ঢাকা ০৬:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিকন গুনিয়া, ডেঙ্গু ভালো হয়,আপনার ঘরেই ঔষধ,আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭
  • ৩৪৭ বার

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে যে পেপে পাতা ডেঙ্গুর জন্য বেশ কার্যকরী প্রতিষেধক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পেপে পাতার রসে থ্রম্বোসাইটিস (প্লাটিলেট) উৎপাদনে সাহায্যকারী উপাদান রয়েছে। গবেষণাটির প্রধান গবেষক ছিলেন AIMST ভার্সিটির প্রফেসর ডক্টর এস. কাঠিরেসান। ডক্টর এস. কাঠিরেসান এর মতে ডেঙ্গুর ভাইরাস মূলত আমাদের রক্তের প্লেটলেট কমিয়ে দেয়। সাধারণত প্লেটলেটের জীবনকাল ৫ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত।

এরপরে আবার প্রয়োজন অনুসারে নতুন প্লেটলেট উৎপাদন হয়। ডেঙ্গুর ভাইরাস শরীরে যতদিন কার্যকর থাকে ততদিন পর্যন্ত নতুন শরীরে নতুন প্লেটলেট উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে ভূমিকা রাখে। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তের স্বাভাবিক প্লেটলেটের পরিমাণ হলো প্রতি মাইক্রো লিটারে ১৫০,০০০ থেকে ২৫০,০০০ পর্যন্ত। ডেঙ্গু হলে এই প্লেটলেটের সংখ্যা খুব দ্রুত কমে যেতে থাকে।

তার মতে, ১০০,০০০ এর নিচে প্লেটলেট লেভেল চলে আসলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারেন। প্লেটলেট লেভেল যদি ৫০০০০ এ নেমে আসে তাহলে থ্রমবোসাইটোপেনিয়া হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তাই ডেঙ্গু হলে প্লেটলেট পরীক্ষা করে দেখা হয়। প্লেটলেট খুব কমে গেলে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।

প্লেটলেটের পরিমাণ যখন অস্বাভাবিক কমে যায় তখন রক্ত জমাট বাধতে শুরু করে এবং হ্যামোরেজিং হতে পারে। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ হয় এবং রোগীর মৃত্যু ঘটে। পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর প্রতিষেধক এটা নিয়ে অনেক মানুষ দ্বিমত পোষন করেছে। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা রিসার্চ সেন্টারের গবেষক নাম ড্যাং এর মতে পেঁপে পাতার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং তা ডেঙ্গু জ্বর খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে।

এমনকি পেঁপে পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে। শ্রীলঙ্কার ফিজিশিয়ান ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেপে গাছের কচি পাতার রস ডেঙ্গুর ওষুধ হিসেবে খুবই উপকারী। তার এই গবেষণাটি ২০০৮ সালে শ্রীলংকান জার্নাল অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস এ প্রকাশিত হয়েছিলো।

যেভাবে কাজ করে

ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেঁপে পাতায় কিমোপাপিন ও পাপেইন নামে দুটি এনজাইম আছে। এই উপাদান দুটি প্লেটলেট উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে।

এছাড়াও এগুলো ডেঙ্গুর কারণে লিভারের কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে সেটা ঠিক হতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপে পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন যা বোন ম্যারোকে প্রচুর পরিমাণে প্লেটলেট উৎপাদন করতে সহায়তা করে।

যেভাবে খেতে পারেন
ডাক্তার সানাথ হেট্টিগের মতে পেপে পাতার রস খেতে হলে মোটামুটি কচি পাতা বেছে নেয়া উচিত। এরপর এই পাতা খুব ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে অথবা বেটে রস বের করে ছেঁকে নিতে হবে।

এর সঙ্গে কোনো চিনি কিংবা লবণ দেয়া যাবে না। প্রাপ্ত বয়স্কদের দিনে দুবার ৮ ঘন্টার বিরতি দিয়ে ১০ মিলি লিটার পরিমাণ পেপের রস খাওয়া উচিত। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সিদের ৫ মিলি লিটার ও ৫ বছরের ছোটদের ২.৫ মিলি লিটার পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত।

কখন খেতে হবে
ডাক্তার সানাথের মতে ডেঙ্গু জ্বর হলেই পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত। রক্তের প্লেটলেট লেভেল ১৫০,০০০ এর নিচে নামতে শুরু করলেই পেপে পাতার রস দুই বেলা করে খাওয়া শুরু করতে হবে। তবে সেই সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শে অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবাও নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

