ঢাকা ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভৈরবে উজানের পানিতে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৭৬ বার

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে ভৈরবের কৃষকদের স্বপ্ন। ভৈরবের তিনটি ইউনিয়নে ১ হাজার হেক্টর জমির আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা।

মেঘনা নদীর শাখা ডিপচর, বাটচর, শ্যামপুর ও কালী নদীর ওরাল খালের তীরবর্তী এলাকায় শত শত কৃষক এসব জমিতে বোরো ধানের ফসল করেছিলেন।

ফসলি জমির ধান এখন আধাপাকা অবস্থায় ছিল। আগামী কয়েকদিনের মধ্যই ধান পাকলে কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতেন। কিন্তু অস্বাভাবিক জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলে ফসল তলিয়ে গেছে। উজানের পানি কেড়ে নিয়েছে কৃষকের মুখের হাসি। এখন শুধু হাহাকার আর কান্না চলছে ভৈরবের এসব কৃষকের।

উপজেলার আগানগর, সাদেকপুর ও শ্রীনগর ইউনিয়ন এলাকায়ই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এই এলাকার কৃষকরা আধা ডোবা পানি থেকে আতঙ্কিত হয়ে আধাপাকা ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে গেছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষি অফিস ফসলের ক্ষতি এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা হতে পারে বলে তারা জানান। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যাও প্রায় ৮০০।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, ফসল তলিয়ে গেল এবার পরিবার নিয়ে সারা বছর খাব কি।

জানা গেছে ভৈরব উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৭ টি ইউনিয়নে এবছর ৬ হাজার ২ শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। তার মধ্য ৩ টি ইউনিয়নের জমি অধিকাংশই নিচু এলাকা হওয়ায় কৃষকরা এসব জমিতে বি আর-২৮ ধান রোপন করেন। বিআর-২৯ ধান যেখানে ১২০ দিনে ফলন হয় সেখানে বি আর-২৮ ধান রোপন করলে ১০৫ দিনের মধ্যই ফসল ঘরে তোলা যায় বলে কৃষি অফিস জানায়।

গত কয়েক বছরের মধ্য এরকম দুর্যোগ আসেনি বলে স্থানীয় কৃষক হারুন মিয়া জানান।

আগানগর এলাকার কৃষক মো. মুছা মিয়া বলেন, আমি এবার ৭ বিঘা জমিতে ধান করেছিলাম। কিন্তু পানিতে সবই তলিয়ে গেছে। তাই এবার ঘরে চাল থাকবে না।

কৃষক হামিদ মিয়া জানান, ছয় বিঘা জমি করে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ব্যাংক ঋণসহ ধার দেনা এবার কি করে পরিশোধ করব ভেবে কুল পাচ্ছি না। এলাকার অনেক কৃষক ডুবে যাওয়া কাঁচা ধান কেটে আনলেও তারা বলছেন গোখাদ্যের খড়ের জন্য এসব ধান কেটে আনা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জালাল উদ্দিন জানান, অস্বাভাবিক জোয়ার আর উজানের পানি হঠাৎ করে এসে বোরো ফসলের ধানের জমি তলিয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের কোনো হাত নেই।

তিনি বলেন কৃষি অফিস ক্ষতির পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে নিরুপণ করতে পারেনি। তবে ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেলেও প্রকৃত ক্ষতি ৪শ হেক্টর হতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

তার ভাষ্য, এতে কয়েক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হবে। ঢাকাটাইমস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ভৈরবে উজানের পানিতে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন

আপডেট টাইম : ১১:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০১৭

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে ভৈরবের কৃষকদের স্বপ্ন। ভৈরবের তিনটি ইউনিয়নে ১ হাজার হেক্টর জমির আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা।

মেঘনা নদীর শাখা ডিপচর, বাটচর, শ্যামপুর ও কালী নদীর ওরাল খালের তীরবর্তী এলাকায় শত শত কৃষক এসব জমিতে বোরো ধানের ফসল করেছিলেন।

ফসলি জমির ধান এখন আধাপাকা অবস্থায় ছিল। আগামী কয়েকদিনের মধ্যই ধান পাকলে কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতেন। কিন্তু অস্বাভাবিক জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলে ফসল তলিয়ে গেছে। উজানের পানি কেড়ে নিয়েছে কৃষকের মুখের হাসি। এখন শুধু হাহাকার আর কান্না চলছে ভৈরবের এসব কৃষকের।

উপজেলার আগানগর, সাদেকপুর ও শ্রীনগর ইউনিয়ন এলাকায়ই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এই এলাকার কৃষকরা আধা ডোবা পানি থেকে আতঙ্কিত হয়ে আধাপাকা ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে গেছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষি অফিস ফসলের ক্ষতি এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা হতে পারে বলে তারা জানান। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যাও প্রায় ৮০০।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, ফসল তলিয়ে গেল এবার পরিবার নিয়ে সারা বছর খাব কি।

জানা গেছে ভৈরব উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৭ টি ইউনিয়নে এবছর ৬ হাজার ২ শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। তার মধ্য ৩ টি ইউনিয়নের জমি অধিকাংশই নিচু এলাকা হওয়ায় কৃষকরা এসব জমিতে বি আর-২৮ ধান রোপন করেন। বিআর-২৯ ধান যেখানে ১২০ দিনে ফলন হয় সেখানে বি আর-২৮ ধান রোপন করলে ১০৫ দিনের মধ্যই ফসল ঘরে তোলা যায় বলে কৃষি অফিস জানায়।

গত কয়েক বছরের মধ্য এরকম দুর্যোগ আসেনি বলে স্থানীয় কৃষক হারুন মিয়া জানান।

আগানগর এলাকার কৃষক মো. মুছা মিয়া বলেন, আমি এবার ৭ বিঘা জমিতে ধান করেছিলাম। কিন্তু পানিতে সবই তলিয়ে গেছে। তাই এবার ঘরে চাল থাকবে না।

কৃষক হামিদ মিয়া জানান, ছয় বিঘা জমি করে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ব্যাংক ঋণসহ ধার দেনা এবার কি করে পরিশোধ করব ভেবে কুল পাচ্ছি না। এলাকার অনেক কৃষক ডুবে যাওয়া কাঁচা ধান কেটে আনলেও তারা বলছেন গোখাদ্যের খড়ের জন্য এসব ধান কেটে আনা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জালাল উদ্দিন জানান, অস্বাভাবিক জোয়ার আর উজানের পানি হঠাৎ করে এসে বোরো ফসলের ধানের জমি তলিয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের কোনো হাত নেই।

তিনি বলেন কৃষি অফিস ক্ষতির পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে নিরুপণ করতে পারেনি। তবে ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেলেও প্রকৃত ক্ষতি ৪শ হেক্টর হতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

তার ভাষ্য, এতে কয়েক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হবে। ঢাকাটাইমস