বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে সময়ের আবেদন করেননি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা খোকার বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে দশটায় জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও তিনি স্বশরীরে হাজিরও হননি, বাহক মারফতে সময়ের আবেদনও করেননি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ আবদুস সালাম বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) দুদকে সাদেক হোসেন খোকার হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি হাজির হননি। কেন কি কারণে আসতে পারেননি তা বাহক মারফতেও দুদককে জানাননি।
দুদকের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, সাবেক ওই মেয়র (খোকা) বিদেশে রয়েছেন আমরা জানি। দুদক তদন্তের নিয়ম অনুযায়ী তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দিয়েছে। তিন-চারদিন আগে পাঠানো নোটিশে সাড়া দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় এটা আমরাও বুঝতে পারি। কিন্তু তিনি সময়ের আবেদন করতে পারতেন। দেশে তারতো আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন।
দুদক সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে হাজির না হলেও তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
দোকান বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোকাকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় হাজির হতে গত ২২ জুন নোটিশ পাঠায় দুদক।
দুদকের সহকারী পরিচালক শেখ আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত নোটিশটি খোকার গোপিবাগ ও গুলশানের বাসায় বাহক মারফতে পাঠানো হয়।
বঙ্গবাজার ও ঢাকা ট্রেড সেন্টারের কার পার্কিংয়ের স্থানে এবং খোলা জায়গায় দোকান নির্মাণ ও বরাদ্দে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাদেক হোসেন খোকাসহ আটজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৪ আগস্ট মামলা করে দুদক। দুদকের পক্ষে তখনকার সহকারী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন।
খোকা ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান, সাবেক সম্পত্তি কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন মোড়ল, অবসরপ্রাপ্ত সম্পত্তি কর্মকর্তা সাহাবুদ্দিন সাবু, সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো মোহাম্মদ আলী, সার্ভেয়ার মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, ফারুক হোসেন এবং মোতালেব হোসেন। মামলার পর এটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুদকের সহকারী পরিচালক শেখ আবদুস সালামকে।
মামলার অপর আসামি কানুনগো মোহাম্মদ আলী, সার্ভেয়ার মোতালেব হোসেন এবং ফারুক হোসেনকেও ২৪ জুন সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল তিনটার মধ্যে হাজির হতে বলা হয়। মোঃ বাচ্চু মিয়া এবং সম্পত্তি কর্মকর্তা মহসিনউদ্দিন মোড়লকে ২৫ জুন সাড়ে দশটার মধ্যে হাজির হতে বলা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, অভিযুক্তরা ডিসিসি’র (অবিভক্ত) নীতিমালা লঙ্ঘন করে স্থায়ী মার্কেট দু’টির কার পার্কিং ও খোলা জায়গায় দোকান নির্মাণ করেন ও অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেন। অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতি করে ৪৯৩টি দোকান বিভিন্নজনের কাছে প্রতি বর্গফুট ১৫ টাকা হারে মাসিক ভিত্তিতে বরাদ্দ দিয়েছেন। ডিসিসি’র এস্টেট বিভাগের ২৫২৫ নম্বর নথিতে নোটশিট পরিবর্তন করে আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দু’টি মার্কেটের মোট ৪৯৩টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়।