ক’দিন ধরেই তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনজীবন। বেলা বাড়ার সঙ্গে তাতিয়ে ওঠা রোদে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে গরম, অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ঘাম ঝরা গরমে বাড়ছে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ। বৃষ্টির প্রতীক্ষায় মানুষ প্রহর গুনলেও আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, অতিদ্রুত বৃষ্টির সম্ভাবনা তারা দেখছেন না। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এখন যে তাপমাত্রা আছে সেটি আগামী দুই থেকে তিন দিন বজায় থাকবে। এর উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হবে না। আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন জানান, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। রাজশাহী, ঈশ্বরদী, পাবনা ও মাইজদীকোর্ট অঞ্চলসহ কোথাও কোথাও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়ার এই অদ্ভূত আচরণে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে বাসিন্দাদের কাছে। শহরে চলাচলকারী বাসগুলোর বেশিরভাগেই ফ্যান চলে না। ভ্যাপসা গরমে গাদাগাদি করে অফিসে যেতে হচ্ছে সবাইকে। হাসপাতালে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বেশি। শিশু ও বৃদ্ধদেরও সমস্যা অনেক। রাজধানীতে অতিরিক্ত গরমের কারণে রিকশা চালানো থেকে বিরত থাকছে অনেক চালক। আর যারা চালাচ্ছে তারা ঘন ঘন ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে। গরমের কারণে রিকশাচালকরাও একই দূরত্বে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে বলে জানায় পথচারীরা। দিনমজুরদের কাজেও অনেক বেশি কষ্ট সইতে হচ্ছে। গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে পথচারীরা শরবত খাচ্ছে ফুটপাত থেকে। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে থাকলে মাঝারি মাপের তাপপ্রবাহ বলে বর্ণনা করা হয়। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে এখন তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির দিকে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাতাসের আর্দ্রতা, যা গরমের ভাবকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বছরটি অন্য বছরের চেয়ে ব্যতিক্রম ছিল বলে মনে করে আবহাওয়া অধিদফতর। কারণ এবার মার্চ-এপ্রিল মাসে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত মাসে ২০০ শতাংশ বৃষ্টি বেশি হয়েছে। এখন তাপমাত্রা যা থাকার কথা তার চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি বেশি আছে। গরমে পানিশূন্যতাজনিত রোগ-বালাইয়ের পাশাপাশি জ্বর, গলা বসাসহ নানা ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে। এই গরমে সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে দেখা দিতে পারে ‘হিটস্ট্রোক’। চিকিত্সকরা বলছেন, শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে প্রচণ্ড গরমের কারণে যখন ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যাবে তখনই তাকে হিটস্ট্রোক বলা হয়। এই হিটস্ট্রোক মৃত্যুঝুঁকির কারণও হতে পারে। তাই দরকার সতর্কতা এবং সাবধানতা। গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করা, ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান, দিনে একাধিকবার গোসল করা, ছাতা নিয়ে বাইরে বের হওয়া, হোটেলের খাবার খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া শাক-সবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সংবাদ শিরোনাম
গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত, বাড়ছে অসুখ-বিসুখ: বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
- Reporter Name
- আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০১৭
- ৫১৪ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