ঢাকা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শমসের মবিন কি মাইনাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০১৫
  • ৩৯২ বার

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরীর দেখা মিলছে না বেশ কিছুদিন। কারামুক্তির পর থেকে অনেকটা পর্দার অন্তারালে তিনি। বিএনপির বড় বড় কূটনৈতিক ইভেন্টেও অনুপস্থিত থাকছেন দলটির কূটনৈতিক কোরের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই নেতা।

অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিন (গত ৮ জানুয়ারি) গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার হন শমসের মবিন চৌধুরী। এর পর টানা সাড়ে চার মাস কারাবন্দি থেকে গত ২২ মে জামিনে মুক্ত হন।

সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের ১৫ দিন আগে মুক্তি পাওয়ায় বিএনপি নেতারা মনে করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে বিএনপির সব আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হবেন শমসের মবিন চৌধুরী।

কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সফর কেন্দ্র করে বিএনপির কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায়নি তাকে। শমসেরকে ছাড়াই সব কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেছেন খালেদা জিয়া। কূটনৈতিক কোরের অভিজ্ঞ এই সদস্যকে বাদ দিয়ে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ে গিয়ে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রধান।

এর পর ১৩ জুন চীনা রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংক ও ১৫ জুন সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দল গুলশান বাসায় গিয়ে খালেদা জিযার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকেও দেখা মেলেনি শমসের মবিন চৌধুরীর।

সর্বশেষ ২৪ জুন শমসের মবিন চৌধুরির কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা ছাড়াই ঢাকায় অবস্থানরত ৩৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, মিশন প্রধান ও প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সফল’ একটি ইফতার পার্টি আয়োজন করেন খালেদা জিয়া।

সূত্র জানায়, শমসের মবিন চৌধুরীকে ছাড়াই এ ধরনের বড় বড় কূটনৈতিক ইভেন্ট আয়োজন বিএনপিতে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেউ বলছেন নানা রকম কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে কূটনৈতিক কোর থেকে মাইনাস হয়েছেন শমসের।

কেউ বলছেন কারামুক্তির পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সুযোগ না পাওয়ায় অভিমান করে দূরে সরে আছেন তিনি।

কেউ বা বলছেন, সামরিক কর্মকর্তা থেকে কূটনীতিক এবং কূটনীতিক থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া আয়েশি জীবনযাপনে অভ্যস্ত শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির আর দশজন শীর্ষ নেতার মতই ‘রাজনীতি-টাজনীতি ছেড়ে দিয়ে নিরিবিলি জীবনযাপন করতে চাচ্ছেন’।

এ ব্যাপারে জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও শমসের মবিন চৌধুরীর সবগুলো নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই শমসের মবিন চৌধুরীর সবগুলো নম্বর বন্ধ রয়েছে। দলের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না তিনি।

সূত্রমতে, খালেদা জিয়াকে ঘিরে রাখা ফোর এস’র (শমসের-সাবিহ-শিমুল-সোহেল) অন্যতম শমসের মবিন চৌধুরী মনে করেছিলেন, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন তাকে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে পাঠাবেন। পরামর্শ চাইবেন মোদির সফরের কর্মপন্থা নিয়ে।

কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। শমসের মবিন চৌধুরিকে এড়িয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদকে দিয়ে মোদি সফরের কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেছেন খালেদা জিয়া।

এর পরের তিনটি কূটনৈতিক ইভেন্টও মঈন খান, সাবিহ উদ্দিন, রিয়াজ রহমানকে দিয়ে করিয়েছেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এসব ঘটনার পর শমসের মবিনের অভিমান এখন ক্ষোভে রূপান্তরিত হয়েছে। তবে ঘটনা যাই ঘটুক, যে কোনো প্রয়োজনে খালেদা জিয়ার ফোন পেলেই সব অভিমান ভুলে দ্রুত ছুটে আসতে দ্বিধা করবেন না শমসের মবিন চৌধুরী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শমসের মবিন কি মাইনাস

