ঢাকা ০৯:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পায়ে লিখে পড়াশোনা মিরাজুলের, স্বপ্ন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০২:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০১৬
  • ২৬৪ বার

মিরাজুলের হাত নেই জন্ম থেকেই। সে লেখে পা দিয়ে। পাবনার আটঘরিয়ার ছেলে মিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় উপজেলার দেবোত্তর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে।

আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে মিরাজুল ইসলাম। তারা দুই ভাই এক বোন। বড় ভাই সূর্য দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে এখন বাবার সঙ্গে যাত্রাপুর বাজারে একটি ছোট ব্যবসা করেন, ছোট বোন মুক্তা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

এই

কিশোরের মা সূর্যা খাতুন জানান, হাত না থাকলেও সব কাজ নিজেই করতে পারে সে।

তিনি বলেন, ‘২০০৩ সালের ২৪ জুলাই মিরাজ হাত না নিয়াই দুনিয়ায় আসে। আমরা ইজনেই লেখাপড়া জানি না। অভাব অনটনের মধ্যে তারে স্কুলে পাঠাচ্ছি।’

যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম হোসেন জানান, ২০০৮ সালে মিরাজুল এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তখন থেকেই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তার দেখে শিক্ষকরা মুগ্ধ হন। তিনি বলেন, ‘সে পড়ায় ভালো, স্মরণশক্তি প্রখর। এখন সে জেএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে।’

চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, মিরাজুল লেখাপড়ায় অত্যন্ত ভালো। ওর লেখাপড়ার প্রতি আমরা বিশেষ নজর রাখছি।

মিরাজুল ইসলাম জানায়, বড় হয়ে সে ডাক্তার হতে চায়। মানুষকে সেবা দিতে চায়। এলাকার দ্ররিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসায় সহায়তা করতে চায়।

মিরাজুলের বাবা তোরাব আলী বলেন, ‘আমার একটাই আশা মিরাজুল লেখাপড়া করে বড় হলে সরকার যেন একটা চাকরির ব্যবস্থা করে।’

আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমুন রাজীব বলেন, মিরাজুলের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত হয়েছিল। তাকে সরকারি অনুদান দেওয়া হবে।-ঢাকা টাইমস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পায়ে লিখে পড়াশোনা মিরাজুলের, স্বপ্ন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করা

আপডেট টাইম : ০৬:০২:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০১৬

মিরাজুলের হাত নেই জন্ম থেকেই। সে লেখে পা দিয়ে। পাবনার আটঘরিয়ার ছেলে মিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় উপজেলার দেবোত্তর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে।

আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে মিরাজুল ইসলাম। তারা দুই ভাই এক বোন। বড় ভাই সূর্য দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে এখন বাবার সঙ্গে যাত্রাপুর বাজারে একটি ছোট ব্যবসা করেন, ছোট বোন মুক্তা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

এই

কিশোরের মা সূর্যা খাতুন জানান, হাত না থাকলেও সব কাজ নিজেই করতে পারে সে।

তিনি বলেন, ‘২০০৩ সালের ২৪ জুলাই মিরাজ হাত না নিয়াই দুনিয়ায় আসে। আমরা ইজনেই লেখাপড়া জানি না। অভাব অনটনের মধ্যে তারে স্কুলে পাঠাচ্ছি।’

যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম হোসেন জানান, ২০০৮ সালে মিরাজুল এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তখন থেকেই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তার দেখে শিক্ষকরা মুগ্ধ হন। তিনি বলেন, ‘সে পড়ায় ভালো, স্মরণশক্তি প্রখর। এখন সে জেএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে।’

চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, মিরাজুল লেখাপড়ায় অত্যন্ত ভালো। ওর লেখাপড়ার প্রতি আমরা বিশেষ নজর রাখছি।

মিরাজুল ইসলাম জানায়, বড় হয়ে সে ডাক্তার হতে চায়। মানুষকে সেবা দিতে চায়। এলাকার দ্ররিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসায় সহায়তা করতে চায়।

মিরাজুলের বাবা তোরাব আলী বলেন, ‘আমার একটাই আশা মিরাজুল লেখাপড়া করে বড় হলে সরকার যেন একটা চাকরির ব্যবস্থা করে।’

আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীমুন রাজীব বলেন, মিরাজুলের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত হয়েছিল। তাকে সরকারি অনুদান দেওয়া হবে।-ঢাকা টাইমস