ঢাকা ০৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার বাংলাদেশের টার্গেট দক্ষিণ আফ্রিকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০১৫
  • ২৫৭ বার
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এবারের সফরের একদিনের সিরিজকে জ্যৈষ্ঠ মাসের ফলের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এ সময় গাছে গাছে আম-জাম-লিচু-আনারস এ রকম ফলে ভরে থাকে। মনের ইচ্ছে পূরণ করে তা খেয়ে বাংলাদেশের মানুষেরা তৃপ্তি নিয়ে থাকেন। ভারতের বিপক্ষে একদিনের সিরিজও ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস সমৃদ্ধ করার। ভাণ্ডার ভরে তোলার। যার স্বাদ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে আছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ভারতের বিপক্ষে একদিনের সিরিজে কী পায়নি টাইগাররা। ‘বাংলাওয়াশ’  হয়নি, তাতে কী? প্রথম দুই ম্যাচই বগলদাবা করে সিরিজ আগেই নিজেদের করে নেয়, যা ছিল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম। মুস্তাফিজ নামক এক বিস্ময় বালকের আবির্ভাব। বিশ্বরেকর্ড গড়া। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই সাফল্য প্রথমবার হলেও এটি ছিল বাংলাদেশের সাফল্যের ধারাবাহিকতা। শুরুটা বিশ্বকাপ ক্রিকেট দিয়ে। তারপর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ। যেখান থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে ভারত। ভারতকে হারানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা সমুচিত জবাবও দিয়েছে। এই জবাব বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ভারতের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। সেবাগের অর্ডিনারি বাংলাদেশ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৫ বছর হয়ে গেলেও একমাত্র ভারতেই সিরিজ খেলা হয়নি বাংলাদেশের। না খেলার কারণ ভারতের অপারগতা। এবারের নজর-কাড়া নৈপুণ্যের পর বাংলাদেশকে নিয়ে ভারত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে বাধ্য হবে।
ভারত পর্ব শেষ। এই সাফল্য নিয়ে সুখস্মৃতি রচনা করা চলবে এখন। তবে তা চাইলেও বেশি দিন করা যাবে না। দরজায় কড়া নাড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকার আগমন। ৩০ তারিখ দলটি বাংলাদেশে আসতে দুটি করে টেস্ট ও টি২০ ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে। সাফল্য রেখা ঊর্ধ্বগামী হওয়াতে দেশবাসীর চাহিদা বেড়ে গেছে। আগে যেখানে বড় বড় দলের বিপক্ষে হারকে মেনে নিয়েই খেলা মজতেন দর্শকরা, এখন সেখানে তারা বাসনা করেন জয়কে। পাকিস্তান-ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও একই রকম ফলাফল সবাই আশা করছেন। যেভাবে উড়ছে মাশরাফি ও তার দল তাতে করে জয় ভিন্ন অন্য কিছু ভাবছেন না কেউ। সিরিজ জয়তো বটেই। আরেকটি বাংলাওয়াশ আশা সবার। কিন্তু কাজটা সহজ হবে না। দলটি দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটে-বলে দুই জায়গাতেই আছেন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটিংয়ে যেমন ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা, ডু প্লেসিস ডি কুকের মতো ব্যাটসম্যান আছেন, তেমনি বোলিংয়ে আছেন ইমরান তাহিন, মর্কেল, স্টেইনের মতো বোলাররা। এদের বিপক্ষে আবারো নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিতে হবে মাশরাফিদের। তবেই যদি সাফল্য আসে। সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ইফতেখার রহমান মিঠু মনে করেন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ভালো করাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবার চাওয়া থাকে খুব বেশি। তিনি বলেন,  ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে আমরা পুরনো অসুখে ফিরে গিয়েছিলাম। অতিমাত্রায় শট খেলেছেন ব্যাটসম্যান। একটু দেখে শুনে খেললে আমরা এই রান চেজ করতে পারতাম।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে তিনি এই সব ভুলগুলো কাটিয়ে ওঠার তাগিদ দিয়েছেন। উপমহাদেশে  খেলতে এসে বাইরের দল ভালো করতে পারে না। বাংলাদেশও কি তাহলে স্পিন আক্রমণের ওপর ভরসা করবে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিনি খুবই শক্তিশালী দল উল্লেখ করে  বলেন, ‘ চার পেসার নিয়ে খেলে ভারতের বিপক্ষে সফল হয়েছে দল আমরা স্পিনে ভালো। কিন্তু মনে রাখতে হবে তাদেরও ইমরান তাহিরের মতো স্পিনার আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দল কেমন হবে তা নির্ভর করবে উইকেট ও কন্ডিশনের ওপর।’
