আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই বিদ্যমান আকস্মিক বন্যা-পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। ইতিমধ্যে গঙ্গা-পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সমতলে বাড়তে শুরু করেছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল হোসাইনবলেন, দেশের কয়েকটি অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তবে এটাকে বন্যা বলা যাবে না। এ সময়ে পানি বৃদ্ধিটা স্বাভাবিক। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
তিনি আরো বলেন, সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করেছিল। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালেও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আর নেত্রকোনায় স্থানীয় সমস্যার কারণে বর্তমানে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণাধীন ৮৪টি স্টেশনের মধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে চারটি। পানি বেড়েছে ৪৫টি পয়েন্টে, কমেছে ৩৬টি পয়েন্টে। অপরিবর্তিত রয়েছে একটি এবং কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি দুটি স্টেশনের।
বৃহস্পতিবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। কংশ জারিয়া জাঞ্জাইল পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার, হালদা নদী নারায়ণহাটে ৭৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার, মাতামুহুরী নদীর লামা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার এবং চিড়িংগা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গতকালের লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে কক্সবাজারে ৪৬৭ মিলিমিটার। এ ছাড়া ঢাকায় ৯, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরে ৫, মাদারীপুরে ২২, চট্টগ্রামে ১২৮, রাঙ্গামাটিতে ৪২, কুমিল্লায় ৪১, রাজশাহীতে ৪, বগুড়ায় ৫৭, রংপুরে ৬৫, খুলনায় ১১, যশোরে ৫৭ এবং বরিশালে ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টা রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে । সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণও হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।