ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবুতরে ভাগ্য বদল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৩৮২ বার

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। সেই শখ কখনো কখনো সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। তার জলন্ত উদাহরণ কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের হাজী জয়নাল আবদীন।

অল্প পূঁজি দিয়ে কবুতরের ব্যবসা শুরু করে ওই খামারী এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। একই সঙ্গে স্থানীয় অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে ওই খামারে।

জানা যায় ,লাকসাস পৌরশহরে পশ্চিমগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদিন অভাবের কারণে লেখাপড়া বেশি করতে পারেননি। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পালনের আগ্রহ ছিল তার।

জয়নাল আবেদীন ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন করা শুরু করেন। কিছুদিন পালন করার পর একজোড়া বাচ্চা হয়ে কবুতরের বড় করে জোড়া বিক্রি করেন ৭ টাকায় তখন থেকেই মাথায় আসে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করা।

২০০২ সালে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দেশী-বিদেশী কিছু কবুতর কিনে বাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন কবুতরের খামার। প্রতি মাসে খামারের বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর থেকে প্রায় ৬০ থেকে ১০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৩০ হাজার টাকা।

এছাড়া প্রতিদিন কবুতরকে ৩০ কেজি গম,খেসারি,শষ্য,খাবার দিতে হয়। ঔষধ ও বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা।

তার খামারে বিদেশী বোখরা, কিং, সিলভার, সিরাজি, কালা, সিরাজী লাল, বোমবাই, ফিলিয়েজার, ইয়োলো, বাগদাদ হোমার, ইন্ডিয়ান লোটন, হোয়াট চায়না, আওল রেড বাগদাদ, গিরিবাজ, ময়ূরীসহ ১২ জাতের দেশী-বিদেশী মূল্যবান কবুতর রয়েছে তার খামারে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কবুতর প্রেমিকরা বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালনের খবর শুনে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তার খামারে।শত শত কবুতরের বাক-বাকুম ডাকে এবং রং বে-রংয়ের কবুতর দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

জয়নালের কবুতর খামার ও সফলতা দেখে লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মেম্বার,উত্তর লাকসামের আল-আমিন,সুমন,উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের আমির হোসেন দুলাল,আলী আশ্রাফ,গফুর,আর্দশ সদর উপজেলার রানীর বাজারের মাসুদ, সদর দক্ষিণের ভুশ্চি গ্রামের ফরহাদ,বাগমারার মিজানুর রহমান সহ ছোট-বড় প্রায় ৫০টি খামার গড়ে ওঠেছে।

কবুতর খামারি জয়নাল বলেন, ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন শুরু করি। ২০০৫ সালে ছোট একটি খামার দিয়ে কবুতর পালন শুরু করি। ২০১০ সালে আমি তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর খামার শুরু করি। এখন আমার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার কবুতর রয়েছে।

তিনি বলেন,কবুতর পালন করতে হলে খোলামেলা পরিবেশের প্রয়োজন। এতে কবুতরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। তা ছাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর ও সরকারি-বেসরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আরও ভালো করতে পারবো।

এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন রশিদ চৌধুরী জানান, প্রশিক্ষণ নিয়ে কবুতর পালন বেশ লাভজনক। আমরা কবুতর খামারীদের জন্য যেকোনো সাহায্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কবুতরে ভাগ্য বদল

আপডেট টাইম : ১২:২৭:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। সেই শখ কখনো কখনো সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। তার জলন্ত উদাহরণ কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের হাজী জয়নাল আবদীন।

অল্প পূঁজি দিয়ে কবুতরের ব্যবসা শুরু করে ওই খামারী এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। একই সঙ্গে স্থানীয় অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে ওই খামারে।

জানা যায় ,লাকসাস পৌরশহরে পশ্চিমগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদিন অভাবের কারণে লেখাপড়া বেশি করতে পারেননি। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পালনের আগ্রহ ছিল তার।

জয়নাল আবেদীন ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন করা শুরু করেন। কিছুদিন পালন করার পর একজোড়া বাচ্চা হয়ে কবুতরের বড় করে জোড়া বিক্রি করেন ৭ টাকায় তখন থেকেই মাথায় আসে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করা।

২০০২ সালে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দেশী-বিদেশী কিছু কবুতর কিনে বাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন কবুতরের খামার। প্রতি মাসে খামারের বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর থেকে প্রায় ৬০ থেকে ১০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৩০ হাজার টাকা।

এছাড়া প্রতিদিন কবুতরকে ৩০ কেজি গম,খেসারি,শষ্য,খাবার দিতে হয়। ঔষধ ও বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা।

তার খামারে বিদেশী বোখরা, কিং, সিলভার, সিরাজি, কালা, সিরাজী লাল, বোমবাই, ফিলিয়েজার, ইয়োলো, বাগদাদ হোমার, ইন্ডিয়ান লোটন, হোয়াট চায়না, আওল রেড বাগদাদ, গিরিবাজ, ময়ূরীসহ ১২ জাতের দেশী-বিদেশী মূল্যবান কবুতর রয়েছে তার খামারে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কবুতর প্রেমিকরা বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালনের খবর শুনে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তার খামারে।শত শত কবুতরের বাক-বাকুম ডাকে এবং রং বে-রংয়ের কবুতর দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

জয়নালের কবুতর খামার ও সফলতা দেখে লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মেম্বার,উত্তর লাকসামের আল-আমিন,সুমন,উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের আমির হোসেন দুলাল,আলী আশ্রাফ,গফুর,আর্দশ সদর উপজেলার রানীর বাজারের মাসুদ, সদর দক্ষিণের ভুশ্চি গ্রামের ফরহাদ,বাগমারার মিজানুর রহমান সহ ছোট-বড় প্রায় ৫০টি খামার গড়ে ওঠেছে।

কবুতর খামারি জয়নাল বলেন, ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন শুরু করি। ২০০৫ সালে ছোট একটি খামার দিয়ে কবুতর পালন শুরু করি। ২০১০ সালে আমি তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর খামার শুরু করি। এখন আমার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার কবুতর রয়েছে।

তিনি বলেন,কবুতর পালন করতে হলে খোলামেলা পরিবেশের প্রয়োজন। এতে কবুতরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। তা ছাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর ও সরকারি-বেসরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আরও ভালো করতে পারবো।

এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন রশিদ চৌধুরী জানান, প্রশিক্ষণ নিয়ে কবুতর পালন বেশ লাভজনক। আমরা কবুতর খামারীদের জন্য যেকোনো সাহায্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।