ঢাকা ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

এসপি বাবুলের ‘পরকীয়া’: এসআই আকরামের বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭
  • ২৮৯ বার

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকরাম হত্যার অভিযোগ এনে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন আকরামের বোনেরা। সেই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসআই আকরামের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি। এ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত এসআই আকরামের স্ত্রী বর্ণির সাথে বাবুল আক্তারের পরকীয়ার বিষয়টি। আর তাই সব বিষয় জানতে রিনিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয় (সিএমপি)’র গোয়েন্দা কার্যালয়ে রিনিকে ডাকা হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় আকরামের পরিবারের অভিযোগের যোগসূত্রতা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

মুঠোফোনে রিনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ফোন করে মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান তাদেরকে কাল সাড়ে দশটার মধ্যে সিএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে যেতে বলেছেন। রিনি আরো জানান, রাতেই ঝিনাইদহ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো: কামরুজ্জামান কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

গত ১৭ ফেব্রুযারি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিনি অভিযোগ করে বলেন, খুলনায় বাবুল আক্তারের বাবা পুলিশ ও বর্ণির বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন। থাকতেন পাশাপাশি বাসায়। সেই সুবাদে বাবুল ও বর্ণির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরামের সঙ্গে বিয়ে হয় বর্ণির অন্যদিকে পারিবারিকভাবে মিতুকে বিয়ে করেন বাবুল। কিন্তু বিয়ের পরও বাবুল ও বর্ণির মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

রিনি বলেন, আকরাম-বর্ণি দম্পতির সন্তান জন্মের সময় বন্নী হাসপাতালে থাকাকালীন বাবুল প্রতিদিনেই সেখানে যেতেন। এর পরেও বিভিন্ন সময় বর্ণির সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। এসআই আকরাম মিশনে দেশের বাইরে থাকার সময়ও দু’জনের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা হতো।

রিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আকরাম ঝিনাইদহ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এসময় বর্ণি বাবুলের সঙ্গে কূটকৌশল করে পথে সন্ত্রাসী ফিট করে রাখে। পরে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ নামক স্থানে মহাসড়কে মুমূর্ষু অবস্থায় পাওয়া যায় আকরামকে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। আকরামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরাম মারা যায়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মৃতদেহ গ্রহণ করে বর্ণি। ওই সময় এ ঘটনাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে পুলিশ। পরে আকরামের মৃতদেহ ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। বর্ণির বাবা একমাত্র জামাইয়ের জানাজায় অংশ না নিয়ে বর্ণিসহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে আকরামের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তখনই আকরামের মৃত্যুকে হত্যা সন্দেহ করা হয়। কিন্তু ওই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এছাড়া তৎকালীন পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার পাননি আকরামের স্বজনরা।

আকরামের বোন রিনি বলেন, পরে বাবুল, বর্ণি ও তার ফুফাতো ভাই সাদিমুল ইসলাম মুনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আকরামের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। ওই ময়নাতদন্তের রিপোর্টও প্রভাবিত করেন এসপি বাবুল। সংবাদ সম্মেলনে রিনি ছাড়াও আকরামের আরও চার বোন উপস্থিত ছিলেন। তারা আকরাম হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরীর ওআর নিজাম রোডের ওয়েল ফুডের সামনে দুষ্কৃতকারীরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে মাহমুদা খাতুন মিতুকে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

এসপি বাবুলের ‘পরকীয়া’: এসআই আকরামের বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ

আপডেট টাইম : ১২:২৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকরাম হত্যার অভিযোগ এনে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন আকরামের বোনেরা। সেই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসআই আকরামের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি। এ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত এসআই আকরামের স্ত্রী বর্ণির সাথে বাবুল আক্তারের পরকীয়ার বিষয়টি। আর তাই সব বিষয় জানতে রিনিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয় (সিএমপি)’র গোয়েন্দা কার্যালয়ে রিনিকে ডাকা হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় আকরামের পরিবারের অভিযোগের যোগসূত্রতা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

মুঠোফোনে রিনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ফোন করে মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান তাদেরকে কাল সাড়ে দশটার মধ্যে সিএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে যেতে বলেছেন। রিনি আরো জানান, রাতেই ঝিনাইদহ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো: কামরুজ্জামান কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

গত ১৭ ফেব্রুযারি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিনি অভিযোগ করে বলেন, খুলনায় বাবুল আক্তারের বাবা পুলিশ ও বর্ণির বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন। থাকতেন পাশাপাশি বাসায়। সেই সুবাদে বাবুল ও বর্ণির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরামের সঙ্গে বিয়ে হয় বর্ণির অন্যদিকে পারিবারিকভাবে মিতুকে বিয়ে করেন বাবুল। কিন্তু বিয়ের পরও বাবুল ও বর্ণির মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

রিনি বলেন, আকরাম-বর্ণি দম্পতির সন্তান জন্মের সময় বন্নী হাসপাতালে থাকাকালীন বাবুল প্রতিদিনেই সেখানে যেতেন। এর পরেও বিভিন্ন সময় বর্ণির সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। এসআই আকরাম মিশনে দেশের বাইরে থাকার সময়ও দু’জনের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা হতো।

রিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আকরাম ঝিনাইদহ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এসময় বর্ণি বাবুলের সঙ্গে কূটকৌশল করে পথে সন্ত্রাসী ফিট করে রাখে। পরে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ নামক স্থানে মহাসড়কে মুমূর্ষু অবস্থায় পাওয়া যায় আকরামকে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। আকরামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরাম মারা যায়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মৃতদেহ গ্রহণ করে বর্ণি। ওই সময় এ ঘটনাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে পুলিশ। পরে আকরামের মৃতদেহ ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। বর্ণির বাবা একমাত্র জামাইয়ের জানাজায় অংশ না নিয়ে বর্ণিসহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে আকরামের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তখনই আকরামের মৃত্যুকে হত্যা সন্দেহ করা হয়। কিন্তু ওই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এছাড়া তৎকালীন পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার পাননি আকরামের স্বজনরা।

আকরামের বোন রিনি বলেন, পরে বাবুল, বর্ণি ও তার ফুফাতো ভাই সাদিমুল ইসলাম মুনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আকরামের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। ওই ময়নাতদন্তের রিপোর্টও প্রভাবিত করেন এসপি বাবুল। সংবাদ সম্মেলনে রিনি ছাড়াও আকরামের আরও চার বোন উপস্থিত ছিলেন। তারা আকরাম হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরীর ওআর নিজাম রোডের ওয়েল ফুডের সামনে দুষ্কৃতকারীরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে মাহমুদা খাতুন মিতুকে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।