চিকন গুনিয়া, ডেঙ্গু ভালো হয়,আপনার ঘরেই ঔষধ,আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত

আপডেট টাইম : ১০:১০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে যে পেপে পাতা ডেঙ্গুর জন্য বেশ কার্যকরী প্রতিষেধক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পেপে পাতার রসে থ্রম্বোসাইটিস (প্লাটিলেট) উৎপাদনে সাহায্যকারী উপাদান রয়েছে। গবেষণাটির প্রধান গবেষক ছিলেন AIMST ভার্সিটির প্রফেসর ডক্টর এস. কাঠিরেসান। ডক্টর এস. কাঠিরেসান এর মতে ডেঙ্গুর ভাইরাস মূলত আমাদের রক্তের প্লেটলেট কমিয়ে দেয়। সাধারণত প্লেটলেটের জীবনকাল ৫ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত।

এরপরে আবার প্রয়োজন অনুসারে নতুন প্লেটলেট উৎপাদন হয়। ডেঙ্গুর ভাইরাস শরীরে যতদিন কার্যকর থাকে ততদিন পর্যন্ত নতুন শরীরে নতুন প্লেটলেট উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে ভূমিকা রাখে। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তের স্বাভাবিক প্লেটলেটের পরিমাণ হলো প্রতি মাইক্রো লিটারে ১৫০,০০০ থেকে ২৫০,০০০ পর্যন্ত। ডেঙ্গু হলে এই প্লেটলেটের সংখ্যা খুব দ্রুত কমে যেতে থাকে।

তার মতে, ১০০,০০০ এর নিচে প্লেটলেট লেভেল চলে আসলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারেন। প্লেটলেট লেভেল যদি ৫০০০০ এ নেমে আসে তাহলে থ্রমবোসাইটোপেনিয়া হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তাই ডেঙ্গু হলে প্লেটলেট পরীক্ষা করে দেখা হয়। প্লেটলেট খুব কমে গেলে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।

প্লেটলেটের পরিমাণ যখন অস্বাভাবিক কমে যায় তখন রক্ত জমাট বাধতে শুরু করে এবং হ্যামোরেজিং হতে পারে। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ হয় এবং রোগীর মৃত্যু ঘটে। পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর প্রতিষেধক এটা নিয়ে অনেক মানুষ দ্বিমত পোষন করেছে। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা রিসার্চ সেন্টারের গবেষক নাম ড্যাং এর মতে পেঁপে পাতার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং তা ডেঙ্গু জ্বর খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে।

এমনকি পেঁপে পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে। শ্রীলঙ্কার ফিজিশিয়ান ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেপে গাছের কচি পাতার রস ডেঙ্গুর ওষুধ হিসেবে খুবই উপকারী। তার এই গবেষণাটি ২০০৮ সালে শ্রীলংকান জার্নাল অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস এ প্রকাশিত হয়েছিলো।

যেভাবে কাজ করে

ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেঁপে পাতায় কিমোপাপিন ও পাপেইন নামে দুটি এনজাইম আছে। এই উপাদান দুটি প্লেটলেট উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে।

এছাড়াও এগুলো ডেঙ্গুর কারণে লিভারের কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে সেটা ঠিক হতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপে পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন যা বোন ম্যারোকে প্রচুর পরিমাণে প্লেটলেট উৎপাদন করতে সহায়তা করে।

যেভাবে খেতে পারেন
ডাক্তার সানাথ হেট্টিগের মতে পেপে পাতার রস খেতে হলে মোটামুটি কচি পাতা বেছে নেয়া উচিত। এরপর এই পাতা খুব ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে অথবা বেটে রস বের করে ছেঁকে নিতে হবে।

এর সঙ্গে কোনো চিনি কিংবা লবণ দেয়া যাবে না। প্রাপ্ত বয়স্কদের দিনে দুবার ৮ ঘন্টার বিরতি দিয়ে ১০ মিলি লিটার পরিমাণ পেপের রস খাওয়া উচিত। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সিদের ৫ মিলি লিটার ও ৫ বছরের ছোটদের ২.৫ মিলি লিটার পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত।

কখন খেতে হবে
ডাক্তার সানাথের মতে ডেঙ্গু জ্বর হলেই পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত। রক্তের প্লেটলেট লেভেল ১৫০,০০০ এর নিচে নামতে শুরু করলেই পেপে পাতার রস দুই বেলা করে খাওয়া শুরু করতে হবে। তবে সেই সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শে অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবাও নিতে হবে।