে মনে করেন সকালে খালি পেটে অনেক পানি পান করা ভালো। এর সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। তবে কিছু শারীরিক সমস্যায় এই অভ্যাসে উপকার পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সাধারণভাবে যখনই পানির তৃষ্ণা তৈরি হবে, তখনই পানি পান করে শরীরের ঘাটতি মেটানো উচিত।

কখন বুঝবেন পানি শূন্যতায় ভুগছেন

বেশি পিপাসা লাগলে, গাঢ় হলুদ বর্ণের প্রস্রাব, প্রস্রাবে গন্ধ থাকলে বুঝবেন পানিশূন্যতা হচ্ছে ; শরীরে পানি অভাব হয়েছে। এছাড়া সামান্য মাথা ব্যথা, শুষ্ক মুখ, আলস্যও লাগাও পানি শূন্যতার লক্ষণ। প্রবীণ লোকেরাও কখনো কখনো পানি শূন্যতার বিষয়টি টের পান না। এদের সমস্যাগুলোও প্রায় একই ধরনের হয় এই সময়ে। এ রকম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

কখন বুঝবেন শরীরে বেশি পানি হচ্ছে?

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তবে বেশি পানি পান করলে ইনটোক্সিকেশন এবং সোডিয়ামের মাত্রা অনেক নিচে নেমে হাইপোনেট্রেমিয়া হতে পারে। অনেক সময় এথলেটদের এই সমস্যা দেখা যায়।

আবার কখনো শারীরিক অসুস্থতার কিছু কারণে শরীর বেশি পানি গ্রহণ করতে পারে না। কিডনি এবং হার্টের সমস্যায় এই বিষয়টি হয়। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই পানি পান করা উচিত।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি আসে যখন মানুষকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হয়। যদি আট ঘণ্টার বেশি প্রস্রাব না হয়, অবসন্ন লাগে, দ্রুত হৃদ স্পন্দন হয়, খুব বেশি পানি পিপাসা লাগে- এমনকি সেটা ডায়াবেটিস রোগীর বেলায়ও, তখন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া জরুরি।

তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। বেশিও নয়,কমও নয়। শরীরের কথা শুনুন। তবে কিছু উল্টোপাল্টা মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অনেক সময়ই আমরা দাঁড়িয়ে পানি খাই। তাতেই ডেকে আনছি বিপদ। একটা নয়, একগুচ্ছ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। বিকল হচ্ছে কিডনি। ভাবছেন, এ আবার কী উদ্ভুতুড়ে কথা? পানি খাওয়ার আবার কোনও নিয়ম হয় নাকি? শুনতে অবাক লাগলেও বিষয়টা সত্যি।

ফাইল ছবি

পানি- শরীরে জলের গুরুত্ব অসীম। কিন্তু এই পানি খাওয়ারও কিছু নিয়ম কানুন আছে। রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ঢকঢক করে পানি খাওয়া আমরা হামেশাই করে থাকি। এমনকি বাড়িতেও। এই দাঁড়িয়ে জল খাওয়াতেই তৈরি হচ্ছে বিপদ। শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ।

দাঁড়িয়ে পানি খাওয়ার বিপদ:

টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে-পানি খাওয়ার পরেই ছাঁকনিগুলো শরীর পরিস্রুত করার কাজ শুরু করে দেয়। দাঁড়িয়ে পানি খেলে শরীরের অন্দরে থাকা ছাকনিগুলি সংকুচিত হয়ে যায়। পরিস্রুত করার কাজ বাধা পায়। শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে।

পাকস্থলীতে ক্ষত তৈরি হয়-দাঁড়িয়ে পানি খেলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। স্টমাক থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণা সহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয়।

আর্থারাইটিসের আশঙ্কা-শরীরের মধ্যে থাকা কিছু উপকারী রাসায়নিকের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে জয়েন্টের কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেখান থেকে আর্থারাইটিসের আশঙ্কা বাড়ে।

উদ্বেগ বাড়ে-দাঁড়িয়ে পানি খেলে নার্ভ উত্তেজিত হয়ে যায়। উদ্বেগ বাড়তে থাকে।

কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়- দাঁড়িয়ে পানি খেলে কিডনির কর্মক্ষমতা কমে। কিডনি ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে।

G.E.R.D রোগ শরীরে বাসা বাঁধে-দাঁড়িয়ে পানি খেলে তা সরাসরি ইসোফেগাসে গিয়ে ধাক্কা মারে। এরফলে পাকস্থলীর ভেতরের সরু নালিটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা G.E.R.D এর মতো রোগ শরীরে বাসা বাঁধে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর