ঢাকা ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রী মম’র পদত্যাগ, নেপথ্যে কী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১১:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • ১৯ বার

২০২৪-২৫ অর্থবছরের চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। তিনি বলেছেন, আমি গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। সেটা পারিনি বলেই নিজের কাছে ফিরে আসা। তবে জুলাই বিপ্লবে ফ্রন্টলাইনার এই অভিনেত্রীর ফিরে আসা নিয়ে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) অভিনেত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে গত ২৫ মে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২টি সিনেমাকে মোট ১৩ কোটি টাকা অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। গত ১ জুলাই প্রজ্ঞাপনও প্রকাশ হয়। এ নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যেই অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রী মমর পদত্যাগের বিষয়টি সামনে আসে।

এ তারকা সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত ২৫ মে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

অভিনেত্রীর দাবি, ‘ক্ষমতার কাছে যেহেতু ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া নেই, এ জন্য শুধু কাজই করতে চেয়েছিলেন তিনি; কিন্তু সেটি হয়নি। এ জন্য তার উপলব্ধি, তার ছেড়ে দেয়া পদে অন্য কেউ এসে কাজ করলে এতে কমিটির জন্য ভালো হবে।’

তিনি জানান, ‘অনুদানের যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে ১ জুলাই কিংবা যে সিনেমাগুলো অনুদান পাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের; সেখানে কমিটির সদস্য হিসেবে তার কোনও অংশীদারিত্ব নেই। অর্থাৎ এই নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো বাছাই ও চূড়ান্তকরণে তার কোনও দায় নেই।’

মম বলেন, ‘কাজ করার সুযোগ ছিল না, নিয়মের বেড়াজাল। এই অল্প সময়ের মধ্যে সংস্কার করে এত পুরাতন নিয়মকানুন সামলে পসিবল হয়ে উঠছিল না। ফলে আগের মতো করেই জিনিসটা আগাচ্ছিল। যেখানে কাজ করার আগ্রহটা হারিয়ে ফেলি। এখানে আসলে অভিযোগের কিছু নেই। এটা আমাদের সিস্টেমের জটিলতা। সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তো আছেই।’

অভিনেত্রী আরও বললেন, ‘আমি গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। কিন্তু ক্ষমতার কাছে গেলে সবার কেমন জানি চেহারা পাল্টে যায়। এটা দুঃখজনক। আমি আমার পুরনো চেহারাটা পাল্টাতে চাইনি। তাই ফিরে আসা, আর কিছু নয়।’

চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কারের আশায় নিজের শুটিং ব্যস্ততা ফেলে রাজপথ থেকে চলচ্চিত্র অনুদান কমিটিতে যুক্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী মম। জুলাই বিপ্লবে শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম ফ্রন্ট লাইনার ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করলেন।

কমিটি থেকে আরও পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিস বিভাগের শিক্ষক ও অভিনেতা-নির্দেশক তিতাস জিয়া এবং নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ। তারাও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর সরকারি অনুদানের জন্য চলচ্চিত্র বাছাই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’ পুনর্গঠন করা হয়। ওই সময়ের মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে সভাপতি করে মোট ১০ জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও অভিনেতা-নির্দেশক ড. আবুল বাশার মো. জিয়াউল হক (তিতাস জিয়া), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক খান শারফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম (আকরাম খান), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার নার্গিস আখতার, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল, নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রী মম’র পদত্যাগ, নেপথ্যে কী

আপডেট টাইম : ১২:১১:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

২০২৪-২৫ অর্থবছরের চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। তিনি বলেছেন, আমি গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। সেটা পারিনি বলেই নিজের কাছে ফিরে আসা। তবে জুলাই বিপ্লবে ফ্রন্টলাইনার এই অভিনেত্রীর ফিরে আসা নিয়ে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) অভিনেত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে গত ২৫ মে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২টি সিনেমাকে মোট ১৩ কোটি টাকা অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। গত ১ জুলাই প্রজ্ঞাপনও প্রকাশ হয়। এ নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যেই অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রী মমর পদত্যাগের বিষয়টি সামনে আসে।

এ তারকা সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত ২৫ মে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

অভিনেত্রীর দাবি, ‘ক্ষমতার কাছে যেহেতু ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া নেই, এ জন্য শুধু কাজই করতে চেয়েছিলেন তিনি; কিন্তু সেটি হয়নি। এ জন্য তার উপলব্ধি, তার ছেড়ে দেয়া পদে অন্য কেউ এসে কাজ করলে এতে কমিটির জন্য ভালো হবে।’

তিনি জানান, ‘অনুদানের যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে ১ জুলাই কিংবা যে সিনেমাগুলো অনুদান পাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের; সেখানে কমিটির সদস্য হিসেবে তার কোনও অংশীদারিত্ব নেই। অর্থাৎ এই নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো বাছাই ও চূড়ান্তকরণে তার কোনও দায় নেই।’

মম বলেন, ‘কাজ করার সুযোগ ছিল না, নিয়মের বেড়াজাল। এই অল্প সময়ের মধ্যে সংস্কার করে এত পুরাতন নিয়মকানুন সামলে পসিবল হয়ে উঠছিল না। ফলে আগের মতো করেই জিনিসটা আগাচ্ছিল। যেখানে কাজ করার আগ্রহটা হারিয়ে ফেলি। এখানে আসলে অভিযোগের কিছু নেই। এটা আমাদের সিস্টেমের জটিলতা। সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তো আছেই।’

অভিনেত্রী আরও বললেন, ‘আমি গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। কিন্তু ক্ষমতার কাছে গেলে সবার কেমন জানি চেহারা পাল্টে যায়। এটা দুঃখজনক। আমি আমার পুরনো চেহারাটা পাল্টাতে চাইনি। তাই ফিরে আসা, আর কিছু নয়।’

চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কারের আশায় নিজের শুটিং ব্যস্ততা ফেলে রাজপথ থেকে চলচ্চিত্র অনুদান কমিটিতে যুক্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী মম। জুলাই বিপ্লবে শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম ফ্রন্ট লাইনার ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করলেন।

কমিটি থেকে আরও পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিস বিভাগের শিক্ষক ও অভিনেতা-নির্দেশক তিতাস জিয়া এবং নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ। তারাও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর সরকারি অনুদানের জন্য চলচ্চিত্র বাছাই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি’ পুনর্গঠন করা হয়। ওই সময়ের মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে সভাপতি করে মোট ১০ জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও অভিনেতা-নির্দেশক ড. আবুল বাশার মো. জিয়াউল হক (তিতাস জিয়া), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক খান শারফুদ্দীন মোহাম্মদ আকরাম (আকরাম খান), চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার নার্গিস আখতার, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল, নির্মাতা ও সম্পাদক সামির আহমেদ, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম।