ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিজিটাইজেশনের নামে বাংলা হরফ বিপন্ন হওয়ার পথে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৭:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০১৭
  • ৪০৮ বার

কম্পিউটারে বাংলা লেখার ফন্টের উদ্ভাবক মোস্তফা জব্বার বলেছেন, বাংলা হরফের খুব দুর্দিন চলছে। আমরা এমন একটি অবস্থায় আছি যাকে বলা যায় বাংলা হরফ বিপন্ন হওয়ার পথে। ডিজিটাইজেশনের নামে বাংলা ভাষাকেও বিদায় করা হচ্ছে। অবাক হবেন একজন সাধারণ মানুষ একটি মোবাইলের সিম কিনতে গেলে ইংরেজিতে ফর্ম পূরণ করতে হয়। আগামীতে একজন মুদি দোকানদার তাকে ভ্যাট দেখাতে হবে ইংরেজিতে। আমাদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ সফটওয়্যার শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা। কোর্টে কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলা-ইংরেজি করা হয়। ইংরেজিটা আগে করে, বাংলাটা পরে।

সোমবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলা ফন্টের বিবর্তন নিয়ে আলোচনায় প্রধান বক্তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মোস্তফা জব্বার। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- বাংলা ফন্টের নকশাকার হামিদুল ইসলাম, পিআইবির কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও বাংলা উইকিপিডিয়ার নুরুন্নবী চৌধুরী হাসিব।

মোস্তফা জব্বার বলেন, আরেকটি প্রবণতা সেটি হচ্ছে রোমান হরফ দিয়ে বাংলা লেখা। এই অভ্র সফটওয়্যার বাঙালিকে শিখিয়েছে কীভাবে ইংরেজি হরফ দিয়ে বাংলা লিখতে হয়। এক হিসেবে সরকার এর পৃষ্ঠপোষকতা করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শিক্ষকসহ সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কেমন করে ইংরেজি হরফ দিয়ে বাংলা লিখতে হয়। এর ফলে বাংলা ভাষার কী চরিত্র দাঁড়ায়, যারা ফেইসবুক ব্যবহার করে তারা অন্তত বুঝতে পারে বাংলা বানানের কী অবস্থা দাঁড়ায়। রোমান হরফ দিয়ে যখন বাংলা লেখে তখন এটি ভয়ঙ্কর একটি পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, বাংলা হরফের উন্নয়নে স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত আমাদের এ বাংলার মানুষের কোন অবদান নেই। তখন আমরা সবকিছু কলকাতা থেকে আমদানি করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমরা বাংলা লেখার সফটওয়্যার ভারতে রফতানি করছি।

সভাপতির বক্তব্যে ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা হরফের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বর্তমানে কম্পিউটারভিত্তিক বাংলা লেখার বিভিন্ন ধরণ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচকরা নিজেদের মধ্যে বাংলা ব্যবহারের বাড়ানোর তাগিদ দেন। সরকারি কাজে ও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে বাংলার প্রচলনেরও দাবি জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিজিটাইজেশনের নামে বাংলা হরফ বিপন্ন হওয়ার পথে

আপডেট টাইম : ১২:৪৭:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০১৭

কম্পিউটারে বাংলা লেখার ফন্টের উদ্ভাবক মোস্তফা জব্বার বলেছেন, বাংলা হরফের খুব দুর্দিন চলছে। আমরা এমন একটি অবস্থায় আছি যাকে বলা যায় বাংলা হরফ বিপন্ন হওয়ার পথে। ডিজিটাইজেশনের নামে বাংলা ভাষাকেও বিদায় করা হচ্ছে। অবাক হবেন একজন সাধারণ মানুষ একটি মোবাইলের সিম কিনতে গেলে ইংরেজিতে ফর্ম পূরণ করতে হয়। আগামীতে একজন মুদি দোকানদার তাকে ভ্যাট দেখাতে হবে ইংরেজিতে। আমাদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ সফটওয়্যার শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা। কোর্টে কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলা-ইংরেজি করা হয়। ইংরেজিটা আগে করে, বাংলাটা পরে।

সোমবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলা ফন্টের বিবর্তন নিয়ে আলোচনায় প্রধান বক্তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মোস্তফা জব্বার। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- বাংলা ফন্টের নকশাকার হামিদুল ইসলাম, পিআইবির কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও বাংলা উইকিপিডিয়ার নুরুন্নবী চৌধুরী হাসিব।

মোস্তফা জব্বার বলেন, আরেকটি প্রবণতা সেটি হচ্ছে রোমান হরফ দিয়ে বাংলা লেখা। এই অভ্র সফটওয়্যার বাঙালিকে শিখিয়েছে কীভাবে ইংরেজি হরফ দিয়ে বাংলা লিখতে হয়। এক হিসেবে সরকার এর পৃষ্ঠপোষকতা করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শিক্ষকসহ সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কেমন করে ইংরেজি হরফ দিয়ে বাংলা লিখতে হয়। এর ফলে বাংলা ভাষার কী চরিত্র দাঁড়ায়, যারা ফেইসবুক ব্যবহার করে তারা অন্তত বুঝতে পারে বাংলা বানানের কী অবস্থা দাঁড়ায়। রোমান হরফ দিয়ে যখন বাংলা লেখে তখন এটি ভয়ঙ্কর একটি পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, বাংলা হরফের উন্নয়নে স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত আমাদের এ বাংলার মানুষের কোন অবদান নেই। তখন আমরা সবকিছু কলকাতা থেকে আমদানি করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমরা বাংলা লেখার সফটওয়্যার ভারতে রফতানি করছি।

সভাপতির বক্তব্যে ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা হরফের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বর্তমানে কম্পিউটারভিত্তিক বাংলা লেখার বিভিন্ন ধরণ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচকরা নিজেদের মধ্যে বাংলা ব্যবহারের বাড়ানোর তাগিদ দেন। সরকারি কাজে ও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে বাংলার প্রচলনেরও দাবি জানান তিনি।