কয়েকদিনের মধ্যে চালের দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা করে কমবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চাল আমদানির শুল্ক হার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এখন শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ শতাংশ। ফলে কয়েকদিনের মধ্যে চালের দাম কমে যাবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ বিষয়ে এক অবহিতকরণ কর্মশালায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চালের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত চাল মজুদ রয়েছে। অসাধু মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারি রয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘কয়েক লাখ টন ধান উৎপাদন কম হয়েছে। এই সুযোগটা নিয়েছে যারা মিলের মালিক। চাল কিন্তু আছে, টাকা দিলে আপনি চাল পাবেন। তার মানে খাদ্যের অভাব নেই কিন্তু যখন এই শুল্কহারটা কমিয়ে দেওয়া হলো ১৮ শতাংশ, তাতে প্রতি কেজি ৬ টাকা কম পড়বে। এটা চল্লিশের নিচে কমে আসবে। আমরা যদি এটা আগেই কমিয়ে দিতাম তাহলে ভালো হতো’ মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ব্যবসাবান্ধব সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। স্থানীয়ভাবে পণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করে ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ, মনোপলি, জোটবদ্ধতার মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারসাজি ও প্রবণতা বন্ধ করতে সরকার ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন পাস করেছে। সে মোতাবেক প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়েছে। দেশে স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতা কমিশন সে লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বাজেট নিয়ে আতংকিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের মানুষের প্রত্যাশামতো সংশোধিত আকারে পাস হবে। সংশোধন করে বাজেটকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে যাতে দেশের সবাই খুশি হবেন। এটি পাসের পর আর কোনো আলোচনা বা সমালোচনা থাকবে না।
পাহাড়ধসের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে অপ্রত্যাশিত প্রাণহানির ঘটনা দুঃখজনক। উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর থেকেই সরকার উদ্ধার কাজসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই করে যাচ্ছে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শুভাশীষ বসু।
মূল আলোচক ছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এ. কে. এনামূল হক।
প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য এটিএম মুর্তজা রেজা চৌধুরী, মো. আবুল হোসেন মিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক, প্রধান আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রক আফরোজা খান, জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার মো. মোশাররফ হোসেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্করসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।