ক্ষতিকর অভ্যাস ত্যাগ করা বেশ কঠিন। এটি আরো কঠিন যখন আপনি ভাবতে থাকেন এই অভ্যাসগুলো আপনার জন্য উপকারী।
এ প্রতিবেদনে প্রাত্যহিক জীবনের এমন কিছু অভ্যাস তুলে ধরা হল, যা আপনার দেহের জন্য লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি।
* নিজেকে হাঁচি দেয়া থেকে বিরত রাখা : আমরা নাক মুখ বন্ধ করে হাঁচি দেয়া বন্ধ করতে চাই। এতে করে আমাদের ইন্টারক্রেনিয়াল চাপ বৃদ্ধি পায়। আমাদের শরীর থেকে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বিপর্যস্ত হয় এবং আমাদের ধমনী ও নার্ভাস টিস্যু সংকুচিত হয়। মাথাব্যথা, ধমনীর ক্ষতি এমনকি শ্রবণশক্তি হ্রাসের মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই হাঁচি আসলে নিজেকে দমিয়ে না রাখাটাই উত্তম।
* পারফিউম ব্যবহার : সুগন্ধি সুবাসকে শক্তিশালী করতে অনেকরকম কমদামি তেল ব্যবহার করা হয়। এই উপাদানগুলো মাথা ধরা, বমিবমি ভাব, তন্দ্রা্ছন্নভাবের উপদ্রব ঘটাতে পারে। এটি আমাদের চোখ, গলা ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই খোলামেলা পরিবেশে পারফিউম ব্যবহার করতে হবে।
* প্লাস্টিক পাত্রে খাদ্য সংরক্ষণ : অনেক প্লাস্টিক বক্স আছে যেগুলোর দীর্ঘস্থায়ীতা ধরে রাখার জন্য কৃত্রিম ক্ষতিকর উপাদান যেমন প্যাথালেট এবং বিসফেনল দ্বারা তৈরি। যদি এমন পাত্রে খাবার দীর্ঘ সময়ের জন্য রাখা হয় তাহলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
তাই কাচ, স্টেইনলেস স্টিল বা সিরামিক পাত্রে খাদ্য সংরক্ষণ করা উত্তম। এছাড়া মনোযোগ দিয়ে প্লাস্টিকের পাত্রের গায়ে থাকা প্রতীকগুলো দেখে খাদ্য সংরক্ষণ করুন।
* খাওয়ার পর পরই দাঁত মাজা : ডেন্টিস্টরা সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে, খাবার গ্রহণের পর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পরে ব্রাশ করুন। যদি সম্ভব হয় তবে ১ ঘণ্টা পর দাঁত মাজুন। যেসকল খাদ্য ও পানীয়তে উচ্চমাত্রায় অম্লীয় থাকে তা দাঁতের এনামেল ও ডেন্টিন এর জন্য ক্ষতিকর। তাই ব্রাশ করার সময় ব্রাশের চাপে অ্যাসিডগুলো গভীরে যায় এবং ডেন্টিনের কাছে চলে যায়। যা পরবর্তীতে দাঁতের এনামেল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে দাঁতে শিরশির অনুভবের সৃষ্টি করে।
* নিয়মিত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার : আমাদের ত্বকের ওপর হাজারো উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাস করে, যা আমাদের দেহকে রক্ষা করে। আমরা যদি প্রায়শই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করি তাহলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবানগুলো খোঁচপাঁচড়া, কাঁটাছেড়া হলে ব্যবহার করা উচিত। সপ্তাহে দুইবারের বেশি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা উচিত না।
* আঁটসাঁট জিন্স পরিধান : আঁটসাঁট জিন্স ফ্যাশনেবল মনে হলেও তা ত্বকে চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপ আপনার কাছে অস্বস্তিকর মনে হতে পারে, যা থেকে নার্ভ সিস্টেমে সমস্যা হতে পারে। আঁটসাঁট হওয়ার কারণে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে না ফলে চুলকানি ও রণন অনুভূত হয়।
* ফ্রেশ স্কুইজ জুস : অনেকেই জানেন না ফ্রেশ স্কুইজ জুসগুলো আপনার দেহের জন্য সবসময় উপকারী না। সাময়িক অসুস্থতা বোধ, পরবর্তীতে আপনাকে বড় ক্ষতির দিকে ঠেলে দিবে। উদাহরণস্বরূপ, যাদের মাত্রাতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস তাদের জন্য আঙুরের জুস ক্ষতিকর। তাছাড়া জুস অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই শিশুদের জুস দেবার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। এবং যদি দিতে হয় তাও খুব কম পরিমানে। যদি সম্ভব হয় তাহলে ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।