ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আদৌ আর সংসদ এবং মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন কিনা তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেছেন, একটি দুর্নীতির মামলায় যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে সাজা বহাল রয়েছে, তাই তিনি আর সংসদ সদস্য থাকতে পারেন না।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে কেউ সাজা পেলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারান।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির মামলা ঘিরে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে, তা দায়ের করা হয় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। অবৈধভাবে ছয় কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের এই মামলায় তাঁকে ২০০৮ সালে ১৩ বছরের দণ্ড দেয়া হয়। হাইকোর্ট ২০১০ সালে রায়টি বাতিল করে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের এক আপীলের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয় এবং হাইকোর্টকে আপিলের পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়।
দুপক্ষের আইনজীবীরা এই রায়ের দুরকমের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম বলছেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী যে আর সংসদ সদস্য থাকতে পারেন না, তা নিয়ে অস্পষ্টতার কোনো অবকাশ নেই। তিনি বলেন, “বর্তমানে তিনি একটি ফৌজদারি আপিল মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি, যার মাথার ওপর একটি দণ্ড ঝুলছে। কাজেই সেই অবস্থায় আমি মনে করি উনার সদস্যপদ আর থাকে না সংবিধানের ৬৬ (২) ঘ ধারা অনুযায়ী।”
কিন্তু এর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করছেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। তিনি বলেন, “নৈতিকতার প্রশ্ন ভিন্ন। আমি এটিকে আইনের বিচারে দেখতে চাই। আপিল বিভাগ মামলাটিকে বিচার করে আবার পুনর্বিচারের জন্য পাঠিয়েছেন। বিচারিক আদালত তাঁকে যে সাজা দিয়েছিলেন সেই সাজা এখন পুনর্বিচার করা হচ্ছে। সুতরাং এটার চূড়ান্ত মীমাংসা এখনো হয়নি। তাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে বা মন্ত্রী হিসেবে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা যাবে না।”
সরকার দলীয় চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজও এই একই মত সমর্থন করে বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংসদ বলতে পারবে না যে তাঁর সংসদ সদস্যপদ নেই। কাজেই আইনি লড়াই শেষ হওয়ার পরই কেবল এর সিদ্ধান্ত দেয়া যেতে পারে।
আ স ম ফিরোজ বলেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী এখনও সংসদ সদস্য আছেন এবং মন্ত্রিসভাতেও আছেন। -বিবিসি