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার তানজিব আহসান সাদ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উচ্ছ্বাস করাটাকে মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো খেলছি। ভালো খেলব। উচ্ছ্বাসটা কখন আসে যখন খারাপ খেলার মাঝে দল থাকে তখন ভালো করার উচ্ছ্বাস থাকে। কিন্তু এখন তো আমরা ভালো খেলছি।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দল কেমন হওয়া উচিত এ নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন বর্তমানে যারা দলে আছেন কোচ খেলোয়াড়, নির্বাচক সবাই ভালো করছেন। কাজেই তারা জানেন কিভাবে ভালো করতে হবে। তাদেরকে তাদের মতো করে কাজ করতে দেয়া উচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার পেসার না স্পিন খেলানো হবে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ কথার বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমরা চার পেসার খেলাইনি। চারজন ভালো বোলার খেলিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এ রকম ভালো বোলার খেলানো হবে। তবে দলে যেহেতু সাকিবের মতো খেলোয়াড় আছে আর নাসির আছে এই দু’জনে মিলে অনায়াসে ১০ ওভার  করে ২০ ওভার বোলিং  করতে পারবে। তাই আমি মনে করি দলে একজনের বেশি স্পিনার না খেলানোই উচিত। চারজন পেসার খেলানো সম্ভব হয়েছে এই দুই জনের কারণেই।’ তিনি মনে করেন উইকেট তেমনই হওয়া উচিত যেখানে বোলাররা ভালো করতে পারবে। তিনি কোচ হাথুরুসিংহের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু এই কোচ তিনি নিজে যেটা ভালো মনে করেন সেটাই করে থাকেন এবং তিনি সফলও হয়েছেন।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার বাংলাদেশের টার্গেট দক্ষিণ আফ্রিকা

আপডেট টাইম : ০৮:৪৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০১৫
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এবারের সফরের একদিনের সিরিজকে জ্যৈষ্ঠ মাসের ফলের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এ সময় গাছে গাছে আম-জাম-লিচু-আনারস এ রকম ফলে ভরে থাকে। মনের ইচ্ছে পূরণ করে তা খেয়ে বাংলাদেশের মানুষেরা তৃপ্তি নিয়ে থাকেন। ভারতের বিপক্ষে একদিনের সিরিজও ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস সমৃদ্ধ করার। ভাণ্ডার ভরে তোলার। যার স্বাদ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে আছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ভারতের বিপক্ষে একদিনের সিরিজে কী পায়নি টাইগাররা। ‘বাংলাওয়াশ’  হয়নি, তাতে কী? প্রথম দুই ম্যাচই বগলদাবা করে সিরিজ আগেই নিজেদের করে নেয়, যা ছিল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম। মুস্তাফিজ নামক এক বিস্ময় বালকের আবির্ভাব। বিশ্বরেকর্ড গড়া। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই সাফল্য প্রথমবার হলেও এটি ছিল বাংলাদেশের সাফল্যের ধারাবাহিকতা। শুরুটা বিশ্বকাপ ক্রিকেট দিয়ে। তারপর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ। যেখান থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে ভারত। ভারতকে হারানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা সমুচিত জবাবও দিয়েছে। এই জবাব বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ভারতের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। সেবাগের অর্ডিনারি বাংলাদেশ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৫ বছর হয়ে গেলেও একমাত্র ভারতেই সিরিজ খেলা হয়নি বাংলাদেশের। না খেলার কারণ ভারতের অপারগতা। এবারের নজর-কাড়া নৈপুণ্যের পর বাংলাদেশকে নিয়ে ভারত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে বাধ্য হবে।
