হাওর বার্তা ডেস্কঃ জামালপুর জেলার সার্বিক উন্নয়নে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবার জামালপুর জেলার ১৬টি স্কুল-কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও সংস্কার কাজের জন্য ১৩৭ কোটি ৫৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এই ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ ও সংস্কার কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করে এ বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে ৫টি কলেজ ও ১১টি স্কুলে এ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
জামালপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর জেলার ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বকশীগঞ্জ সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ ১২ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মাদারগঞ্জ এএইচজেড সরকারি কলেজ ১২ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মেলান্দহ সরকারি কলেজ ১২ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, জামালপুর সরকারি জাহেদা সফির মহিলা কলেজ ১২ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও মেলান্দহের আলেয়া আজম কলেজ ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৮ কোটি ৮১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, বকশীগঞ্জ উলফাতুন নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৮ কোটি ৮১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৭ কোটি ৭৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, জামালপুর জিলা স্কুল ১৭ কোটি ৭৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, নান্দিনা মহারানী হেমন্ত কুমারী পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, বালিজুড়ি রওশন আরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৮ কোটি ৮১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, মেলান্দহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৮ কোটি ৮১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, তুলসীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রুকনাই উচ্চ বিদ্যালয় ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হরিপুর হোসেনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও চাড়াইলদার জাহানারা হাবিব দাখিল মাদরাসা ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জামালপুরে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। জামালপুর জেলার তিনটি পৌরসভা মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও জামালপুর পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও এনভায়রমেন্টাল স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নীতকরণের প্রায় ৭৭ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। একনেকে অনুমোদিত হয়েছে ২১২ কোটি টাকার জামালপুর রেলওয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প। আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জামালপুর শহরকে সম্পূর্ণভাবে যানজটমুক্ত করতে ৩৩ কোটি টাকায় নির্মিত বাইপাস সড়ক চালু হয়েছে। জামালপুর শহরের ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে নদীর পার দিয়ে প্রথম পর্যায়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আরেকটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। অপরদিকে জামালপুর শহরের মাছিমপুর থেকে বেলটিয়া পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
জামালপুর শহরের বজরাপুর এলাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাশে সাড়ে ৫ একর আয়তনের জমিতে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্ক নির্মাণ প্রকল্পও একনেক থেকে পাস হয়েছে। জামালপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বৈশাখী মেলা মাঠ, দয়াময়ী মন্দির ও কাছারি শাহি জামে মসজিদ এলাকায় ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক চিত্তাকর্ষক সাংস্কৃতিক পল্লী গড়ে তোলার কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে জামালপুরের দিগপাইতে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু হয়েছে। সদর উপজেলার লক্ষীরচরে আরও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেলান্দহে হচ্ছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। মেলান্দহের মালঞ্চ এলাকায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পাওয়া গেছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই সেখানে সম্মান শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। জামালপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। শহরের পলাশগড়ে ৭১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকায় মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া টেক্সটাইল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ডায়াবেটিক হাসপাতাল হচ্ছে। জামালপুর সদরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। জামালপুর সদরের বিনন্দেরপাড়ায় ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হচ্ছে। মাদারগঞ্জের কাজিয়ারর চরে হচ্ছে ২০০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। লক্ষ্য রয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যে জেলার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার।
এছাড়াও জামালপুর পৌরসভার সেবার মান বাড়াতে নানা পরিকল্পনা ও প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাঁকাতেরা সোজা করে জামালপুর-মুক্তাগাছা আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ, জামালপুর-গাজীপুর রুটে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণসহ সারা জেলার আরও অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এভাবে জামালপুরকে উন্নয়নের রোল মডেল এবং বহুমাত্রিক উন্নয়নের স্রোতধারায় উদ্ভাসিত করতে কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।