পাহাড়ের পাদদেশে এবার বিলেতি ধনে পাতার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ পাতা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে অনেক কৃষক। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে, ঢালে ও পাদদেশে এই পাতা চাষ করছে তারা। এতে করে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা অর্জন করেছেন অনেক পরিবার।
এই ধনে পাতা চ্যাপ্টা ও এর গন্ধ কড়া। ফলনও বেশি। পাতার দু’পাশে খাজকাটা। সবুজ ও ভারি এ পাতা লম্বায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার এবং চ্যাপ্টায় দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার। একবার বীজ বুনলে কয়েক বছর পর্যন্ত গাছ বেঁচে থাকে। ফলে বার বার পাতা সংগ্রহ করা যায়। জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় প্রত্যন্ত দূর্গম উপজেলা সাপছড়ি, কাপ্তাই, তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া ও শীলছড়ি মারমা পাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় বিলেতি ধনের ব্যাপক চাষ হয়েছে। স্থানীয় বাজারে এখন এই বিলেতি ধনের চাহিদা বেড়েছে। অধিক ফলনের কারণে ক্রেতাদের জন্য এই ধনিয়ার দাম যেমন সহনশীল, তেমনি চাষীরাও ভালো দাম পাচ্ছে। উচ্চ বাজারমূল্য ও অধিক আয়ের কারনে রাঙামাটিতে সময়ের পরির্বতনে অন্যান্য সম্প্রদায়ের কৃষকের মধ্যেও আগ্রহ বেড়েছে।
ধনে পাতা চাষী কণিকা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, অল্প পুঁজি, বেশী লাভ। বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি এই পাতা চাষ করা যায়। সহজ পদ্ধতিতে এটি সম্ভব। তাই কৃষকদের মধ্যে চাষের চাহিদা বাড়ছে। এবার ধনে পাতার ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী, বাজার মূল্য অনেকটাই কম। এ ছাড়া ছত্রাকের আক্রমনে পাতা নষ্ট হয়ে গেছে। রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-সহকারী কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান, অতিরিক্ত তাপদাহের কারনে ধনে পাতায় যে রোগ দেখা দিয়েছে তা ছত্রাকজনিত। এ সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে চাষীদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এই পাতা চাষে এসেছে সফলতা। এ ছাড়া ফলনও ভালো হয়েছে। পাহাড়ের মাটি বিলেতি ধনে চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এদিকে অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রমনী কান্তি চাকমা জানান, বিলেতি ধনে পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। পাহাড়ের কুষকরা যাতে বিলেতি ধনে চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে, সেজন্য রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া এতে তেমন কোন রোগবালাই দেখা যায় না।