আপডেট টাইম : ০৪:০৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০১৫

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরীর দেখা মিলছে না বেশ কিছুদিন। কারামুক্তির পর থেকে অনেকটা পর্দার অন্তারালে তিনি। বিএনপির বড় বড় কূটনৈতিক ইভেন্টেও অনুপস্থিত থাকছেন দলটির কূটনৈতিক কোরের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই নেতা।

অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিন (গত ৮ জানুয়ারি) গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার হন শমসের মবিন চৌধুরী। এর পর টানা সাড়ে চার মাস কারাবন্দি থেকে গত ২২ মে জামিনে মুক্ত হন।

সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের ১৫ দিন আগে মুক্তি পাওয়ায় বিএনপি নেতারা মনে করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে বিএনপির সব আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হবেন শমসের মবিন চৌধুরী।

কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সফর কেন্দ্র করে বিএনপির কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায়নি তাকে। শমসেরকে ছাড়াই সব কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেছেন খালেদা জিয়া। কূটনৈতিক কোরের অভিজ্ঞ এই সদস্যকে বাদ দিয়ে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ে গিয়ে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রধান।

এর পর ১৩ জুন চীনা রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংক ও ১৫ জুন সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দল গুলশান বাসায় গিয়ে খালেদা জিযার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকেও দেখা মেলেনি শমসের মবিন চৌধুরীর।

সর্বশেষ ২৪ জুন শমসের মবিন চৌধুরির কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা ছাড়াই ঢাকায় অবস্থানরত ৩৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, মিশন প্রধান ও প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সফল’ একটি ইফতার পার্টি আয়োজন করেন খালেদা জিয়া।

সূত্র জানায়, শমসের মবিন চৌধুরীকে ছাড়াই এ ধরনের বড় বড় কূটনৈতিক ইভেন্ট আয়োজন বিএনপিতে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেউ বলছেন নানা রকম কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে কূটনৈতিক কোর থেকে মাইনাস হয়েছেন শমসের।

কেউ বলছেন কারামুক্তির পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সুযোগ না পাওয়ায় অভিমান করে দূরে সরে আছেন তিনি।

কেউ বা বলছেন, সামরিক কর্মকর্তা থেকে কূটনীতিক এবং কূটনীতিক থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া আয়েশি জীবনযাপনে অভ্যস্ত শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির আর দশজন শীর্ষ নেতার মতই ‘রাজনীতি-টাজনীতি ছেড়ে দিয়ে নিরিবিলি জীবনযাপন করতে চাচ্ছেন’।

এ ব্যাপারে জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও শমসের মবিন চৌধুরীর সবগুলো নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই শমসের মবিন চৌধুরীর সবগুলো নম্বর বন্ধ রয়েছে। দলের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না তিনি।

সূত্রমতে, খালেদা জিয়াকে ঘিরে রাখা ফোর এস’র (শমসের-সাবিহ-শিমুল-সোহেল) অন্যতম শমসের মবিন চৌধুরী মনে করেছিলেন, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন তাকে গুলশান কার্যালয়ে ডেকে পাঠাবেন। পরামর্শ চাইবেন মোদির সফরের কর্মপন্থা নিয়ে।

কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। শমসের মবিন চৌধুরিকে এড়িয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদকে দিয়ে মোদি সফরের কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেছেন খালেদা জিয়া।

এর পরের তিনটি কূটনৈতিক ইভেন্টও মঈন খান, সাবিহ উদ্দিন, রিয়াজ রহমানকে দিয়ে করিয়েছেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এসব ঘটনার পর শমসের মবিনের অভিমান এখন ক্ষোভে রূপান্তরিত হয়েছে। তবে ঘটনা যাই ঘটুক, যে কোনো প্রয়োজনে খালেদা জিয়ার ফোন পেলেই সব অভিমান ভুলে দ্রুত ছুটে আসতে দ্বিধা করবেন না শমসের মবিন চৌধুরী।