ভারত পর্ব শেষ। এই সাফল্য নিয়ে সুখস্মৃতি রচনা করা চলবে এখন। তবে তা চাইলেও বেশি দিন করা যাবে না। দরজায় কড়া নাড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকার আগমন। ৩০ তারিখ দলটি বাংলাদেশে আসতে দুটি করে টেস্ট ও টি২০ ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে। সাফল্য রেখা ঊর্ধ্বগামী হওয়াতে দেশবাসীর চাহিদা বেড়ে গেছে। আগে যেখানে বড় বড় দলের বিপক্ষে হারকে মেনে নিয়েই খেলা মজতেন দর্শকরা, এখন সেখানে তারা বাসনা করেন জয়কে। পাকিস্তান-ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও একই রকম ফলাফল সবাই আশা করছেন। যেভাবে উড়ছে মাশরাফি ও তার দল তাতে করে জয় ভিন্ন অন্য কিছু ভাবছেন না কেউ। সিরিজ জয়তো বটেই। আরেকটি বাংলাওয়াশ আশা সবার। কিন্তু কাজটা সহজ হবে না। দলটি দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটে-বলে দুই জায়গাতেই আছেন বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটিংয়ে যেমন ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা, ডু প্লেসিস ডি কুকের মতো ব্যাটসম্যান আছেন, তেমনি বোলিংয়ে আছেন ইমরান তাহিন, মর্কেল, স্টেইনের মতো বোলাররা। এদের বিপক্ষে আবারো নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিতে হবে মাশরাফিদের। তবেই যদি সাফল্য আসে। সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ইফতেখার রহমান মিঠু মনে করেন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ভালো করাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবার চাওয়া থাকে খুব বেশি। তিনি বলেন,  ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে আমরা পুরনো অসুখে ফিরে গিয়েছিলাম। অতিমাত্রায় শট খেলেছেন ব্যাটসম্যান। একটু দেখে শুনে খেললে আমরা এই রান চেজ করতে পারতাম।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে তিনি এই সব ভুলগুলো কাটিয়ে ওঠার তাগিদ দিয়েছেন। উপমহাদেশে  খেলতে এসে বাইরের দল ভালো করতে পারে না। বাংলাদেশও কি তাহলে স্পিন আক্রমণের ওপর ভরসা করবে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিনি খুবই শক্তিশালী দল উল্লেখ করে  বলেন, ‘ চার পেসার নিয়ে খেলে ভারতের বিপক্ষে সফল হয়েছে দল আমরা স্পিনে ভালো। কিন্তু মনে রাখতে হবে তাদেরও ইমরান তাহিরের মতো স্পিনার আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দল কেমন হবে তা নির্ভর করবে উইকেট ও কন্ডিশনের ওপর।’
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার তানজিব আহসান সাদ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উচ্ছ্বাস করাটাকে মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো খেলছি। ভালো খেলব। উচ্ছ্বাসটা কখন আসে যখন খারাপ খেলার মাঝে দল থাকে তখন ভালো করার উচ্ছ্বাস থাকে। কিন্তু এখন তো আমরা ভালো খেলছি।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দল কেমন হওয়া উচিত এ নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন বর্তমানে যারা দলে আছেন কোচ খেলোয়াড়, নির্বাচক সবাই ভালো করছেন। কাজেই তারা জানেন কিভাবে ভালো করতে হবে। তাদেরকে তাদের মতো করে কাজ করতে দেয়া উচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার পেসার না স্পিন খেলানো হবে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ কথার বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমরা চার পেসার খেলাইনি। চারজন ভালো বোলার খেলিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এ রকম ভালো বোলার খেলানো হবে। তবে দলে যেহেতু সাকিবের মতো খেলোয়াড় আছে আর নাসির আছে এই দু’জনে মিলে অনায়াসে ১০ ওভার  করে ২০ ওভার বোলিং  করতে পারবে। তাই আমি মনে করি দলে একজনের বেশি স্পিনার না খেলানোই উচিত। চারজন পেসার খেলানো সম্ভব হয়েছে এই দুই জনের কারণেই।’ তিনি মনে করেন উইকেট তেমনই হওয়া উচিত যেখানে বোলাররা ভালো করতে পারবে। তিনি কোচ হাথুরুসিংহের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু এই কোচ তিনি নিজে যেটা ভালো মনে করেন সেটাই করে থাকেন এবং তিনি সফলও হয়েছেন।’