ঢাকা ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপিএল তৃতীয় আসর ডিসেম্বরে অর্থের ছড়াছড়ি থাকছে না আর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০১৫
  • ৪১৯ বার

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি-২০ (বিপিএল) ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে দেনা-পাওনার সমস্যা এখনও মেটেনি। বিসিবির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান গেমন অন স্পোর্টসের সঙ্গে বিসিবির দেনা-পাওনার ঝামেলাও ঝুলছে। এমনকি ক্রিকেটারদের পাওনাও পরিশোধ করা হয়নি। যদিও এরই মধ্যে শেষ দুই আসরের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের টারমিনেট করার নোটিশও দিয়েছে। এককথায় বিপিএল নিয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। তবুও গতকাল নতুনভাবে বিপিএল আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এত বিতর্কের পরও বিপিএল আয়োজন করার মূল কারণ ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপের আসর ও এশিয়া কাপ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহা ও সদস্য সচিব ইসলাইল হায়দার মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ও বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। এখন পর্যন্ত বিসিবি পুরানো সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওনা রয়েছে। তাহলে কি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে বিসিবি আয়োজন করবে তৃতীয় বিপিএলের আসর? গেম অন স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তিরই বা কি হবে? এ বিষয়ে ইসমাঈল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘আগের আসরে অংশগ্রহণকারী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবগুলো যদি তাদের বকেয়া পরিশোধ না করে তবে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির সন্ধান করা হবে।’ বিপিএল-এ পাওনা নিয়ে বিতর্ক রোধ করতেই এবার টাকার অংকও কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানানো হয় গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে গেম অনের সঙ্গে বিসিবির ৬ বছরের জন্য ৪০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। এর মধ্যে অল্প কিছু টাকা এর আগে গেম অনকে পরিশোধ করেছে। ১ বছরে বিসিবির তেমন লাভ না হলেও ক্ষতি হয়নি। মূল ভারতের আইপিএল-এ কোটি কোটি টাকার খেলা হলেও মাত্র ১৬ কোটি মানুষের দেশে ভারতের মতো বাজার নেই। তাই প্রথম দুটি আসরে যে পরিমাণ টাকার ছড়াছড়ি ও কড়াকড়ি ছিল এবার তা থাকছে না। বিসিএল হবে এবার অনেক কম বাজেটে। যেন ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দলটি পরিচালনার পাশাপাশি লাভ করতে পারেন। এ বিষয়ে আফজালুর রহমান সিনহা বলেন, ‘এবারের আসরে আর্থিক কাঠামোর বড় পরিবর্তন করা হবে, যাতে করে প্রতি বছর আয়োজন করা যায়। যুক্তিসঙ্গত এবং বাস্তবসম্মত আর্থিক কাঠামো যেন হয় এই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি।’ একই বিষয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমাদের দেশেতো আইপিএল’র মতো আয়োজন সম্ভব নয়। এখানে আমাদের তাই টাকার বিষয়টি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। কারণ কোটি কোটি টাকায় ক্রিকেটার কেনার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কি ভাবে লাভ বের করবে সেটিও আমাদের চিন্তার বিষয়। সিপিএল ও বিগব্যাশের দিকে তাকান। দেখেন তারা কিন্তু ভারতের মতো এত টাকা ব্যয় করছে না। কিন্তু আয়োজনটা ঠিক করে ফেলছে ভালভাবে।’ গেমন অন স্পোর্টস নিয়ে বিসিবি’র সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গেমন অন স্পোর্টসের সঙ্গে নতুনভাবে আলোচনা করা হবে।
তবে পুরানো ফ্র্যাঞ্চাইজিরা না থাকলে কি করা হবে জানতে চাইলে ইসমাঈল হায়দার বলেন, ‘আমরা তাদের অপেক্ষাতে নেই। এরই  মধ্যে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। অনেক আগ্রহী ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে কথা হচ্ছে। আগের ২ আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাদের চুক্তিমতো কাজ করেনি। তাদেরকে বার বার চিঠি দেয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধের জন্য। এছাড়া  যেসব ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য বলা হলেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। পরে তাদেরকে বাতিল করা হবে বলে চিঠি দেয়া হয়েছে তার উত্তরও আমরা এখনও পাইনি।’ ফিক্সিং বিতর্কে জড়িত ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস প্রসঙ্গে নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস থাকছে না; এটা প্রায় নিশ্চিত। কেননা তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
বিপিএল আয়োজনে এবার পাকিস্তানি ক্রিকেটারারও বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানান ইসমাঈল হায়দার মল্লিক। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় আসর থেকে বাংলাদেশে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা খেলতে আসতে পারেননি। তাই সেবার ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তবে এবার পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আসতে পারবেন। আমি মনে করি এতে আমাদের জন্য আরও সুবিধা হবে। পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে বিপিএল’র ব্র্যান্ড ভ্যালুও বাড়বে।’ তৃতীয় আসরের আগে ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘এরই মধ্যে বিদেশী ক্রিকেটারদের আমরা সকল বকেয়া পরিশোধ করেছি। এরপরও যদি কেউ বৈধ দাবি করে সেক্ষেত্রে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া স্থানীয় খেলোয়াড়দের বকেয়া পরিশোধ করার জন্য বোর্ড পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিপিএল তৃতীয় আসর ডিসেম্বরে অর্থের ছড়াছড়ি থাকছে না আর

আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০১৫

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি-২০ (বিপিএল) ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে দেনা-পাওনার সমস্যা এখনও মেটেনি। বিসিবির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান গেমন অন স্পোর্টসের সঙ্গে বিসিবির দেনা-পাওনার ঝামেলাও ঝুলছে। এমনকি ক্রিকেটারদের পাওনাও পরিশোধ করা হয়নি। যদিও এরই মধ্যে শেষ দুই আসরের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের টারমিনেট করার নোটিশও দিয়েছে। এককথায় বিপিএল নিয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। তবুও গতকাল নতুনভাবে বিপিএল আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এত বিতর্কের পরও বিপিএল আয়োজন করার মূল কারণ ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপের আসর ও এশিয়া কাপ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহা ও সদস্য সচিব ইসলাইল হায়দার মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ও বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। এখন পর্যন্ত বিসিবি পুরানো সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওনা রয়েছে। তাহলে কি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে বিসিবি আয়োজন করবে তৃতীয় বিপিএলের আসর? গেম অন স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তিরই বা কি হবে? এ বিষয়ে ইসমাঈল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘আগের আসরে অংশগ্রহণকারী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবগুলো যদি তাদের বকেয়া পরিশোধ না করে তবে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির সন্ধান করা হবে।’ বিপিএল-এ পাওনা নিয়ে বিতর্ক রোধ করতেই এবার টাকার অংকও কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানানো হয় গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে গেম অনের সঙ্গে বিসিবির ৬ বছরের জন্য ৪০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। এর মধ্যে অল্প কিছু টাকা এর আগে গেম অনকে পরিশোধ করেছে। ১ বছরে বিসিবির তেমন লাভ না হলেও ক্ষতি হয়নি। মূল ভারতের আইপিএল-এ কোটি কোটি টাকার খেলা হলেও মাত্র ১৬ কোটি মানুষের দেশে ভারতের মতো বাজার নেই। তাই প্রথম দুটি আসরে যে পরিমাণ টাকার ছড়াছড়ি ও কড়াকড়ি ছিল এবার তা থাকছে না। বিসিএল হবে এবার অনেক কম বাজেটে। যেন ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দলটি পরিচালনার পাশাপাশি লাভ করতে পারেন। এ বিষয়ে আফজালুর রহমান সিনহা বলেন, ‘এবারের আসরে আর্থিক কাঠামোর বড় পরিবর্তন করা হবে, যাতে করে প্রতি বছর আয়োজন করা যায়। যুক্তিসঙ্গত এবং বাস্তবসম্মত আর্থিক কাঠামো যেন হয় এই ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি।’ একই বিষয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমাদের দেশেতো আইপিএল’র মতো আয়োজন সম্ভব নয়। এখানে আমাদের তাই টাকার বিষয়টি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। কারণ কোটি কোটি টাকায় ক্রিকেটার কেনার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কি ভাবে লাভ বের করবে সেটিও আমাদের চিন্তার বিষয়। সিপিএল ও বিগব্যাশের দিকে তাকান। দেখেন তারা কিন্তু ভারতের মতো এত টাকা ব্যয় করছে না। কিন্তু আয়োজনটা ঠিক করে ফেলছে ভালভাবে।’ গেমন অন স্পোর্টস নিয়ে বিসিবি’র সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গেমন অন স্পোর্টসের সঙ্গে নতুনভাবে আলোচনা করা হবে।
তবে পুরানো ফ্র্যাঞ্চাইজিরা না থাকলে কি করা হবে জানতে চাইলে ইসমাঈল হায়দার বলেন, ‘আমরা তাদের অপেক্ষাতে নেই। এরই  মধ্যে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। অনেক আগ্রহী ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে কথা হচ্ছে। আগের ২ আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাদের চুক্তিমতো কাজ করেনি। তাদেরকে বার বার চিঠি দেয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধের জন্য। এছাড়া  যেসব ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য বলা হলেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। পরে তাদেরকে বাতিল করা হবে বলে চিঠি দেয়া হয়েছে তার উত্তরও আমরা এখনও পাইনি।’ ফিক্সিং বিতর্কে জড়িত ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস প্রসঙ্গে নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস থাকছে না; এটা প্রায় নিশ্চিত। কেননা তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
বিপিএল আয়োজনে এবার পাকিস্তানি ক্রিকেটারারও বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানান ইসমাঈল হায়দার মল্লিক। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় আসর থেকে বাংলাদেশে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা খেলতে আসতে পারেননি। তাই সেবার ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তবে এবার পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আসতে পারবেন। আমি মনে করি এতে আমাদের জন্য আরও সুবিধা হবে। পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে বিপিএল’র ব্র্যান্ড ভ্যালুও বাড়বে।’ তৃতীয় আসরের আগে ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘এরই মধ্যে বিদেশী ক্রিকেটারদের আমরা সকল বকেয়া পরিশোধ করেছি। এরপরও যদি কেউ বৈধ দাবি করে সেক্ষেত্রে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া স্থানীয় খেলোয়াড়দের বকেয়া পরিশোধ করার জন্য বোর্ড পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’