কটিয়াদীতে আটক বাণিজ্য ধামাচাপা দিতে এফআইআর বইয়ের পাতা ছিঁড়ে একই নম্বরে দু’টো মামলা রুজু করার ঘটনায় আলোচিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান উল্লাহকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে কটিয়াদী থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। মো. আহসান উল্লাহর স্থলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির রব্বানীকে। অন্যদিকে মো. জাকির রব্বানীর স্থলে শুক্রবার করিমগঞ্জ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন হোসেনপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুজিবুর রহমান।
গত বছরের ৪ঠা নভেম্বর কটিয়াদী মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেছিলেন মো. আহসান উল্লাহ। দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই তিনি শুরু করেন বেপরোয়া আটক বাণিজ্য। মাত্র পাঁচ মাসেই তিনি কটিয়াদী মডেল থানাকে বানিয়ে ফেলেন ‘ঘুষের হাট’। ওসি আহসান উল্লাহর আটক বাণিজ্যের ফিরিস্তি ও নানা অনিয়মের কথা ছড়িয়ে পড়ে থানা এলাকার মানুষের মুখে মুখে। এমনকি বেপরোয়া এই আটক বাণিজ্য ধামাচাপা দিতে ওসি মো. আহসান উল্লাহ এফআইআর বইয়ের পাতা ছিঁড়ে একই নম্বরে দু’টো মামলা পর্যন্ত রুজু করেন। এ বিষয়ে পহেলা এপ্রিল দৈনিক মানবজমিন-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান, পিপিএম গঠন করেন তদন্ত কমিটি। এক সদস্যবিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল উদ্দিনকে। তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল উদ্দিন ওসি মো. আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে এফআইআর বই ছিঁড়ে ফেলে ঘুষ নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পান। এ পরিস্থিতিতে ওসি মো. আহসান উল্লাহকে কটিয়াদী থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার আদেশ জারি করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল উদ্দিন শুক্রবার দুপুরে মানবজমিনকে বলেন, তদন্তের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শীঘ্রই এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। মানবজমিন-এ প্রকাশিত সংবাদ তথ্যবহুল ছিল বলেও পুলিশের এই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।